স্বপ্নের বিশ্লেষণ <br />  কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং <br />  অনুবাদ- রিনি গঙ্গোপাধ্যায়

স্বপ্নের বিশ্লেষণ
কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং
অনুবাদ- রিনি গঙ্গোপাধ্যায়

কিন্তু আমি অবশ্যই দেখাতে চাই সংকেত কখনোই এককভাবে স্বপ্নে আসেনা। তারা সব ধরনের মানসিক প্রতিভাসকে প্রতীয়মান করে। সেখানে সাংকেতিক চিন্তা ও অনুভব সাংকেতিক অবস্থা থাকে। এটা প্রায়শই দেখা যায় যে সাংকেতিক নমুনা তৈরিতে এমনকি জড়বস্তুও অবচেতনে সহযোগিতা করে।

চিহ্ন ও সংকেত এর পার্থক্য দিয়ে আমি এই প্রবন্ধটি শুরু করতে চাই। চিহ্ন যে ধারণার প্রতিনিধিত্ব করে, সবসময় তার চেয়ে কিছু কম, সেখানে সংকেত সব সময় তার স্পষ্ট এবং তাৎক্ষণিক অর্থ থেকে আরও বেশি কিছু অর্থবহ করে তোলে। চিহ্ন তদুপরি প্রাকৃতিক এবং স্বতস্ফুর্ত পণ্য। কিন্তু কোন প্রতিভাধর ব্যক্তি একটি পেন্সিল ও তুলি নিয়ে বসে বলতে পারেনা, ‘আমি এখন একটি সংকেত আবিষ্কার করতে চলেছি’। কেউই চেষ্টাকৃত ইচ্ছা দ্বারা, কমবেশি বুদ্ধিদীপ্ত ভাবনা চিন্তা দ্বারা একটি যুক্তিগ্রাহ্য সিদ্ধান্তে পৌঁছে তাকে সংকেতের রূপ দিতে পারেনা। কেউ একটি ধারণার ওপর একটি সুন্দর কৃত্রিম অলংকরণ চাপিয়ে দিলেও সেটা চিহ্ন থাকবে যা সচেতন মনের চিন্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে, কখনোই সংকেত হয়ে উঠবে না যা এমন কিছুকে ইঙ্গিতায়িত করবে যেটা এখনো পর্যন্ত অজানা। স্বপ্নে, সংকেত স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসতে পারে; স্বপ্নের ক্ষেত্রে এটা ঘটে যায়, আবিষ্কার করতে হয় না, তখন তারাই হয়ে ওঠে সংকেত সম্পর্কে আমাদের যাবতীয় জ্ঞান লাভ করার প্রধান উৎস।
কিন্তু আমি অবশ্যই দেখাতে চাই সংকেত কখনোই এককভাবে স্বপ্নে আসেনা। তারা সব ধরনের মানসিক প্রতিভাসকে প্রতীয়মান করে। সেখানে সাংকেতিক চিন্তা ও অনুভব সাংকেতিক অবস্থা থাকে। এটা প্রায়শই দেখা যায় যে সাংকেতিক নমুনা তৈরিতে এমনকি জড়বস্তুও অবচেতনে সহযোগিতা করে।
এ বিষয়ে মালিকের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ঘড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া – এমন অনেক প্রমাণিত গল্প রয়েছে। বিখ্যাত সাঁসুসি থিয়েটারের সম্রাট ফ্রেডেরিকের মৃত্যুর সময় সেই প্রাসাদের ঘড়ির পেন্ডুলামটি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া একটি মৃত্যু ঘটলে আয়না ভেঙে যাওয়া, ছবি পড়ে যাওয়া এই প্রচলিত উদাহরণগুলিও আছে। অথবা একটি বাড়িতে যখন আবেগময় সংকটের কারণে কারো মৃত্যু ঘটে তখন সেই বাড়িতে সামান্য কিন্তু অব্যাখ্যাযোগ্য ভাঙন ধরে। যদিও এই ধরনের গল্প সংশয়ের কারণে প্রত্যাখ্যাতও হয় তবু এই গল্পগুলো সব সময় যাচাই করা হয়। এই মৃত ব্যক্তি তার মনস্তাত্ত্বিকতার কারণে যথেষ্ট প্রমাণ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হন।
