পার্থজিৎ চন্দ-র কবিতাগুচ্ছ
ভাদ্র, ছাব্বিশ
প্রতিদিন গাছে জল দিই
প্রতিদিন পেতলের ঘটি রাখি
সূর্যাস্তের বুকে। বহুদূর পথ
যদি জলকষ্টে গলায় জড়ায় রৌদ্র?
তবু, জলপূর্ণ থাকে ঘট
শেষ হয়ে আসে দিন
মহারাত্রি, কালরাত্রি
পাথরের রথের গর্জন
নতুন কাশের অন্তরাল থেকে
তুমি শুধু বলে ওঠো
‘আজ ছাব্বিশে ভাদ্র…’
গ্রন্থি
আতপচালের সঙ্গে ভাল করে কদলী মাখাও
কালো-তিল ছড়াও ওপরে
তারপর গলা-জলে পিণ্ডগুলি দাও
দেখবে একটি রঙিন মাছ খেয়ে নিচ্ছে তাকে
আকাশে ঘুরছে। নিচে জনপদ
গঙ্গা, যমুনা, কাবেরী
কোথাও চরম শূন্যের দিকে নেমে যাচ্ছে পারা
হিম…
আর, পিতা-পুত্র দু’-জনেই
শেষ গ্রন্থিটুকু হারা
অপূর্ণ, ক্ষত
সন্ধে হয়ে এল
এবার তিনি উঠে দাঁড়াবেন
মাথার ওপর বিশাল চাঁদোয়া
ফুটে থাকা তারা আর জটিল ট্র্যাপিজ
পূর্ণের থেকে পূর্ণ’কে দাঁতে ছিঁড়ে
গ্রোগ্রাসে গেলার পর
তিনি ফেলে রেখে যান পূর্ণ’কে
শুধু কেউ কেউ দেখে
সেখানে ফুটেছে এক-ফোঁটা, দু’-ফোঁটা রক্ত
ওই লালাভ ক্ষত, মায়া
মানুষের
পথ
আমি ছোট্ট একটি জীব। অথবা জীব নই;
জীব ও জড়ের বাইরে কোনও তৃতীয় মাত্রা
এ-বিকেল, রক্তমেঘ, বৃষ্টির সংকেত অথবা দীর্ঘ রাত্তিরের
মাঝখান দিয়ে খুব সরু, বিন্দুবৎ
একখানা রাস্তা রয়েছে।
তার ভিতর দিয়ে গিয়ে, অন্ধকার পিচের ড্রামের মধ্যে
আমি শুয়ে থাকব
কিন্তু, হে, বিপুলা পৃথিবী
তোমার কথা ভাবি- তুমি এই কালরাত্রী পেরোবে কীভাবে?
শেষ পেয়ারাটি ঠুকরে ঠুকরে খেয়ে উড়ে যাচ্ছে পাখি
ওখানে তোমার শান্তি, আনন্দের রূপ
ওখানে তোমার পথ