সুতনু হালদার -এর কবিতা
ক্ষুধার্ত প্রতিলিপি
(১)
শূন্যতাকে মাঝপথে চিরি,
প্রাণশক্তির আকণ্ঠ পিপাসা…উন্মুখ জল,
হাপরের শব্দ শুনে এতো বিহ্বল!
কাতরতা খুঁজে পাক পরিত্যক্ত চুম্বন
চুমুর থেকে সমস্ত নুন আলাদা করে
ঢেলে রাখি গভীর সমুদ্র
ঝাপসা চোখ শুষে নেবে চশমার প্রতিশব্দ
(২)
সমস্ত ইন্দ্রিয় অনবরত একই প্রশ্ন করে যাচ্ছে
একটানা একটাই জিজ্ঞাসা
কয়েকটা মুহূর্ত কয়েকটা প্রজন্ম
হয়ে সামনে বিমূঢ়
তবু মাইকে গান বাজছে–—
‘ভয় নেই হারিয়ে যাবার…’
এবার চলো, আবার আদিম হই
(৩)
যে নীল নকশা তৈরি হয়েছিল
তার থেকে কয়েক চামচ তুলে রাখা ছিল
অকারণে সবকিছু তুলে রাখাও অপচয়
তোমরা আবার ঘরে ফিরে এলেও
আমি আর ফিরছি না
ক্রমশ ক্ষুধার্ত হয়ে নক্ষত্রগুলো
আর বিনিময়ে সম্মতি দিল না
উত্তেজনার সেই সীমাবদ্ধতাকে
আত্মসমর্পণ ভাবা ভুল
(৪)
এই ব্যস্ততা ভেদ করে
চেলাচ্ছে এক ভাঙা শহরের জীবাশ্ম
তার চুপকথা : নিঝুম ক্লান্তি : ড্রোন চিহ্নিত
নিথর সার্জারির অন্তর্দহনে
গিঁথে থাকে অবুঝ প্রতিশব্দ…
ভাঙা শহরটি নদী হয়ে ওঠে
প্রতিটা হৃদয় এক-আধবার
স্নান করে তাতে
(৫)
কঠিন ঢাকনা নিজেও আড়ষ্ট, নিঃসঙ্গ
ঘরে ফিরে আসে চাঁদ, ফিরেছে জ্যোৎস্না
নির্লিপ্ত উচ্চারণ ঢাকনাকে আত্মকথন শোনায়
দু’পাশের কুয়াশায় ঘনিয়েছে বিষাদ
গাছগাছালিতে নেমে আসে ছানাকাটা মেঘরাশি
শীতের শুরু আর গ্রীষ্মের শেষে
যে কটি ঋতু থাকে তারাও এসময়ে মানুষ হয়ে উঠে
ঢাকনার কাঠিন্যে নিজের নিজের প্রতিলিপি এঁকে দেয়