উঁকিঝুঁকি, আয়না ও দু’চারটে দিন <br /> কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন

উঁকিঝুঁকি, আয়না ও দু’চারটে দিন
কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন

না! লোকটার ধৈর্য আছে। আট মিনিটের পথ আটান্ন মিনিট ধরে পেরিয়ে আসার পরেও দেখি টোটোদাদা দাঁড়িয়ে আছে। স্কুলের গেটের থেকে খানিকটা দূরে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বিড়ি টানছে। আমার ব্যাগ দুটো মাটিতে নামানো।
— আপনের দেরি হল যে?
— ওই মিষ্টির দোকানগুলোর কাছে একটা ছেলে বাইক নিয়ে পড়ল। একটা হাঁস চাপা দিয়েছে।
— আজকালকার ছেলেগুলো এমনধারাই হয়েচে বটে। খুব হুড়োতাড়া, কিন্তু কাজ তো কিচুই করচে না।
— দাদা, আপনি কি কাছকাছিই থাকেন?
— হ্যাঁ, ওই হাটতলার দিকটায় একটা নতুন কলেজ হয়েচে না, ওই ওদিকপানেই থাকি।
— আপনি কি বিকেলের দিকে আসতে পারবেন? তাহলে এই আশেপাশের জায়গা একটু ঘুরে দেখতাম।
— হ্যাঁ, বলেন কখন আসব?
— চারটে নাগাদ।
ভেবে দেখলাম এমন ধৈর্যশীল মানুষকে লোকাল গাইড হিসেবে পেলে মন্দ হয় না। অতএব হাতছাড়া করে লাভ নেই।
হাতে হাতে ভাড়াপত্তর মিটিয়ে দিতেই সে তখনকার মতো চলে গেল। আমি স্কুলের গেটের দিকে এগিয়ে যেতে দারোয়ান নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন।
কোনও হোটেলে নয়, আমি এখানেই থাকব। এটি একটি আবাসিক স্কুল, মেয়েদের। কম করে শ’পাঁচেক মেয়ে এখানে থাকে। লেখাপড়া শেখে। বিদ্যাসাগর ফাউন্ডেশন এই স্কুল চালায়—পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক। প্রতিষ্ঠাতাও বটে। এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগেই স্কুলটি তৈরি হয়েছিল প্রত্যন্ত গ্রামের এইসব মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার উদ্যেশ্যে।

উদ্দেশ্য মহৎ তো বটেই এমনকি এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছুজনকে আমি জানি যাঁরা মানুষ হিসেবেও বড়ো। আদর্শবাদী। তাঁদের বামপন্থী ভাবধারা তাদের যতখানি না রাজনীতির মাঠে ময়দানে মঞ্চে নিয়ে গেছে তার থেকে অনেক বেশি তাদেরকে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে মানুষের মাঝে, মানুষের কাজে। এঁদের দেখে বামপন্থার সমাজকেন্দ্রিক ইতিবাচকতার রূপটা বোঝা যায়। এঁরা প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন সাম্যবাদই সমাজবদলের, সমাজগঠনের একমাত্র পন্থা হতে পারে। আর সমাজ ও সাম্যবাদ দুই-ই বুঝতে হলে শিক্ষার প্রয়োজন। বাংলার মেয়েরা শিক্ষিত হোক। চে গেভারা সেই যে বলেছিলেন, ‘The first duty of a revolutionary is to be educated.” সমাজ বদলের স্বপ্নসন্ধানী রূপকার হওয়া হয়তো বড় সহজ কাজ নয়, সে হতে না পারলেও শুধু ‘মানুষ’ হতে গেলেও তো শিক্ষার প্রয়োজন— তা সে প্রথাগত উচ্চশিক্ষা না হোক, সুশিক্ষা তো লাগেই।
লোহার গেট পেরিয়ে স্কুলের অফিসঘরের দিকে যাওয়ার পথে তনুজাদির সঙ্গে দেখা। তনুজাদিকে আমি অনেকবার কলকাতায় দেখেছি।
— ও তুমি এসে গেছ! অর্জুনদা জানিয়েছিল তুমি আসবে। এবারের দোল তাহলে টামনাতেই কাটাচ্ছ?
