
অয়ন চৌধুরী
জঙ্গলের কবিতা
শহরের নির্বোধ গোঙানি শুনে সে রাতে থেমে গেল পশুদের ডাক
আগুনের চাপ খসে গেল মেহগিনি রঙের অগ্নিকুণ্ডে
আমি তখনও সাহস করে নাম ধরে ডেকেছি দু’বার
তাকিয়ে থেকেছি দূরে জোনাকির মতো ঘরের দিকে
প্রেম ও মৃত্যুর আলিঙ্গন সেখানে গাঢ় হয়ে আসে
এরপর টর্চ গড়িয়ে গেল। মনে হল পাহাড়ের আধখানা খুলে গেছে
মোহগ্রস্ত প্রেমের পর বাতাস উঠল। ঢালু হয়ে এল চোখ।
যত আমার দেহ কেঁপে ওঠে তত বসে যায় নখ। আয়ু ফুরিয়ে আসে।
অন্ধকার ফিকে হবে যখন, শিউলি ঝরেছে ঘাসে ঘাসে
বুকের উপর নেমে আসা সৌরমণ্ডল আর অন্ধকার আমাকে শুঁকে দেখে নিচ্ছে
টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওদের কলোনীতে
এরপর বিস্ময় আমাকে অন্ধ করে দেবে…
অচেনা অতল
সন্দেহ নাও। দেহের কাছে রেখে দাও দাহের মতো কোনো বৃহত্তর বোধ।
ছিঁড়ে ফেলো নগ্ন দেহের নীচে ঘুমিয়ে থাকা ব্লেডের চিহ্ন। তুমি আমাকে সংযত করো।
করো আরও সমীচীন। প্রতিটি বৃক্ষ যে সমীহ জানে তার সামান্য জালিকা রাখো শিরোস্ত্রানে।
মুগ্ধ করো কারুকাজে, প্রতিটি বাঁকের পাশে যেটুকু ধ্বংস এসেছে তার কাছে বসে
অপেক্ষার মতো কোনো দীর্ঘ যাত্রার কথারম্ভ হোক…
ঈশ্বরের চোখে দেখেছি বিষাদ তবে কি সেও গোপনে কাঁদে!
বাসভূমি পরিত্যাগ করে হেঁটে যায় গাঢ় কোনো গুহার কাছে!
তারপর ধ্যান। বোধি আর সমাধির মতো হাজার হাজার ফিট নিচু এক সুরঙ্গ পথে
যাবতীয় মেঘের গর্জন অস্বীকার করে নিজেকে ছুড়ে দেয় সে।
প্রতিধ্বনির মতো সামান্য শব্দ ভেসে আছে। ভেসে আছে
কবিতার মতো সাতান্ন বছরের জরা ও ব্যাধি আর
অন্ধকার একটি গর্ভ…