সংকেত বহু রকমের হয়; তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেগুলি তারা কখনই একক নয়; উৎসগত প্রকৃতিগতভাবে তারা সমষ্টিগত। তারা প্রধানত ধর্মীয় প্রতিচ্ছবি। ধর্মবিশ্বাসীরা ধরে নেয় তারা দৈবউৎসজাত এবং সেটা তারা অন্যান্য মানুষের কাছে প্রতিভাত করতে চায়। আবার সংশয়বাদীরা সুস্পষ্টভাবে বলে তাদের আবিষ্কার করা হয়েছে। দুজনেই ভুল। যে ধর্মীয় সংকেত ও তার ধারণা রয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যা সযত্নে ও সচেতনভাবে বিস্তৃতি পেয়েছে, তা সত্যি। এটাও সমানভাবে সত্যিই যে এই বিশ্বাসীরা যেহেতু মনে করে তাদের উৎসরহস্য অতীতে নিমজ্জিত তাই তারা মানব উৎস থেকে আসেনি। তারা প্রাথমিক স্বপ্ন ও সৃজনশীল কল্পনা থেকে উদ্ভূত সমষ্টিগত প্রতিনিধি। এই ছবিগুলি ধর্মীয় সংকেতের অনৈচ্ছিক স্বতস্ফুর্ত প্রকাশ এবং এগুলোকে অভিপ্রায়যুক্ত আবিষ্কার বলার কোন মানেই হয়না।
স্বপ্নের ব্যাখ্যায় আমি পরে দেখাব যে এই সত্য সরাসরি এবং গুরুত্বপূর্ণ ভার বহন করে। যদি তুমি অনুমান করো কোন স্বপ্ন সাংকেতিক তাহলে এটা অনিবার্য যে এই স্বপ্ন ব্যাখ্যা করে প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে একটি অপরিহার্য শক্তিমান ভাবনা স্বপ্নের ছদ্মবেশে উঠে আসতে দেখা যাবে। পরবর্তী ক্ষেত্রে দেখা যাবে স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যা তুমি ইতিমধ্যেই জান সেই বিষয়ে ধারণা করতে পারবে।
এই জন্যই আমি আমার ছাত্রদের সব সময় বলি, ‘যতটা পার সাংকেতিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করো; তারপর যখন তুমি একটি স্বপ্নের বিশ্লেষণ করবে তখন সেই পড়াশোনাটা ভুলে যাও’। এই উপদেশের কিছু বাস্তব কারণ আছে। আমি নিজেকে স্মরণ করাবার জন্যই এটিকে নিয়ম বানিয়ে নিয়েছি। কারণ এটা ছাড়া আমি কখনোই অন্যের স্বপ্নের অর্থ ভালো করে করতে পারবনা। আমি এই নিয়মটিকে আদেশমূলক করেছি এটা দেখার জন্য যে এই নিয়মের কি প্রভাব পড়ে আমার চারপাশের মানুষজনের উপর এবং তাদের কি প্রতিক্রিয়া হয়। নয়তো তা আমার রোগীদের অনিশ্চয়তা ও দ্বিধার মধ্যে বিরাজ করতে থাকবে। যতটা সম্ভব স্বপ্নের যথাযথ অর্থ নিষ্পন্ন করার জন্য যে অবদান অবচেতন মন চেতনকে দান করছে তা একজন বিশ্লেষণকারী কাছে মস্ত বড় চিকিৎসা-পদ্ধতি। এই পদ্ধতি স্বপ্নের ব্যাখ্যায় একটি অনিবার্য পরিপূর্ণতা দান করবে।
আমি একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম যখন আমি ফ্রয়েডের সঙ্গে কাজ করতাম যেটা এই ভাবনাটাকে বিস্তার দিয়েছিল। