
দেবশ্রী দে-র কবিতাগুচ্ছ
ত্রিভুজ
পুকুর কেটেছি বলে
অভিমানে ডুবে গেল পা। গভীরে জীবন
ঘাই মারে যখন-তখন
তুমি কি দুপুর চেনো
আর সে কি চিনে ফেলে রাত
নাভির ভিতরে দেখি মাছের আলাপ
জমে জমে ওঠে
এ খেলায় খেলা-ই নিয়ম
জলের মতন। হেরে যাও। জিতে যাও।
পুকুরের তিনটি কোণায়
হেঁটে যাও পতন-প্রবণ
শুদ্ধ স্বর
তেতলা বাড়িটি জুড়ে নিয়ম তোমার
থুতনির শেষ তিলে আটকে থেকেছে— বালকের সুখ
শীতলপাটিটি আর দাবার সে ছক
দু’চোখের চালে চালে মসৃণ ঘুম— কেমন কুহকে
জেগে ওঠে। কাতরায়
তুমি জানো, হায়!
কতখানি শুদ্ধ এই দক্ষিণাচার
কতখানি চাওয়া এই তোমাকে চাওয়ার
বেজে ওঠে বারবার
কখনও ঋষভে যায়, কখনও গান্ধার
বন্ধ ঘড়ির পাশে
বারো পরবর্তী কাঁটাটিতে
সূর্য এঁকে দাও। উলটোদিকে চুপ করে থাক
মৃত্যুর আত্মীয়-আপন
যাতায়াত মানে শুধু চলে যাওয়া নয়
যত দেখা ততখানি ভুলে থাকো
দেহাত্ম- প্রত্যয়। ভুলে থাকা সহজ কি হয়
ঘড়িটি বন্ধ হলে
ভুলে থাকো। পাশে থাকো। যেমন সময়
আবর্ত
আমাকে প্রশ্ন করো— বলেছিল নদী
উঠেছিল এসে বুকে
চিত্ত কঠিন হলে মিলন মলিন হয়ে যায়
দোষ কার
কার দোষে অনন্ত নীল হল,
কার দোষে সঙ্গমের মাটি হল ক্ষয়
তুমি জান জলাধিপ— বলেছিল নদী
উঠেছিল এসে
বলেছিল, বলেছিল নদী…
ভাট
তোমাকে চিনেছে যারা
চিনেছে কি অক্ষর তোমার
কত ভাট
আ শে পা শে—
তারা কি ভাঙন জানে
রাতের চোখের মধ্যে কতখানি রাত জেগে থাকে
নীরক্ত ঠোঁটের গায়ে দাপাদাপি দেখে
হাসে শুধু হাসে যে ভিতরে
তাকে কি চিনেছে তারা তোমার অক্ষর