
মহাপ্রয়াণ
বেবী সাউ
কখনও কখনও অশ্রুফোঁটা কবিতার রূপ নেয়। অথবা হয়তো এই করুণ রাগিণী অপেক্ষা করে থাকে এই সব সময়ের জন্যই। কবি শঙখ ঘোষ চলে যাওয়ার পর কিছু টুকরো কবিতায় কথা বললেন বেবী সাউ। এই কবিতাগুলিই তর্পণ। শ্রদ্ধাঞ্জলি।
(উৎসর্গ – শ্রী শঙখ ঘোষ)
হে প্রাণ, মহাপ্রাণ
জলের উপর দিয়ে হাওয়া
আয়ু যত অন্ধকার
বাঁশি যত সুর
তত
আলো
দূর থেকে শোনা যায়
আজও পাতা খসে পড়ে কার?
কার কাছে যাব বলো? কোথায় তেমন দীপাধার?
২
একেকটি কথার ভাঁজে চুপচাপ বসে থাকো, আয়ু
চাওয়া নেই আর
পাওয়া নেই
দিগন্তের শেষ পথ কার কাছে যায়?
কাকে বলে অন্ধ বর্ণমালা
আজকাল প্রতিবাদ মিথ্যে মনে হয়
কথার খণ্ডন মিথ্যে
তারপরও স্মৃতি জেগে থাকে
করুণ এবং অসহায়
৩
বেশি কিছু চাওয়ার ছিল না কখনো
শান্ত হাওয়া, পুবের জানলাটুকু…
কোলাহল প্রয়োজনও ছিল না
এতো কথা কাটাকাটি, তারও
ভাঙা স্বর, শব্দ নেই তত
একেকটি কথার বাঁকে
শুধু চেয়ে থাকা
অনুভবে থাকা
আয়ুটির কাছে যেন চুপচাপ মেলে ধরা ভেজা জীবনের শোক…
৪
সন্ধে নামে
ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয় ঘর, নিয়ন সম্পর্ক
নিজেকে মেলাতে মেলাতে প্রতিবিম্বের সাথে দেখা হয়
কথা হয়
সুখ ভেঙে
দুঃখ ভেঙে
প্রতিনিয়তের খেলা এই
আয়ু, তুমি তাকে পাখিজন্ম দিও
৫
সুখ ছেড়ে,
দুঃখ ছেড়ে আদৌ কি কোথাও যাওয়া যায়!
জীবন কেবলই মায়া
মৃত্যু তারও অধিক
পরস্পর জ্ঞাতিভাই যেন
একসঙ্গে থাকাও সমস্যা; ছাড়লেই অপূর্ণ
৬
তারপরও পড়ে থাকে অধিক
ভাঙা উঠোন, গলার স্বর
বন্ধুদের আনাগোনা
মৃদুগন্ধী ধূপ; ধূসর মোমবাতি
রজনীগন্ধাটাই অধিক চতুর
তরতাজা
বুকে হাত রেখে বলে, “শান্ত হও, আয়ু…
কবিতাগুলো ভালো লাগলো কবি।
আন্তরিকধন্যবাদআপনাকে