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম যে আমি ‘আমার বাড়িতে’ আছি, স্পষ্টতই দোতালায়, অষ্টাদশ শতাব্দীর মত আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো একটি আরামদায়ক সুখকর বসার ঘরে। আমি খুবই অবাক হচ্ছিলাম কারণ আমি এই ঘর ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি। এবং এ বাড়ির একতলাটি দেখে আরো অবাক হবো ভাবছিলাম। আমি নিচে নামলাম এবং দেখলাম একতলাটা অনেক বেশি অন্ধকার। সেখানে ষোলো শতাব্দি বা তারও আগের ভারি ভারি আসবাব ও দেওয়াল রয়েছে। আমার চমক ও কৌতূহল বাড়ছিল। আমি পুরো বাড়িটি দেখতে চাইছিলাম। তাই আমি ভূগর্ভস্থ ভান্ডার ঘরের দিকে গেলাম যেখানে আমি একটি দরজা খুঁজে পেলাম। এই দরজাটি কয়েকটি পাথরের সিঁড়ি দিয়ে একটি খিলানযুক্ত ঘরে পৌঁছেছে। এই ঘরের মেঝে বড় বড় পাথরের স্ল্যাব দিয়ে তৈরি এবং দেওয়ালও খুব পুরনো ধরনের। আমি গোলাবারুদ নিক্ষেপ করার একটি যন্ত্র বিশেষকে পরীক্ষা করে দেখলাম যেটা ছোট ছোট ইট ভাঙার মিশ্রণে তৈরি। স্পষ্টতই বুঝলাম দেওয়ালগুলো আসলে রোম দেশের। আমি ক্রমশ উত্তেজিত হচ্ছিলাম। আমি একটি পাথরের স্ল্যাবের উপরে লোহার রিং দেখলাম; সেটাকে টেনে তুললাম এবং দেখলাম সরু একটা পাথরের সিঁড়ি নেমে গেছে একটা গুহার দিকে যেটা প্রাগৈতিহাসিক যুগের সমাধিস্থানের মতো; যেখানে দুটো কঙ্কালের খুলি, কিছু হাড় এবং ভেঙে ছড়িয়ে পড়া কিছু মাটির বাসন ছিল। তখন আমার ঘুম ভেঙে গেল।
ফ্রয়েড যখন বিশ্লেষণ করছেন এই স্বপ্ন তখন যদি আমার পদ্ধতি অর্থাৎ নির্দিষ্ট অবস্থা ও অনুষঙ্গ অন্বেষণ করতেন তাহলে আসল ঘটনার একটি সুদূরব্যাপ্ত গল্প শুনতে পারতেন। কিন্তু আমি ভাবছিলাম তিনি সেটা খারিজ করে দেবেন কারণ তিনি মনে করতেন এটা সমস্যা থেকে পালানোর একটি প্রচেষ্টা মাত্র; আসলে তার নিজেরই এই সমস্যা ছিল।
এই স্বপ্নটা আসলে আমার জীবনের একটি ছোট সারসংক্ষেপ। আরো বিশেষভাবে আমার মস্তিষ্কের উন্নতির সারসংক্ষেপ। আমি যে বাড়িতে বড় হয়েছে সেটি দুশো বছরের পুরনো; আমাদের বেশির ভাগ আসবাবপত্র ছিল তিনশ বছরের পুরনো এবং আমার তখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আধ্যাত্মিক দুঃসাহসিক কাজ ছিল কান্ট ও সোপেনহাওয়ারের দর্শন পড়ে ফেলা। একটি দুর্দান্ত খবর ছিল চার্লস ডারউইনের আবিষ্কার। এর আগে পর্যন্ত আমি আমার বাবা-মার মতই মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণায় বাস করছিলাম যাদের কাছে এই পৃথিবী ও মানুষ সর্বশক্তিমান ও দূরদর্শী দৈব দ্বারা চালিত ছিল। তাদের ধারণা এই পৃথিবী ধীরে ধীরে পুরনো ও অপ্রচলিত হয়ে যাবে। কিন্তু আমার খ্রিষ্টিয় বিশ্বাস, পশ্চিমী ধর্মবিশ্বাস ও গ্রিক দর্শনের মুখোমুখি সংঘাতে আপেক্ষিক হয়ে যাচ্ছিল। সেই কারণেই একতলাটা তখনো পর্যন্ত অন্ধকার এবং স্পষ্টতই জনবসতিহীন।
আমি যখন অঙ্গ-ব্যবচ্ছেদের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলাম তখন থেকে অঙ্গ-ব্যবচ্ছেদবিদ্যা ও জীবাশ্ম সংক্রান্ত তুলনামূলক আলোচনার সূত্রে আমার মনের বদ্ধমূল ধারণা থেকে ইতিহাস বিষয়ে আগ্রহ আরো উন্নত হতে শুরু করে। আমি মানুষের ফসিলের হাড় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। বিশেষত প্রচুর আলোচনার সূত্রে নিয়ান্ডারথ্যালেনসিস এবং এখনো পর্যন্ত