রাহুল দাশগুপ্ত-র কবিতাগুচ্ছ

রাহুল দাশগুপ্ত-র কবিতাগুচ্ছ

এক অবিরাম স্বীকারোক্তি

১৪
শরীর দিতে পারে ক্ষণস্থায়ী সুখ
আমি চাই পবিত্রতা
আমি চাই আলো
সৌন্দর্য আমাকে মোহগ্রস্ত করে
কিন্তু আমি আর আত্মসমর্পণ করতে রাজি নই
সেই মোহের কাছে
যৌনতার স্মৃতিগুলি আমাকে উত্যক্ত করে
অস্থির করে, অসুস্থ করে অবিরত
অথচ আমি পালাতে চাই শিশুদের বাগানে
যৌনতা আমার ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে রাখে
আমাকে পাগল করে তোলে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে
আমি আগ্নেয়গিরির মতো জ্বলতে থাকি
স্মৃতির বিছানায় ছটফট করি
আমার অস্থিরতায়
অক্লান্ত দহনের নারকীয় অভিজ্ঞতায়
কোনও শিল্প নেই
কোনও তৃষ্ণা নেই, আর্তি নেই, পবিত্রতা নেই
আমি ওই দুঃসময়কে ঘৃণা করি
যে কোনও দুঃসময় দিতে পারে ক্ষণস্থায়ী সুখ
আর আবহমান অনুশোচনা
আমি চাই আলো, আর পবিত্রতা
যা রয়েছে শিশুদের বেঁচে থাকার প্রতিটা মুহর্তে
তাদের হাসিতে, তাদের অভিমানে, তাদের আব্দারে
তাদের গানে, ছবিতে, প্রশ্নে, নাচে, অপচয়ে
তাদের অস্থিরতায়
ধ্বংসের মধ্যে যা জ্বালিয়ে রাখে প্রার্থনাগৃহের
স্নিগ্ধ স্বপ্ন…

১৫
সামান্যই দাবী তার
আর রয়েছে কাচের মতোই স্বচ্ছতা
যেন কোনও মানুষ নয়
মানুষের শরীর থাকে
আর সে তো বিশুদ্ধ আত্মার প্রতিফলন
সে কিছুই লুকোতে পারে না
তার আয়নার মতো স্বচ্ছতায়
বাস্তবতা বিচ্ছুরিত হয়
সত্যের নানা চোখে, দুঃখে ও মজায়
স্বীকারোক্তির মতোই

সে স্বীকারোক্তি করে যায়
অভিজ্ঞতা
রোজকার জীবন, মুহূর্তের ওঠানামা
হঠাৎ কোনও চমক, ঝলকানি, অন্ধকার
কোনও গোপন গুহা নেই তার

অথচ তাকেই লুকোতে হয়
একটা জঘন্য পাপ
কী প্রচণ্ড ভার সেই পাপের
কী বীভৎস চেহারা
তার দমবন্ধ হয়ে আসে…

সে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারে না
সে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে ওঠে
সারা রাত বসে থাকে জানলার ধারে
আলোর অপেক্ষায়
আলোর জন্যই তার সবকিছু
তার সমস্ত ত্যাগ, সহিষ্ণুতা, অপেক্ষা

সে শুধু ছবি এঁকে চলে সেই আলোর
একটার পর একটা ছবি
একটু একটু করে সে ঢুকে যায়
ছবির জগতের ভিতর
সেখানে সব ঝলমলে গাছ, নদী, আকাশ
পথ, প্রকৃতি
আর প্রচণ্ড গতি
নদীর জলে তীব্র গতি, মাটিতে, বাতাসে
সেই গতিকে টের পাওয়া যায়
সেই গতি আলোড়িত করে অনুভূতিকে
নিজের সমস্ত সংযম আর স্থৈর্য দিয়ে
আবেগ আর কল্পনা দিয়ে
সে সৃষ্টি করে চলে সেই গতি

সেই গতি, যা লুকিয়ে ছিল তার আত্মায়
সেই গতি, যাকে সে নিজেও এতদিন টের পায়নি
ছবি আঁকতে গিয়ে বেরিয়ে আসে
উপচে ওঠে সাদা পৃষ্ঠায়
সেই গতির সামনে চমকে ওঠে দুনিয়া
বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যায়…

১৬

লোকে যেভাবে সার্কাসে যায়,
জোকার দেখতে
সেভাবে তোমরা তাকে দেখতে পারো
যদি প্রাণ খুলে হাসতে চাও

