
অরণ্যা সরকারের গুচ্ছ কবিতা
কোনও এক যত্নের ভেতরে
এক
মেধাচাবি ফিরিয়ে নাও।
আর ফিরছি না।
ক্যাবলা যত্নের ভেতর হাঁটাচলা
সে খুব শাসনে রাখছে আমার দ্বন্দ্বকাল।
দুই
তালাটি সরে পড়েছে।
বুঝেছে যা থাকার তা থাকে।
ঘর কি বদলে গেল?
ভাত বসিয়েছি
বোসো, দ্যাখো ভাতের গন্ধে
সব সন্দেহ কেমন ঘর হয়ে যায়।
তিন
কিছুটা অঙ্ক সবাই বোঝে।
বুঝিনি কি রোটি, কাপড়া, মকান?
শিরস্ত্রাণ জানে মগজাস্ত্রের কৃপা
যে কোনও অর্জন আসলে মেধাসম্ভুত উর্বরতা ।
চার
গতিবিদ্যা দিলো তো অনেক বদল
এবার ফিরে যাও তামাটে পাঠ্যক্রম।
ফিরে যাও গরম রেওয়াজ।
স্নানঘরে গান গাইছে
স্নানের মুর্শিদ…
পাঁচ
সভ্যতায় আটকে গেছে অষ্টাদশী তারা।
চারপাশে লুণ্ঠন, চারপাশে কুশল কামনা।
কে যে নিয়ে যাবে তাকে?
ভাবি পথ দেবো, খুলে দেবো জট
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে
ফুরোচ্ছে না যুদ্ধের সঙ্গম
শব্দ সরিয়ে নাও,
থামাও ওর আগ্রাসী শীৎকার।
ছয়
মূকাভিনয়ের কথাগুলো জমাতে জমাতে
বোবা হয়ে গেছি।
কোটর ভর্তি নীরব ভূখণ্ড
রোজ কত জুড়ে যাওয়া দ্যাখে বালি
শব্দ করে না
সুখী হতে শিখে গেছে নিরিবিলি অস্ত্রগার।
সাত
যাও, যাও সংজ্ঞা,
তত্ত্ব বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে পা ফেলা দিন
নিজের ছায়ার ভেতর গুটিসুটি।
ছাড়ো যোগফল, ছাড়ো, নিয়মগবেষক
জলের উপর ঝুঁকে পড়া গাছ ডাকছে
এবার তুমিও ওহে অপাঠ্য প্রেমিক
ডাকনামে ডাকো—-
আট
বিদূষকের কান্নায় পুঁতে দিয়েছি বোবা হাসনুহানা
আহা সুগন্ধ পাক সে, ভাটিয়ালি হৃদয় পাক
সারা দাও সাজানো বাগান
রাজার হাসির পাশে এবার ফুটুক মুখচোরা মেহনত ।
যেতে যেতে ঐ আয়না রেখে যাচ্ছে গানের দরবেশ
এবার বিদূষক, ভান ফেরাবে সব হাস্যরস…
নয়
দূরসম্পর্কের স্বপ্নগুলো ভ্রমের সুগন্ধ।
বুনোফুল, ঘোর দেয়।
কফিকাপে দুয়েক দানা চিনি ফেলে
চলে যায় অন্য কোনও কুটুম্বিতায়।
চাকায় প্রজ্ঞা রাখে কালের নুনচিনি ।
ধুয়ে যায়, গলে যায় গঠন শৈলী।
কে বানায় এমন রম্য
সে কি ‘সঘন গহন’ চান্দ্রদোষ?
কে তবে অমন টুকরো বিলাসে থাকে?
লুঠ কর, লুঠ কর হরিধ্বনি এইসব চিরহরিৎ
গরম ভাতে মেখে খাই বীজের আগামী—–
দশ
ঢেকুর।
নিজের কঙ্কাল চিবনো অবসর
অর্জিত দেয়াল জুড়ে আঁকিবুঁকি, শিল্পশ্রম
তাকে তাকে সাজানো নিধুবন
আর কিছু নিঃস্বগান
আমি জলে সজল সহায়িকা ।
পাঠ করি পাঠ করি, ছিটকে দেয় আনন্দদহন
প্রতিটি ব্যথার যেমন নিজস্ব চাঁদ
আমারও তো।
টানে, ভেসে যায় হিসেবি চামচ
জৌলুস খুলে রাখি।
আয়নাওলা অপেক্ষায়
যাই—