সীমা পাত্র-র কবিতা
এমন মানুষী জনম
( ১ )
মাটির হাঁড়ি ভিয়েনের কোলে ফুটন্ত রস..
ময়রার হাতের অদ্ভুত খেয়ালে গোল চৌকো লম্বা শরীরগুলো ফুটন্ত তেলে সৌন্দর্য স্নান সেরে
ডুব দিচ্ছে সেই অতল ফুটন্ত জলে,
জলের বুকে মধু টলমল..
যুবতীর জন্ম সার্থক।
শরীর থেকে ফোঁটা ফোঁটা অমৃত তার..
বাইরের কাঠের বেঞ্চে এসে বসে কয়জন
বাচ্চা ছেলেটা ছেঁড়া প্যান্টে হাত মুছে
একে একে এগিয়ে দেয় অমৃতের ভান্ডার,
তির্যক চোখ দিয়ে মেপে মেপে
উশুল করে ওরা ফেলে দেওয়া দাম,
খাওয়া সেরে হাত ধুয়ে ফিরে যায় যে যার ঘরে।
একা দোকানের ফাঁকা কাউন্টারে
রেকাবিতে সাজানো সার সার মিষ্টি
সুযোগসন্ধানী মাছিরা ছুঁয়ে দিয়ে যায়।
( ২ )
বানে ভেসে গেছে ঘর
একটু যা ছিল মাথা গোঁজার মত
ত্রিপলের নিচে গাদাগাদি ভিড়েই ভিড়ে যেতে হয়
টিনের একখান বাক্স ছিল ঘরে
তার পেটের ভেতর পাট পাট তিনটে রংচটা শাড়ি
জলের তোড়ে বহুদূরে ভেসে গেছে লজ্জা
মুখপুড়ি হতভাগী বয়স কোথায় লুকোবি?
পেটে ভাত নেই, পেটে ভাত নেই, তবু খিদে!
নিশুতি রাতে ত্রিপলের নিচে গাদাগাদি ভিড়ে
ভিড় আরও গাঢ় হয়।।
( ৩ )
ডাইনী ও, বশ করেছে তোমায়
কি আছে ওর যা আমার, আমার, নেই!
তিরতির করে উড়ে যায় প্রজাপতি
বাগানে কত ফুল, রাস্তায় একদল সূর্যমুখী বেরিয়েছে জল সাইতে, বিয়েবাড়ি কোথাও..
আজকের দিনটা বেশি উজ্জ্বল, কতদিন পর শহরে বৃষ্টি, ভ্যাপসা গরমটা কেটে গেছে হুস করে
আকাশে ফানুস, ফানুস..
তবু একটা মেয়েলি আদল হাওয়ার ঘূর্ণিতে পাক খেতে খেতে, ছয় তলার নিচে পড়ে যায়।।