সুবীর সরকার-এর কবিতাগুচ্ছ
অপেরা হাউজ
সাদা কালো ছাড়াও কত কত রং আছে।
কার্তিক মাসের পৃথিবীতে হিম পড়লে
অপেরা হাউজের সামনে পাখি ও পাখির
পালক
কেউ সরে গেলে।
কেউ নদী ভুলে যেতে বললে।
মনখারাপের দুপাশে দেখি সেই পুরনো
খরগোশ
লিরিক
কতদিন আয়নায় মুখ দেখি না।
কতদিন বুধবারের হাটে চিরুনি কিনি
না।
জলাশয়ে নেমে যেতে যেতে
ইদানিং জোড়া পুকুরের পাশে দেখি ভিনদেশী
পাখিদের তাঁবু।
লিরিক লিখতে গেলেই আমার লিরিল সাবানের
কথা মনে পড়ে
আর একটা আলো নিভে যাওয়া হাইরোড।
আর ঠোঁট থেকে ছিটকে আসা হাসি।
নদীর ওপর মেঘ।
মেঘের রং কালো।
কালো মেঘের নিচে অনিবার্য
হুদুম দ্যাও।
রূপকথা
চারপাশে ভাঙা চেয়ার।
মৃদুমন্দ বাতাস।
অথচ এখানে কিন্তু দোলনা থাকার কথা ছিল
নির্জন মানুষের চোখে যে শুন্যতা ছায়া ফেলে
সেই ছায়ার গল্পে নুতন রূপকথা,ব্যাঙের
ডাক
মাছ ও পাখিদের ছবিতে
গান ও গ্রামার খুব নিচু হয়ে
ঢোকে
ক্যানভাস
দূরের শহরের আলো থেকে সরে আসতে
থাকি
আমরা ভুলে থাকতে চাই হরিণের
জলপান।
ফরেস্টের ভেতর যে গোপন গর্ত
সেখানেই জল খেতে আসে জখম
বাঘ
ধানক্ষেত গমক্ষেত ভুট্টাক্ষেত থেকে
হাজার হাজার পতঙ্গ উড়ে আসে
তুমি মাটির দেওয়ালে ছবি আঁকতে
থাকো
জানো তো,কিছুই গোপন থাকে না আজকাল
বন্দুকে মরচে ধরে গেলে।
তিরধনুকে আস্থা না থাকলে।
চোখ ও চোখের জল গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠতে
থাকে
আখ্যান
এদিকে আমরা তাস খেলতে শুরু করি।
আমরা লটারির দোকানে গিয়ে
সিগারেট ধরাই।
কত কান্না কাঁদবে তুমি।
কত আগুন নিভিয়ে নিভিয়ে একটা নিভৃতি
জাগিয়ে রাখতে চাও তুমি!
আগুন তো আগুনের মত জ্বলবে।
ইতিহাস থেকে ছিঁড়ে আনা হবে ভূগোল।
এভাবেই গড়িয়ে যাবে জীবন
অসুখ আর অসুখ পরবর্তী ঘটনাগুলি আপাতত
বরং
নুতন আখ্যান হয়ে ফিরে আসুক।
আর বাদ্য বাজুক।
আর বাজনা বাজুক।
পালিয়ে যাওয়া গিনিপিগের পেছনে বরং ছুটতে থাকি
আমরা।