আপাতত সে আছে একটা খাঁচার ভিতরে
চিড়িয়াখানায়
অন্যান্য জন্তুদের সঙ্গে, দ্রষ্টব্য হয়ে
তাকে গিয়ে দেখে আসতে পারো
যদি প্রাণ খুলে হাসতে চাও
খাঁচার ভিতর সে গালে হাত দিয়ে বসে আছে
গভীর দার্শনিকের মতো
বুকটাকে ড্রামের মতো বাজিয়ে সে ক্লান্ত
সে শুধু নিজেকে দেখাতে চায়
কোথায় সে কতটুকু হাসির খোরাক যুগিয়েছে
কৌতুকের ফুলকি উড়েছে
আসলে বহুদিন সে আয়নার সামনে দাঁড়ায় না
সে জানেও না কেমন করে বদলে গেছে তার মুখ
সেঁধিয়ে গেছে একটু একটু করে ভাঁড়ের মুখোশের আড়ালে
এখন সে রাস্তা দিয়ে গেলে লোকে হাসে
বলাবলি করে খুব
অথচ তার নিজের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই
সে জানেও না সে আছে একটা খাঁচার ভেতরে
দ্রষ্টব্য হয়ে…

১৭

অনেক হয়েছে, অনেক হেসেছ তোমরা
তাকে নিয়ে তোমাদের হাসির শেষ হবে না কখনও
সে ঠিক তাই করবে যা তার করা উচিত নয়
সে ঠিক তাই বলবে যা তার বলা উচিত নয়
একটা স্থির জগতের দিকে তাকিয়ে
সে ক্ষ্যাপার মতো দাপাদাপি করে যাবে
তার অর্থহীন মুখভঙ্গি, রোমান্টিক চাহনি
আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া দেখে
তোমাদের হাসি কখনও ফুরোবে না
তার শরীরের ভাষায় সে অনেক কিছু প্রমাণ করতে চাইবে
হ্যাঁ, সে তোমাদের কাছে প্রমাণ দিয়ে যাবে
সে কত মূল্যবান!
নিজের কথা লিফলেটে লিখে বিলিয়ে যাবে
নিজেকে দেখাতে চাইবে নিজের থেকে অনেক বড়
কেউকেটা গোছের কেউ
আর তোমাদের হাসি পাবে খুব
ঘুমও আসবে কখনওসখনও
কখনও তাকে দেখে গম্ভীর হয়ে যাবে মুখ
ভুরু কুঁচকে যাবে
আসলে সে তো একটা মশা
যাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া যায়
আসলে সে একটা বুদবুদ
যার প্রশংসা জোটে না, জুটলেও তা
সবসময়ই নকল
নিন্দা, শ্লেষ, ঠাট্টা, ধমক, হুমকি
গালমন্দ, অনিশ্চয়তা, উপেক্ষা, ঔদাসিন্যের সঙ্গে
যার নিরন্তর সহবাস
আসলে সে কিছুই নয়, আর এটাই কারণ
অথচ সে প্রত্যাশা করে মানুষ তাকে দেখে
হাততালি দেবে
সে স্বীকৃতি চায় অথচ দেখতেও পায় না
অনন্তের নীরবতা থেকে সে কবেই ছিটকে গেছে…

১৮

তার ইন্টারভিউ নিতে যেও না, ঠকে যাবে
সারাজীবন ধরে অনেক চেষ্টা করেছে সে
ঘাম ঝরিয়েছে অনেক
ভুরি ভুরি প্রমাণপত্র দাখিল করেছে
কেউ তার দিকে ফিরেও তাকায়নি
একটা তুচ্ছ পোকামাকড়ের মতোই
তার অস্তিত্বকে গুরুত্ব দেয়নি কেউ
তাকে কখনও বলেনি, সে সম্মানের যোগ্য
তারও একটা ওজন আছে।
আত্মমর্যাদাবোধ আছে
শুধু উপেক্ষা, ঔদাসিন্য, নীরবতা
শুধু ঠাট্টা, শ্লেষ, রসিকতা
তিলে তিলে নিজেকে সে এছাড়া আর কিছুর
যোগ্য করে তুলতে পারেনি
তাকে যে যেভাবে পারে ব্যবহার করেছে
তারপর ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে ভাঙা বোতলের মতো
একটা সম্মানজনক জীবন, পা রাখার জায়গা, শক্ত জমি
বিভ্রমের মতো এসেছে আর সে পিছলে গেছে
অথচ চেষ্টার ত্রুটি ছিল না তার
স্থির দুনিয়াকে সে বারবার আলোড়িত করতে চেয়েছে
সে সামান্য হয়ে থাকতে চায়নি
সে নীরব হয়ে থাকতে চায়নি
সে অন্যরকম হতে চেয়েছে, আপোশ চায়নি
অথচ একটা জোকারের বেশি কিছু হয়ে উঠতে পারেনি সে
তুমি একটা জোকারের ইন্টারভিউ নিতে যেও না
ঠকে যাবে…

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes