
তন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ
দূরত্ব
খাঁচার বাইরে বসে, খাঁচার জালিতে থাবড়া মেরে-মেরে
ধুলো ওড়ানোকে
মুক্তির আনন্দ বলো? হঠাৎ দরজা খুলে গেলে
পারবে না-এসে থাকতে? স্যাঁতস্যাঁতে হওয়ার লোভ আজও
ট্রেনের কামরায় ভাসে, ছলকে-ছলকে লাগে জুতোতে, ভাষায়
ভাষা থাবড়ে বড়ো হতে গায়ে লাগে
হে বন্ধু, বিদায়!
নাগরিক
দু-চারটে গাছ, গায়ে গা লাগিয়ে ঘন
বাঁশের বেড়া কিংবা টালির চাল— আমাদের গ্রামদেশ
সামান্য জলের দিকে পুকুরের মতো চেয়ে থাকি
ডাক শুনলে মনে হয় সাড়া দিই, গল্প জুড়ে বসি
একেকটা পথ কতদিন অব্দি ভাষা
হেঁটে চললে হাঁটা নয়, সঙ্গে চলে পথেরও হ্রস্বতা
যতদূর চোখ যায়— সূর্য ডোবে, ফ্ল্যাটবাড়ি ওঠে
আর্তি
আমার প্রত্যেকটা লেখা ভয় ও আশঙ্কাজাত
যমের দুয়ারে ফেলা কাঁটা
‘মিথ্যে হোক, মিথ্যে হোক’— বলে উঠি ঘুমের ভেতর
ঘুম ভাঙলে ভয় করে
ভয় ভাঙতে ঘুমের ভূমিকা?
কে যেন প্রত্যেকটা কাঁটা খুঁটে তুলছে
আমাকে বাঁচাও
বিদায়প্রস্তুতি
অগ্রিম তথ্যের কাছে অসহায়, অথচ জানি না
এমন ভঙ্গিতে কাটে দিনরাত, হাওয়া ঘুরে চলে
হাওয়ার নেপথ্যে পূর্বনির্ধারিত কিছু ক্রম
জানালা বন্ধই রাখি, ভয়ে
মিলিত নিঃশ্বাস এসে চাপ দেয়, যেতে দিতে বলে
বই
ভবিষ্যৎ, কী কবিতা লুকিয়ে রেখেছ
যখনই লিখব ভেবে আনন্দিত হয়েছি অগ্রিম
লেখা মরে গেছে
একের পর এক লাশ জুড়ে-জুড়ে পুস্তক-শরীর
এসো, জল দাও, বলো পুনঃ জন্ম হবে তোর