
জয়িতা চট্টোপাধ্যায় -এর কবিতা
দীর্ঘশ্বাসের মতো:
একটা দৃঢ় চিবুক ছুঁয়ে
দাঁড়িয়ে আছে দগ্ধ ‘ভালো থাকা’
অনির্বচনীয় অজস্র কিছু ক্ষত নিয়ে
নিপাট আঁধারের গায়ে লেগে আছে সে
আত্মমগ্ন এক সৈনিকের মতো
ভোর আসার ঠিক আগেই তাকে
নামিয়ে রাখাছি , চোখের আড়ালে
অযূত অস্ত্র
ডুবিয়ে দিচ্ছি নিজেস্ব বৃত্তে
উদাস বাউল, একতারার সুর
এই সমস্ত বিশেষ আয়োজন
সাজিয়ে রাখছি নিঃসঙ্গ ঝুল বারান্দায়
দিনলিপির শেষ পাতা যখন উড়েছে
তখন বুঝেছি ‘ভালো থাকা’ মানে
বাড়তি একটা অপেক্ষা…
নিপাট রাতের গায়ে:
মাত্রার ক্যানভাসে একটা অক্ষর লেপ্টে থাকে
যেভাবে বুকের ভেতর ভাঙা ঘুমের রেখা
আঙুলের কাতরতা থেকে জন্ম নেয় বৃত্ত
নান্দনিক পালক নিবিড় ভাবে গেঁথে যায়
আকাঙ্খার শরীরে
আর নিরলস পুড়তে থাকে আমার অনন্ত জেগে থাকা, শূন্য মাঠে।
এ ও এক উদযাপন:
রাত্রির সব মোহ ছেড়ে
জোনাকিরা রাস্তার দুপাশে
সাজিয়েছে নিরাপত্তা
অন্ধকার বালিশে রেখেছে
বিষন্ন রাতের ঘুম
প্রদীপের থর থর আলোতে জমিয়েছে প্রাণ
বৈভবের পড়ে,
আর আমরা ডুবে যাওয়ার ভয়ে
ভোরের কুয়াশার মতো কেটে পড়ছি
ভিটে মাটি, পান্ডুলিপি, আঁতুড়ঘর
সব ভাসিয়ে দিচ্ছি অনিশ্চয়তার ঢেউয়ে….
অল্পই চিনেছি জীবন:
যতটা সত্য নিহিত সত্তায়
ততটা সন্মুখে উন্মোচিত না
যতটা অপরাধ সারাজীবনের
ততটা শাস্তি,স্বাদু কবিতা
মজুত রাখে না।
শাস্তির পর:
শোকার্ত তারাদের গায়ে লেগে আছে
একটা একটা দিনের মৃত্যু
অনন্ত রাত ও মুছিয়ে দিতে পারেনি ওদের
টুকরো টুকরো ব্যথা
কিছু মসৃণ ছোঁয়ায় পাল্টে যায় পথ,
পাল্টে যায় যন্ত্রণার অভিমুখ
সহস্র বছরের সিসিফাস
আজ তোমার স্পর্ধায়
হয়ে উঠছে তিলোত্তমা,দেখেছো?