— হ্যাঁ দিদি, কেমন আছেন আপনি?
— খুব ভালো, বলে হাসলেন। তারপর আবার বললেন, যাও অফিসে, প্রদীপদা আছেন।
তনুজাদি এখানকার মেয়েদের হস্টেলের সুপারভাইজার। কলকাতার মানুষ। উত্তর কলকাতার একটি স্কুলে পড়াতেন। ইতিহাস। মেয়াদ ফুরোনোর আগেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখানে চলে এসেছেন। এখন মেয়েদের প্রতিদিনের জগৎটাকে জড়িয়েই তাঁর নিজের জগৎ।
গাছে গাছে ছেয়ে আছে পুরো চৌহদ্দিটা। গোটা কম্পাউন্ড আয়তনে বিশাল। শুরুতে দাঁড়ালে শেষ দেখা যায় না। গাছে গাছে ফুটেছে চৈত্রকালের ফুল। ফুলে ফুলে কত বাহারি রং! আরও অনেককিছুর মতো দোল উৎসবও প্রকৃতিই মানুষকে শিখিয়েছে— শিখিয়েছে কেমন করে বর্ণময় হতে হয়! পাতা ঝরানোর হাওয়া এসে কেবল তো গাছতলাময় হলুদপাতা ঝরিয়ে চলে যায় না, বরং নতুন পাতার সঙ্গে নতুনতর ফুলের খবর-খোঁজ রেখে যায। আর তারপর থেকেই তো ফুলে রঙে প্রকৃতির বসন্তোৎসব। এ থেকে মানুষ যদি না শেখে তাহলে আর কোথায় শিখবে! প্রকৃতিই পৃথিবীর প্রাচীনতম বিদ্যালয়।
এখানে প্রতিটি গাছের গায়েই যত্ন ও পরিচর্যার সুস্পষ্ট ছাপ। গুল্মজাতীয় গাছগুলি আদরআত্তিতে বেশ ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া হয়েছে। একটি সাদা বোগেনভিলিয়ার ঝাড় দেওয়াল বেয়ে উঠে পুব পাঁচিলের বেশ খানিকটা দখল করে সানন্দে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে চলেছে। থোকা থোকা সাদা ফুলে ভরে গেছে গাছটি, পাতা দেখা যায় না। এত রঙের মাঝে এই সাদা বোগেনভিলিয়ার ঝাড় যেন খানিকটা স্বতন্ত্র, আলাদা। নিজের মেজাজে ও আভিজাত্যে মাথা নেড়ে নেড়ে বুঝিয়ে দিতে চায় সে এই পরিপাটি বাগানের অধিশ্বরী। বোগেনভিলিয়ার এমন বাহারি, দাপুটে রূপ আমি আরও দু’জায়গায় দেখেছি। গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি বিল্ডিংয়ে ঢোকার মুখে চাতালের সবটুকু ছাদ যখন গোলাপি গোলাপি ফুলে ভরে যায়, তখন মনে হয় আরে! উত্তর থেকে দক্ষিণে পুরো মহানগর ঘুরে এই তো এখানে আমার কলকাতার ঝুলন্ত উদ্যান! নাই বা গেলাম ব্যাবিলনে, ক্ষতি কী! তবে যাওয়া তো যেতে পারে চন্দননগরে। চলুন। আরও অনেকের মতো আমরাও যদি গঙ্গার ধারে স্ট্রান্ডে বিশেষ করে রবীন্দ্রভবনের একেবারে উল্টোদিকে দাঁড়াই, সেখানে আমাদের এক জমকালো ঝাঁকালো বোগেনভিলিয়ার সঙ্গে আলাপ হবে। সে খাস সুন্দরী বটে! এই সুন্দরীর অবশ্য এক স্বাস্থ্যবান সম্রাটও আছে। হৃষ্টপুষ্ট একটি বট গাছকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে ধরে আকাশের দিকে মুখ তুলেছে সে। যত সে উপরে ওঠে, ততই তার উল্লাস। যত তার উল্লাস, তত তার ফুল। নদীর ধারে বট আর বাগানবাহারের রসায়নে শর্তহীন ভালোবাসাবাসি বুঝি। বট সম্রাট তার সুন্দরীকে আগলে আগলে রেখেছে, সুন্দরীর বেশ খানিকটা দাপট সত্ত্বেও। এ দুই গাছের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিতর অনেকখানি আদর আছে। নাহলে এত ফুল কি অনাদরে ফুটতে পারে? এদের দেখেই আমি অনেকবার অনেকরকমভাবে ভালোবাসার সংজ্ঞা খুঁজতে চেয়েছি।
