
সব্যসাচী সরকার -এর কবিতা
জঙ্গল
১
যদি তুমি মেঘে থাকো
যদি থাকো ঠা ঠা রোদ্দুরে,
দেখব দু’চোখ ভরে
দুপুরে,পুকুরে!
আর যদি ফিরে আসো,
যদি লেখো কথা ছিল যত,
জঙ্গলে চলে যাব,
বাঘেদের মতো।
ধরো তুমি ফিরলে না,
তেমন সন্ধেবেলা ছিলে পার্লারে—
চড়ুই পাখির কাছে
ফিরব সকালে!
২
তা হলেও শেষ কথা থাক।
তুমি যাও বহুদূর
আমি মাঝরাত
তা হলেও নেই ভেদাভেদ
তুমি হও পাঁচকান,
আমি সঙ্কেত
তা হলেও বেহিসাবি ক্ষোভ,
তোমার বৃন্ত ছুঁই,
আমি নির্লোভ।
তা হলেও এইটুকু বলি,
তুমি সেই দ্রৌপদী,
আমি কানাগলি!
৩
একটু একটু করে জঙ্গলে চলে যাচ্ছি।
আবার একটা ঝোপে
আমি খিলখিল করে হাসছি,
হাউমাউ করে কাঁদছি,
আবার আমি জলের বোতলের দিকে
তাকিয়ে থাকছি,
আবার ভাবছি,
এই আবার বাঘ আসতে পারে,
কিংবা হরিণ,
এই ভাবে চলে যাচ্ছে.
অনেকদিন চকোলেট খাইনি,
মা যদি ডেকে নিত,
ভাবতাম খাব!
৪
কোনও কথা হবে না।
ঘিরে ঘিরে নাচ,
কাচের গেলাস,
ফেসবুক পোস্ট,
উইকএন্ড গুলো আসে,
ফের চলে যায়।
রবি ঠাকুরের কাছে
কিছু উপহার,
সন্ধের দিকে যদি
থাকে গুলজার—
ভালো থাকা প্রমাণ করেছি,
নিজেকে নিজের কাছে
লুকিয়ে রেখেছি,
কী ভীষণ ভালো আছি
কী ভীষণ সংসারী,
কী দারুণ আমার পৃথিবী—
বাঘের খাঁচার দিকে
যাচ্ছিল কবি!
৫
বারণ করেছিল সব্বাই,
তবু আমি এগিয়ে গিয়েছিলাম
আগ্নেয়গিরির দিকে।
পোড়া হাত আর
ধিকিধিকি আভা,
আমাকে হাসপাতালের দিকে ডাকছে,
আমি ভাবছি যাব কি না,
কিন্তু তোমার মুখ এখনও তুমুল সক্রিয়,
যেখানে আমি আঁকছি নিজেকে
আর
নিশ্চিন্তে চলে যাচ্ছি শ্মশান পেরিয়ে…
৬
কেউ কিছু বলছে না,
সকলেই ফেসবুক,
সকলে লাজুক—
পিয়ানোয় টুংটাং,
আমি নিন্দুক।
অভিমানী মুখ তুমি,
গোপন পরিখা
তুলে ধরি, ফেলে রাখি
আগুনের শিখা
যদি তুমি বুঝে নাও,
যদি বাঁধো গান
আমার পৌষ মাস,
তুমি অঘ্রাণ!