ভীষণই বিতর্কমূলক কঙ্কাল দুবুইসের পাইথেকানথ্রপাস সম্পর্কে। সত্যি কথা বলতে এগুলোই আমার স্বপ্নের প্রকৃত অনুষঙ্গ ছিল। কিন্তু কঙ্কালের খুলি, কঙ্কাল, মৃতদেহ এসব বিষয়ে ফ্রয়েডের কাছে উল্লেখ করতেই আমি ভয় পাচ্ছিলাম, কারণ আমি শুনেছিলাম তাঁর এই থিম বিশেষ প্রিয় ছিল না। তিনি লালন করতেন নানা অদ্ভুত ধারণা যে কারণে আমি তার অকাল মৃত্যুর প্রত্যাশায় ছিলাম। এবং তিনি এই সত্য জানতেন যে আমি খুবই আগ্রহান্বিত ছিলাম ব্রে্মেনের ব্লাইকেলা মমিগুলি সম্পর্কে যা আমরা ১৯০৯ এ আমেরিকা যাওয়ার পথে দেখেছিলাম।
এই কারণে আমি আমার ভাবনা থেকে সরে আসতে অনিচ্ছুক ছিলাম। ফ্রয়েডের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তার পটভূমি এবং আমার নিজস্ব মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে প্রায় সেতুহীন একটি ফাঁক ছিল যা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। যদি আমি আমার অন্তর বিশ্বের কথা তাঁকে বলতাম আমার আন্দাজ তা তাঁর কাছে খুব কৌতুকপূর্ণ হতো; এবং সেইজন্যই আমি ভয় পাচ্ছিলাম তার বন্ধুত্ব হয়তো আমি হারিয়ে ফেলবো। আমার নিজস্ব দর্শন সম্পর্কে বেশ অনিশ্চিত হয়ে আমি আমার স্বাধীন অনুষঙ্গ বিষয়ে তাকে মিথ্যে বললাম। কারণ আমি আমার খুব ব্যক্তিগত এবং একেবারে ভিন্ন গঠন সম্পর্কে ফ্রয়েডকে আলোকিত করার দুরূহ কাজ থেকে সরে আসতে চাইছিলাম।
ফ্রয়েডকে আমার স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে যে দীর্ঘ বিবৃতি এতক্ষণ ধরে দিলাম তার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। কিন্তু সত্যিকারে স্বপ্ন বিশ্লেষণের সময় একজন যে ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হয় তার একটি ভালো উদাহরণ এটি। সুতরাং যার স্বপ্নের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং যিনি বিশ্লেষণ করছেন তাদের দুজনের ব্যক্তিগত পার্থক্যের উপর নির্ভর করা ভালো। আমি দ্রুত উপলব্ধি করলাম ফ্রয়েড আমার কিছু অসঙ্গত ইচ্ছে সন্ধান করছেন। তাই আমি পরীক্ষাচ্ছলে পরামর্শ দিলাম, আমি যে খুলি দেখেছি সেগুলো আমার পরিবারের কিছু নির্দিষ্ট সদস্যের হতে পারে যাদের মৃত্যু আমি নানা কারণে কামনা করেছিলাম। এই প্রস্তাব তাঁর অনুমোদন পেল; কিন্তু আমি এই অপ্রকৃত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলাম না।
যখন আমি ফ্রয়েডের প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর খুঁজছিলাম তখন মনোবিজ্ঞানমূলক বিচারবোধের প্রকৃত ভূমিকা নিয়ে আমার অন্তর দৃষ্টিতে আমি হঠাৎ করে বিভ্রান্ত হলাম। আমার এই চিন্তা এতটাই অপ্রতিরোধ্য ছিল যে আমি ভাবছিলাম এই অসম্ভব প্রশ্নবাণ থেকে আমি মুক্তি পাব কি করে? তাই একটি মিথ্যের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারলাম। মিথ্যে বলাটা সুরুচিপূর্ণও নয়, নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্যও নয়; কিন্তু এটা না করলে ফ্রয়েডের সঙ্গে আমার সম্পর্ক মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠত নানা কারণে যেটা আমি চাইছিলাম না।
