সীমা পাত্র-এর কবিতা

সীমা পাত্র-এর কবিতা

একটা করে ঝরে গেছে পাতা

একটা করে ঝরে গেছে পাতা, আমি শরীর থেকে মনের দিকে হেঁটে গেছি রোজ..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা, আমি শামুকের মতো শক্ত খোলায় ঢেকেছি নিজেকে..
গুটিয়ে নিয়েছি শুঁড়,মুখ, ভুলেছি আমার ডানা..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা, বহুদূর হেঁটে এসে আমি থেমেছি নির্জন মাঠে..
যেখানে শব্দ নেই, বিভেদ নেই..
যেখানে নিজেকে প্রমাণ করার লড়াই নেই..
সুখে দুঃখে বিরোধ নেই..
রক্ত নেই, আবেগ নেই..
এক অদ্ভূত নিঃশব্দ, নিষ্কলঙ্ক পৃথিবী..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা,
আমি মোহাচ্ছন্নের মতো তাকিয়ে দেখেছি মাছের আঁশ,পাখনা,খোলা চোখ..
পাখিদের ঠোঁট, পালক,সংসার..
বেড়াল, কুকুর, কাঠবিড়ালি, শুয়োপোকা থেকে প্রজাপতি..
মানুষ ছাড়া সবাইকেই ভীষণ ভালো লেগেছে রোজ..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা..
ফুটেছে চোখগুলো একটু একটু করে সারা শরীরে..
বন্ধ করে গেছি এক একটা জানালা..
গনগনে আলোর আগুন নিভিয়ে প্রদীপ জ্বেলেছি ঘরে ঘরে..
সেই মৃদু আলোয় শরীর মেলে বসে থেকেছি কতকাল..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা, লোকালয় থেকে দূরে সরে গেছি..
যুক্তি তর্ক ভুলে গিয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখেছি তাদের..
যারা আজও চোখ বুঝে ভরসা করতে ভোলেনি..
‘আজীবনের অন্ধবিশ্বাসী ‘দের হিংসে হতে শুরু হয়েছে ভীষন..
একটা করে ঝরে গেছে পাতা..
আরও নিবিড়ভাবে জেনেছি..
আসলে একটু শান্তি ছাড়া
আমাদের আর কিচ্ছু চাইনা।।


সলতে পোড়া গন্ধ

ভালোবাসার গরাদ থেকে বেরিয়ে আসি..
কোথাও একটা কিছু পুড়ছে..
ধোঁয়া নয়, জমাট অন্ধকার একটু ভেঙ্গে
মাঝে টিমটিমে একটা প্রদীপ..
সন্ধ্যাটোকার গায়ে অজস্র ঝাঁঝরি বেয়ে..
মাটির দেয়ালে আলোর ঝরনা..
মুখ ডুবিয়ে আবার খুঁজি..
ভালোবাসার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেও..
তোমার গন্ধ নাকে আসে আবার..
ঝিম ধরে যায়..
পুড়ে যাওয়াও এত স্নিগ্ধ হয়!
ঝিম ধরে যায়..
সলতে পোড়ার গন্ধ..
আমার সারা গায়।


আত্ম অচেতন

শরতের শেষ নাকি শেষের শরৎ!
বৃষ্টি হয়নি শেষরাতে..
অথচ ভিজে আছে ধান , ঘাস
যজ্ঞ ডুমুরের পাতা..
কুয়াশা এখনও জমে নদীর বুকে..
মাটির ওপর স্নিগ্ধ সবুজ সর..
যে গাছে সবুজ মরেছে কতকাল
সেই গাছের ডালে সহস্র পাখি..
অথচ কে যেন বলেছিল ওকে
সবুজের শেষে ‘মা’ হওয়া যায়না আর..
ও কি হেসেছিল ?
নাকি , কেঁদেছিল বুক ভাসিয়ে..
কি জানি..
ওদের খবর হাওয়ারা রাখে…

বৃষ্টি হয়নি শেষরাতে
অথচ ভিজে আছে চরাচর..
বৃষ্টিই নাকি ভেজাতে পারে শুধু
নেভাতে পারে আগুন, ক্ষত..
অথচ এখানে ঘাসের ডগায় শিশির..
কুয়াশা গলে ভিজে আছে চরাচর..
শরতের শেষ নাকি শেষের শরৎ!
তুমি দক্ষিণ দুয়ারে এখনও বৃষ্টি চেয়ে বসে..
বহুকাল পুড়েছ আগুনে , শোকে..
অথচ হিমেল হাওয়ারা জানে
কি ভীষণ কুয়াশা তোমার বুকে ।।


আক্ষেপ

বহুদিনের কাটা ছেঁড়া একফোঁটা হয়ে জমে আছে বুকে..
যা মুক্তো আসলে তাই কান্না..
ক্ষতগুলো জমে..
নদীর মোহনায় যেমন জমে গল্প ব-দ্বীপ হয়ে..
কেউ কখনো কুড়িয়ে নিয়ে যায়..
সাজায় প্রয়োজন,প্রিয়জন..
আসলে কেউ বোঝেনি..
আভরণ নয় , আমি ভীষণ আবরণ হতে চেয়েছি রোজ।

অনশ্বর অতীত

তিনশো আঠান্নটা সিঁড়ি..
অথচ পাহাড় চূড়াটা এখনও
আগের মতই দেখায়..
কুয়াশা মোড়া..
দিনক্ষণ মনে থাকেনা আর..
বহুদিন ঘুরেছি একই পথে..
রাস্তার বাঁকা পেরিয়ে..
আবার সেই খিড়কি পুকুর
ভীষণ ভিড়ের মাঝে নিথর একটা দেহ..
অথচ ..
কবেই ছেড়ে এসেছিলাম পুকুর ঘাট..

কতবার ফিরেছি তাও..
ঠিক মনে পড়েনা..
ভেঙেচুরে গেছে সব বার
সাজানো সমারোহ..
ভুলে যাওয়ার ভুল..

ঘুরপথ ছেড়েছি শেষে..
এখানে গাছের নিচে
ছায়া পড়েনা আর..
সিঁড়ির মত পাথর উঠে গেছে খাড়া..
ভীষণ ওপরে কিসের যেন প্রলোভন..

তিনশো আঠান্নটা সিঁড়ি..
অথচ এখনও নিচের কোনো উপত্যকায়..
স্পষ্ট দেখা যায়..
ভীষণ ভিড়ের মাঝে
স্পষ্ট ঠিক..
নিথর দেহ একখান।


স্বেচছা নির্বাসনে

মিথ্যে শোনার আগে মৃত্যু দিও..
সব পথ সেইখানে মেশে..
ধান আম জারুলের পরে..
গলাকাটা লাশ পড়ে থাকে পথে..
নিথর দেহ আবার নাম লেখায় নতুন খাতায়.. আবারও মিথ্যে,তবে উপড়ে নিও চোখ..
স্তন উরু যোনি ও আমার নারীত্ব নয়..
তবে বলিদান দিওনা আর..
নির্জনতা সেই ভালো..
তবে এই বেশ একা থাকা..
পথিক তুমি ফিরে যাও..
এ পথ মাড়িওনা আর..
আমার আত্মা শান্তি পাক..
এ চোখে মিথ্যে অভিনয় কেনো আর..
নির্বাসিতা নই আমি..
আজ হতে অরণ্য তোমার নির্বাসন..
তুমি জনের আড়ালে থাকো..
আমি যাই নির্জন দ্বীপে।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar

    Awesome! Its truly amazing paragraph, I have got
    much clear idea regarding from this paragraph.

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes