রিমঝিম আহমেদ-এর কবিতাগুচ্ছ
যেভাবে বেঁচেথাকা নিজের হয়ে ওঠে
সমস্ত তাচ্ছিল্যের যেখানে শুরু সেখানেই থেমে গেছে প্রেম
সেখানেই দুয়েকটা পাখি বিষ্ঠাসমেত ছড়িয়ে গেছে সময়
এখন দুর্ভাবনা নেই। আনন্দ নেই। সুসংবাদ নেই
অভাব খড়মপায়ে হেঁটে যাচ্ছে বেহায়ার জামা পরে
যুগপৎ আলো ও আঁধারে সমস্ত ভ্রমণ সেরে
জলই নদীর কাছে লিখে যাচ্ছে মানুষের গল্প।
২
এখন গল্পেরা কিছুদূর যাবে, ঘাস খাবে, পানিতে নামবে
দিন নেই রাত নেই করে খুঁজে আনবে জীবনভাঙা নুড়ি
কোথা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, কখন, এটা শিখতে শিখতে একসময় সকলেই গাছ হয়ে যাবে
মেঘবৃষ্টি-ঝড়ের সাথে মানিয়ে চলা শিখে নে্বে
দেহের ছায়া ছাড়িয়ে দীর্ঘ হবে অন্ধজুতা হারিয়ে কেউ কেউ ঘরে ফিরবে
তারপর সমস্ত শান্ত করে ঘুম আসবে।
বাইরে লেবুফুলেরা ঝরে পড়বে সামান্য হাওয়ায়
৩
জানি না কার কাছে যাচ্ছ, এই যৌবনপীড়িত সন্ধ্যায়
তোমার মুখের দিকে একলা আকাশ ফেলে দেখি
ছায়া ঘনিয়েছে। তুমি নাই। তুমি তো আর আমার নাই।
৪
বিশ্বাস করতে বলেছিল বড়রা, বলেছিল ভালোবাসতে
সকল পরিস্থিতিতে শরীর ছেড়ে মনের পাশে থাকতে বলেছিল
আমি বেঁকানো শিং নিয়ে কতো যে তেড়ে গেছি ক্ষোভে
ভালোবাসার কথা মনে হলে থেমে গেছি
আঙুলে হিংস্রতা, রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে মনে মনে নরম হয়ে আসি
অথচ কাউকে বলিনি- ভালোবাসা দূরহ আকাশ
তার ছায়ায় উৎকীর্ণ করা আছে মরণের সূত্রাবলী
৫
মহামন্থরতা তোমাকে চেটে খায়
সমস্ত বিপরীতগামিতা ভুলে তুমি যে শিশু হয়ে উঠেছ
করেছ যুক্তিহীন মন্ত্র উচ্চারণ
তার কিছু মাশুল তো থাকে, দিতেই হয়
সুতরাং প্রস্তুত হও, নত হও হাসিমুখে
ট্রমা, চা-বিস্কুট খেয়ে তৈরি হচ্ছে
তোমাকে যেতে হবে তার সাথে প্রাতভ্রমণে
সময়ের শরীরে যে ক্ষত হতে পারে তা নবজন্মের কুঁড়ি
দুয়েকটা দুপুর রেখো নদীর সাথে নিজেকে পোড়ানোর
৬
কোথাও তো যেতে চাইনি! জানি পথ তবু ডাকে
ডাকে পথিকেরাও। একলা কেউ চলতে চায় না
তাই যারা ডাকে তারাও মূলত সঙ্গ চায়
ঝোপঝাড় দেখে দুয়েকটা চুমু
অথবা আরো যা কিছু লতিয়েওঠা ইচ্ছের বাহক তারা
ফলে মাথাব্যথা নিয়েও যদি তুমি যেতে চাও
ধরে নিয়ো, কোথাও স্যারিডন নেই।
আরও ব্যথাভার নিয়ে তোমাকে ঘুমিয়ে পড়তে হবে
একলা…