আমার অন্তর দৃষ্টির সমন্বয় হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিতভাবে আমাকে এই পুরো বিষয়ের সত্যে পৌঁছে দিয়েছিল যে আমার স্বপ্ন মানে আমার, আমার জীবন, আমার পৃথিবী; আমার সমস্ত বাস্তব একটি তাত্ত্বিক কাঠামোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল যে তাত্ত্বিক কাঠামো অন্য একজন তার অদ্ভুত মস্তিষ্ক ও নিজস্ব কার্যকারণ দ্বারা খাড়া করেছিল। এটা ফ্রয়েডের স্বপ্ন নয়, আমার স্বপ্ন; এবং আমি হঠাৎ আলোর ঝলকানি লেগে আমার স্বপ্নের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারলাম। স্বপ্নের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এই দ্বন্দ্ব একটি অত্যাবশ্যক দিক তুলে ধরে ছিল। স্বপ্নের বিশ্লেষণ কোনো প্রযুক্তি নয় যার নিয়ম কানুন আয়ত্ত করে প্রয়োগ করতে হবে প্রয়োজন অনুসারে। আসলে শব্দের বিশ্লেষণে দুজন ব্যক্তিত্বের দ্বান্দ্বিক আদান-প্রদান ঘটে। যদি স্বপ্নের বিশ্লেষণ খুব যান্ত্রিকভাবে করা হয় তাহলে এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে স্বপ্নদ্রষ্টা না কি বিশ্লেষক – কে কার ওপর প্রভুত্ত্ব করল?
যেহেতু আমি আমার ইচ্ছে অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চাইনা, তাই এক্ষেত্রে সম্মোহনীয় পদ্ধতি ত্যাগ করেছি। আমি একটি নিরাময় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে চাই যাতে আমার পরামর্শ না নিয়ে রোগী নিজেই নিজের ব্যক্তিত্বের স্ফুরণ ঘটাতে পারে। এই সমস্যা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার একমাত্র পথ এটাই। রোগীর মর্যাদা ও স্বাধীনতা বজায় রাখা আমার লক্ষ্য হওয়া উচিত; যাতে সে নিজের জীবন নিজের ইচ্ছেমতো কাটাতে পারে। ফ্রয়েডের সঙ্গে এই আদান-প্রদানে আমি বুঝতে পারছিলাম মানসিক বিষয় আগেই কোন তত্ত্ব খাড়া না করে আমাদের বাস্তবে আরো প্রচুর পরিমাণ মানুষের সংস্পর্শে আসা উচিত।
স্বতন্ত্র ব্যক্তি হল একমাত্র বাস্তব। ভবিষ্যতে আমরা যদি বাস্তব মানুষের কথা না ভেবে মানব সম্পর্কিত বিমূর্ত ধারণায় যেতে চাই তাহলে আমাদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থেকে যাবে। এই সময়ে সামাজিক অভ্যুত্থান ও দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে মানুষের মানসিক ও নৈতিক গুণাবলী সম্পর্কে ধারণা তৈরি করার জন্য আমাদের খুব বেশি সংখ্যক মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। আমরা যদি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করতে চাই তবে আমাদের একটি মানুষের অতীত ও বর্তমান দুইই জানতে হবে। সেই কারণেই মিথ ও সংকেতকে বুঝতে হবে; কারণ তার গুরুত্ব অপরিহার্য।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes