ধীমান ব্রহ্মচারীর কবিতা
নীরবতা দিয়ে শান দেওয়া ছুরি
১.
কঠিন প্রশ্ন – শুধু মৃত্যুর আগে আততায়ীকে করা হবে
ধর্ম – বর্ম – দেবতা আর পিচাশ উপেক্ষা করে
কোন এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা মাফিক
২.
ঘর অন্ধকার, আলো ছুয়ে যারা বুঝতে পেরেছিল
সম্ভাবনাময় ইতিহাস
আজ শিশু পাঠ্য হয়ে কলিজায় থেকে গেছে নিরন্তর
৩.
রাতের পর রাত রেল লাইনের স্লিপারে জমে ছিল
রক্তের ফোঁটা –
প্রখর তাপে শুকিয়ে গেছে মরা নদীর বালিয়াড়ির মতো –
৪.
অসম্ভব আত্মপ্রকাশ নিয়ে পুঞ্জিভূত হয়েছিল বারুদ
মাশরুম মেঘের মতো ছড়িয়ে গ্রাস করে নেবে কোনো এক
শহরের শৈশব থেকে যৌবন; ঠিক দুপুর বারোটায় সূর্যের
স্তুতি দিয়ে এক গলা জলে ডুবে; যে মন্ত্র উচ্চারণ করবে
পৈতেধারী বামুন..
৫.
স্থির চোখ
মৃত্যুর আগে বুঝে নিয়েছিল পাশা খেলার শেষ পরিণতি
৬.
স্তিমিত হাসি হেসে বললাম আমাকে একবার মারতে পারেন
আমি মন মৌনতা নিয়ে বুকে বারংবার আঘাত করেছি
ভয়ংকর বর্ষায়। আমার বুকের সমস্ত রক্ত ধুয়ে পা বেয়ে জমা
হয়েছিল গাছের শিকড়ে..
৭.
আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘ জীবন না মৃত্যু? ‘
বলেছিলাম, ঝলছে যাওয়া মাংসের আঁশটে গন্ধ গায়ে মেখে
ঈশান কোণে মৃতবৎ আমি স্তুতি করে যাব..
৯.
উত্তরের জানলায়; শীতের বয়ে আসা কেতকী ফুলের সুবাস
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিল কোনো এক গভীর রাতে;
মোহ কেটে যাওয়া নেশাতুর চোখ বিষণ্ন হয়েছিল পূবের
সূর্যোদয় দেখার মুহূর্ত;
১০.
অন্ধত্ব আমাকে একটা মুখোশের খেলা শিখিয়েছে
বধিরতা দিয়েছে আমাকে মৌনতার মন্ত্র;
স্থবিরতা পেরিয়ে প্রেমের স্পর্শ মুখ করেছিল ম্লান
ভাষা জুগিয়েছিল নিরীহ কণ্ঠে
আমি শুনেছিলাম শব্দরাগ; অতীতের নজরানা কপালে ঠেকিয়ে
আমি পুড়িয়ে দিয়েছিলাম সরকার প্রেরিত সার্টিফিকেট…
প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে আমার হাতের একটা জং ধরে যাওয়া ছুরি
আজ কেমন চকচকে হয়ে গেছে..