অফিসবিল্ডিংয়ের বারান্দায় সকালবেলার রোদ চড়ুইপাখির মতো লাফিয়ে লাফিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে, এদিকে, ওদিকে। বারান্দার নিচেই দেখি দু’জন লোক বসে কোদাল, মাটি, খুরপি, সারের বস্তা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। বুঝতে এতটুকু অসুবিধা হয় না—এরা সকালবেলার মালী। কাজ শুরু করেছে।
হঠাৎ একটা পাখি রাধাচূড়া গাছের ডাল থেকে উড়ে গেল — বসন্তবৌরি!
এখান থেকেই গাছের ফাঁক দিয়ে চোখে পড়ে ওই খানিকটা দূরে কে একজন দাঁড়িয়ে আছেন—ঈশ্বর নাকি! হ্যাঁ, ঈশ্বরই তো! দোহারা চেহারা, ঋজু, দৃঢ়, বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের ঈশ্বর তাকিয়ে আছেন মানুষের দিকে। তাঁর গলায় দুলছে টাটকা ফুলের মালা। কে তাঁকে মালা পরালো? এখানকার মেয়েরা? পরাবেই তো! পরানোরই তো কথা! তিনি আমার ঈশ্বর, আমার মা, ঠাকুমার ঈশ্বর, এই স্কুলের পাঁচশো মেয়ের ঈশ্বর, এই বাংলার সমস্ত মেয়ের ঈশ্বর। ঈশ্বর তিনি— সেই কবে মেয়েদের ভিতরে অক্ষরমন্ত্র ভরে দিয়ে চিন্তা-চেতনায় যে আলো জ্বালিয়েছিলেন, সেই আলোর পুঁজি নিয়েই তো আমরা শতাব্দী ভাঙতে ভাঙতে, দশক ভাঙতে ভাঙতে মেয়ে থেকে মানুষ হতে চাইছি। বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি যেখানে রয়েছে, সেই বাঁধানো বেদির চারপাশে রেলিং দেওয়া। জায়গাটি গাছে গাছে ঘেরা। ঈশ্বরের মূর্তিটি ব্রোঞ্জের তৈরি। সকালের রোদ পড়ে তাতে সোনার রং ধরেছে। মূর্তি প্রণাম আমার আসে না, আমি বারবার শুধু প্রণাম জানাতে পেরেছি মানুষ ও মহত্বকে। এই যে ইতিহাস-মানব, দয়ার সাগর আমার ঈশ্বর হয়ে আমারই সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর প্রতি আমার অফুরান শ্রদ্ধা—আপনিই মাথা ঝুঁকে পড়ে। ভিতরে ভিতরে দারুণ ভালোলাগা কাজ করছে এটা ভেবে যে আজ আমার দিনের প্রথম প্রণাম বড় বেশি সার্থকতা পেল।
এটা কী গাছ? আগে তো দেখিনি কখনও? কী বাহারি ফুল ফুটেছে! গাছটাকে জড়িয়ে মড়িয়ে ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থাকে থাকে থোকে থোকে ফুল ফুটে রয়েছে সুতীব্র সোহাগের মতো। লাল ফুল। এ যেন গাছের সঙ্গে ফুলের আজ বসন্তের পিরীতি-পর্ব! না, এ কৃষ্ণচূড়া তো নয়, পলাশ নয়, রঙ্গন নয়, মোরগফুলও নয়। আমি চিনি, খুব ভালো চিনি এদের। এটা তবে কী গাছ?

