
শিবালোক দাস -এর কবিতা
সুন্দর
১
ভেঙে চুরমার সব বিকেলের মতো।
তবু, রোজ এই খেলা চালিয়ে যাই।
তুমি পায়ে করে মুছে দাও আমার
পিঠে সমস্ত অক্ষর, গান, অস্ফুট…
অতল, আঙুল ছোঁয়ালেই বিস্ফারিত
হবে জেনে আমি হাত রেখে জানাই
না বিদায়…অতল…অতল…অতল…
এমনি করেই আত্মসমর্পণ করো বুঝি ?
২
এবার স্নান সারো, শতাব্দী পার,
ডুবিয়ে রাখো ডানা, ভেসে যেও না,
রোমন্থন করো ঘুরে যাওয়া শ্বাস
পাঠানো মূলাধারে…
একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখো,
তোমাকে ডাকে দুটি ঠান্ডা চোখ !
৩
তুমি নৈর্ব্যক্তিক কে বলেছে তোমাকে ?
তবুও চাঁদের আড়ালে তোমার সজ্জিত
পৃথিবী ডুবে গেল ধীরে ধীরে…
তোমার কান্নায় ভেসে যায় আমার
পান্ডুলিপি, আমার পদ্য যাপন।
তোমার নগ্ন শরীর ঢেকে দিই এসো।
দুঃখিত হয়ো না। উড়ে যেতে দাও
তোমার উত্তরীয় নিঃশব্দে !
৪
যদি ভয় হয়,
তাহলে ফেলে দিও দগ্ধ ফুল।
জল চাইতে চাইতে সে পুড়ে
গেছিল, তার দিকে ফিরে কেউ
তাকায় না। চক্রব্যূহে ঘুরতে
ঘুরতে সুন্দর, তুমি দেখো
তার অস্থি তোমার শরীরে লেগে
যায়, ওটাই তোমাকে স্বর্গদ্বারে
নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
৫
আবর্তে হঠাৎই চোখ লাল
হয়ে ওঠে হাওয়ার,
অভিমান সেরে ওঠার আগেই
সে টের পেল, অসমাপ্ত লিপি
তার চূর্ণ-বিচূর্ণ, পড়ে দাওয়ার
উপর।
সে তোমাকে মনে মনে চেয়ে
কি ভুল করেছে, সুন্দর ?
৬
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময়
আমার পকেট থেকে বেরিয়ে
পড়ে একটি গ্রহ, তার চারপাশে
কোনো সংঘর্ষ নেই, কিন্তু কি
অসম্ভব ঠান্ডা তার নীরবতা !
তুমি নিশ্চয়ই
এত শীতল হওনি রাত্রিবেলায় !
আমি সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে
ভাবি যদি আগুনে হাত দেওয়া
হত অত্যন্ত সহজ, তাহলে তো
কবেই পরিণত হয়ে যেতাম…

