অনুপ সেনগুপ্ত-র কবিতাগুচ্ছ
সরল অঙ্ক
বিভিন্ন মানের আমিকে
যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের অঙ্কে সাজিয়ে
কেউ সরল করতে যায়
ফলাফল পায় শূন্য
শূন্যর শূন্যতার বিপর্যয় ঘটে
তাই শূন্য তাকে গিলে নিয়ে
কেউনা করতে চায়
কিন্তু সে জগৎ কথাটা উচ্চারণ করা মাত্র
আকাশ-সমুদ্র, গ্রহ-নক্ষত্র, গ্রাম-শহর-মানুষ সমেত
সৃষ্টি হয় জগৎ
শূন্যর অন্তর্গত এই জগতের
একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে
সে একা-একা একইভাবে
সরল অঙ্ক কষে
ক্রমাগত শূন্য
শূন্যর অন্তর্গত জগৎ
জগতের অন্তর্গত ছোট্ট ফ্ল্যাট
সৃষ্টি করে চলে
পূরবী
ধুলোয় পড়ে এক না-গাওয়া গান
কেউ কি গাইতে না পেরে ফেলে দিয়েছে?
হয়তো তার ঠোঁট অন্য কারও ঠোঁটে
গোধূলি আঁকতে গিয়ে এঁকেছিল সন্ধে
তাই হয়তো সেই না-গোধূলি
মিশে আছে এই না-গাওয়া গানে
ঘর
একটি নামের শিখায় পুড়ছে
যে-নামহীন-নিঃশব্দ কেউ
আমি তারই সসীম-কিন্তু-অশেষ প্রেমে
আটকে পড়ি
যেমন আকাশের গোপন খাঁজে
আটকে যায় মেঘের পা
এখন নিজেরই ছায়া দিয়ে
তৈরি করি ঘর
সেখানে সংসার পাতে
আমার শরীর ও তার অশরীর
নিঃসময়
একাকিত্বকে চারভাগ করে কেউ
ঘরের চারকোণে রাখে
এবার একশিশি বিষণ্ণতা
ওষুধের মতো খেতে পারলেই
তার ক্ষতরা আর চিৎকার করে না
ফিসফিস করে কথা বলে
বাক্সের মধ্যে সে গুছিয়ে রেখেছিল
যে-সুসময়
তার ভাঁজ খুলে খুঁজে পায়
কবেকার নিঃসময়
আর নিজের ঘননীল গানের
ঠিক মাঝখানে তলিয়ে যায়