কে বলে দেবে?
আচ্ছা, মালীই তো জানে তার গাছের খবর। আমায়, অতএব, দু’পা সামনে এগোতে হল।
— ওইটা কী গাছ বলুন তো!
— ওইটে? ওইটে তো অশোক, এক মালী উত্তর দিলেন।
— অ…শো…ক! ও অশোক! হ্যাঁ, রবি ঠাকুর সেই যে তাঁর গানে লিখেছেন
হাসি হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত আকাশে
রাঙা নেশা! তাইতো দেখছি আমি! বিস্ময়ে, ঘন চমকে ঘোর লেগে যায়। এই প্রভাত-আকাশের তলায় চারদিকে রাশি রাশি অশোকে পলাশে ছেয়ে আছে যে পৃথিবী, তার থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে লালিমা। নেশা লেগে যায়। নেশায় আমার বিন্দু বিন্দু রং লেগে যায়। অশোকের রং, পলাশের রং, সূর্যোদয়ের রং, সূর্যাস্তের রং, বিপ্লবের রং, ভালোবাসার রং, আজ বসন্তে আজ সকালে নেশার রং — লাল — তীব্র লাল। এটাই বোধহয় রাঙা নেশা। ভরা বসন্তে চারপাশে ভরপুর যুবতীর মতো প্রকৃতির মাতাল মাতাল রূপে গান বেজে ওঠে। আমাদের কবির গান। এখানে, এই পরিবেশে গানের সুরের ভিতরে গানের কথাগুলো বড় বেশি দ্রবীভূত হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি শব্দকে যেন মিলিয়ে নিতে পারছি। কলকাতা থেকে কয়েকশো কিলোমিটার পেরিয়ে এসে আমি এখন দাঁড়িয়ে রয়েছি রবীন্দ্রনাথের গানের এপারে।
এবার অফিসে যাওয়া দরকার। অতএব রবীন্দ্রনাথের গানের এপার থেকে আমাকে যেতে হবে বারান্দার ওপারে।
অফিসবিল্ডিংয়ের একতলার একেবারে শেষপ্রান্তে কোণের ঘরটিই সেক্রেটারির বর্তমান ঠিকানা। প্রদীপবাবু অর্থাৎ প্রদীপ মিত্র এ ঘরেই বসেন। তাঁর ঘর খোলা, কিন্তু এখান থেকে ভদ্রলোককে দেখা যাচ্ছে না। বরং তাঁর ঘরের সামনে একটি বিড়াল চার পা টান টান করে ছড়িয়ে শুয়ে আছে। আমি ঘরের কাছে যেতেই আমার পায়ের শব্দ পেয়ে মুখ তুলে আমাকে দেখল। দেখল এবং বিরক্ত হল। ব্যাজার মুখে উঠে একটু পাশে গিয়ে দাঁড়াল। বেড়ালের অমন ব্যাজার মুখ আমি এই প্রথম দেখলাম। ভাবটা তার এমনই যে এই সকালবেলার ঝিরঝিরে হাওয়ায় একটু আলসেমি করছিলুম, তুমি হে বাপু কোথাকার কে চলে এলে! ভালো লাগে না!
প্রদীপকাকা টেবিলের উপর ঝুঁকে পড়ে কিছু লিখছেন, চোখে চশমা। অর্জুনকাকার সূত্রেই ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ। কলকাতার অফিসে প্রথমবার দেখি। এই স্কুলে পড়ানোর জন্যে আমার ইন্টারভিউ দেওয়ার কথা তখন, কিন্তু দেওয়া হল না। কয়েক মাসের জন্যে কলকাতা ছেড়ে অন্য শহরে চলে যেতে হল। তারপরেও এই মানুষটিকে অনেকবার দেখেছি — বিভিন্ন আলোচনা সভায়, বিজ্ঞান মঞ্চের অনুষ্ঠানে। ভদ্রলোকের বয়স হয়েছে, পঁয়ষট্টির আশেপাশে হবে, কিন্তু দেখে বোঝা যায় না। ছিপছিপে লম্বা শরীর, কথা বলেন ধীরে ধীরে থেমে থেমে কিন্তু অযথা গাম্ভীর্য নেই বরং মুখে প্রসন্নতা লেগে আছে। ব্যক্তিত্বে একটা চমৎকারিত্ব আছে বলেই এই চেয়ারে তাঁকে মানিয়েছে ভালো। মানুষটি কাজপাগল।
— ভিতরে আসব?
— কে?
মিত্রমশাই এবার মুখ তুলে আমাকে দেখলেন।
আমি ভাবিনি উনি আমায় চিনতে পারবেন, কিন্তু পারলেন।
— ও তুমি! এসেছ! অর্জুন বলেছিল বটে! বোসো ওখানে। আসতে কোনও অসুবিধা হয়নি তো?
— একেবারেই না, ভালো এসেছি। আর আসার পর তো খুবই ভালো লাগছে।
— এসব জায়গা দু’চারদিনের জন্যেই ভালো লাগে বুঝলে! একটানা থাকতে কষ্ট। অনেককিছু নিয়ে যাদের বেঁচেবর্তে থাকার অভ্যেস, তাদের মনে হবে এ যেন এক নেই-জগৎ। এই ভীষণ গরমটাও পার করা তো সহজ কথা নয়। এখনই তো এগারোটার পর রোদ এমন ঝাঁঝালো হয় যে চোখে ধাঁধা লাগে।
আমি চুপ করে থাকি। এ কথার উত্তরে আর কী-ই বা বলতে পারি!
উনিই আবার বলতে শুরু করলেন,
— আজ তোমার কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আছে?
সত্যি বলতে আমি জানিই না, এখানে কী কী দেখতে যেতে পারি। কিন্তু মুখে বললাম, না, বিকেলের দিকে একবার এই আশেপাশেই যাব। এক টোটোওয়ালাকে বলে রেখেছি।
— বেশ। আমাদের এই স্কুলের উলটো দিকের বড় মাঠটা পেরোলেই একটা সোনাঝুড়ির বন আছে। সময় করতে পারলে যেও, তোমার মনে হয় ভালো লাগবে।
এ কথা বলেই তিনি নিজে উঠে গিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ‘বিশাখা বিশাখা, এদিকে শোনো একবার’ বলে ডাক দিলেন।
চব্বিশ পঁচিশ বয়সী একটি মেয়ে এসে দাঁড়াতেই বললেন, ‘এই দিদিকে নিয়ে বলাকায় যাও। উনি ওখানেই থাকবেন।’
তারপর আমার দিকে ফিরে বললেন, কাল সকালে ন’টায় বসন্তোৎসবের অনুষ্ঠান শুরু। সময়মতো চলে আসবে।
— আচ্ছা।

এরপর বিশাখার সঙ্গে এই বিল্ডিংয়েরই দোতলায় গেলাম।
বলাকা একটা বাহুল্যবর্জিত ঘর। একেবারে সাদামাটা। সেখানে থাকার মধ্যে দুটো তক্তপোষ, একটা ছোট টেবিল আর কোণে কোণে ঘনীভূত স্তব্ধতা।
এমনই একটা ঘরে আমি একটানা তের বছর থেকেছি।

অনেকদিন পরে আজ হস্টেলের কথা মনে পড়ল।

(ক্রমশ)

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes