সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

দোল

অজানা হওয়ার আগে হে নিশ্চিহ্ন পথ

ধুলো রেখে দিও, ওজোনে ওজোনে

দিশাহারা এক নাগরী নগর

খুঁজে নেবে হারানো আত্মপরিচয়!

যে পথ তোমায় ছুঁয়ে শপথ নিয়েছে বেঁচে থাকার

আলোয় আচ্ছাদিত হয়ে ভেঙে দেয় দুর্বার ঢেউ

এই তো এখন রঙের সময়

আলকাতরার অন্ধকারে মিশবে মায়াবী আবির

দুহাতে লাল। গালে লাগিয়ে বলবে, এই তো আমি!

অপেক্ষার জলে ভিজিয়ে নেব সারা শরীর

হে পথ, তুমি দেখো, এ শহরও আজ সাজবে

আবার। অচেনা হওয়ার আগে

আনাচে কানাচে, রাঙা…

দোল বলে নয়, আমরা বরাবরই

গৈরিক বসন্তের দাস দাসী…

বলা হয়নি শুধু কোনদিন, ভিজে পোশাকে

পরস্পর যেন আগুন পাখির চোখ।

কতকাল সে জাগিয়ে রেখেছে, সজাগ

গলায় লাল ঝাপটা, ঠোঁটের কোণে ছাপ।

ছিলাম, আছি আর থাকব…চিরকাল…

ধুলো বালি আর জলে…

বসন্ত

আমাদের যত পাপ, ধরে আছি

দেখো পলাশ ঝরছে কেমন।

রঙীন পরবে উড়ছে ধিতান বোল

এ দূরত্ব আসলে কিছুই নয়

আত্মারা এক হলে এক ডুবে সাগর পারাপার

যতটা সময় আমাকে দিয়েছ

একটা পৃথিবী জন্ম নিয়েছে জেনো

অদৃশ্য, আত্মহারা, সুখী।

দুঃখ সেখানে পরস্পরকে চেনার পথ।

কত বার বলেছি তবু শোনোনি সেসব কথা

আমারো মনে ছিল না পরে।

অভিযোগ বড়ো ক্ষণস্থায়ী না পাওয়ার কাছে

এই যে হঠাৎ কোকিলের ডাক,

জানলা দিয়ে মন চলে যায় অস্থির,

খোলা আকাশ…

তোমার আঙুল

জিভ দিয়ে আলতো করে চাটো কল্পনার শিশির। বলো, ছুঁয়েছ…

চোখ থেকে জল ছাড়া আর কিই বা পড়তে পারে?

ফেরা

ব্যথার কবরে মাথা গুঁজে আছে ফুল

কান্না মাখা ভোরের জল ফুপিয়ে ওঠে প্রিয় সৎকারে

এক নিরীহ খঞ্জন উদাস চোখে চেয়ে থাকে

পাথরের ওপর তার অস্থির মন তবু

স্থির হয়ে আছে যেন নিথর কেমন…

যেভাবে বইছে নদী জল

মোহনায় মাছেদের আনাগোনা

চুপিচুপি ঢেউ এসে ভিজিয়ে দেয় আলো।

এত ব্যথা কোথায় যেন ভাসতে ভাসতে

সাগর থেকে সাগর…

পাখির ডানার মতো, দুহাত খোলা আকাশ।

খঞ্জনের জল চোখে ফুলেদের মৃত্যুমালা

তবুও কোথাও চিকচিক করে

ডুবন্ত সূর্যের ডাক, যে তাকে বারবার ফিরে

আসতে বলে চিকন নদীর ধারে,

একখানি ঘর রাখা আছে দুটি পাথরের ফাঁকে

খোলা জানলার মতো…

তবু

কত আলো ছায়া ঘেরা তবু

নির্জন হু হু করে মাঠ

কোথাও কি এক ছিটেফোঁটা

নেই সেই বৃষ্টির ছাঁট?

নদী যেন সুর হারা বাঁশি

আঁকা বাঁকা ঘন বন পথ

আচমকা মিলেমিশে গেল

বুকজলে যেমন আঘাত।

এতদিন কত অভিযোগ

কেন এত মুখ ফেরাফেরি?

সবকিছু ছেড়ে গেলে ভাবো

সময়ের পায়ে আজ বেড়ি?

বাধা আজ ঘাটের কোণায়

দুটো ডিঙি দুলছে একাই

নদী তোর পথ কতদূর?

শোক বুঝি করে ভাঙচুর?

নেই কেন বৃষ্টির ছাঁট

দুইকূল, হু হু করে মাঠ

কত আলো জমে ওঠা ভিড়

কালো জল বয়ে চলে ধীর…


একটা কালো রাস্তা

বড়ো সাধারণ ভেবেছি আঁধার

একটা কালো রাস্তা, ক্রমশ ঢুকতে ঢুকতে

ভবিষ্যত হয়ে দাঁড়ায়…

পরিত্যক্ত কুয়োপাড়ে নারকোলের ছোবড়াগুলো

জড়ো হয়ে আছে ভূতুড়ে গল্পের মতো

আমিও অন্ধকারে সেইসব মুখ দেখি

যারা অমাবস্যার রাতে ঝাঁপ দিয়েছিল কুয়োয়।

বেশ বুঝতে পারি আজকাল

কালো রাস্তাটা গুলিয়ে দিচ্ছে মাথার ভেতর।

যতবার দরজা খুলতে যাই, কেউ যেন হাত টেনে

ধরে পেছন থেকে।

জোর করে ঠোঁটে চুমু খেতে চায়।

অথচ একদিন আমি এসব চেয়েছিলাম, ভালোবেসে।

তবে আজ কষ্ট হয় কেন?

কোন মতে ছাড়িয়ে আলোর নিচে ধরি

চাকা চাকা ছোপ সারা গায়ে, গিরগিটির মতো রঙ বদলায়।

থলথলে শরীরটা দলা পাকিয়ে গিলে নিতে ইচ্ছে করে ।

কালো রাস্তাটা ছুটতে ছুটতে

পা দুটো চেপে ধরে হঠাৎ।

এক পা, দুপা। তারপর থেমে যাই শেষে।

কোথায় যেন হারিয়ে যায় আলো…

কালোর ভেতর আশ্রয় নিতে নিতে হয়ত একদিন

এভাবেই চলে যাব অন্ধকারে

কাটা মাথা, চাপ চাপ রক্ত আর একবুক তৃষ্ণা নিয়ে

পথটুকু চেয়ে থাকবে পরের শিকারের আশায়…


থমকে ছিলাম যদি

চলতে চলতে থমকে ছিলাম যদি

আলোর উঠোন ভরে ছিল সাদাফুলে

কতকি যেমন একলা থাকাই ভালো

আনমনে কেন কেয়াবন ওঠে দুলে?

শুনছ কি কেয়া, তোমার ভেতর কেন

পাতাগুলো করে শনশন ছটফট?

তুমিও কি তার পায়ের শব্দ পাও?

সন্ধে আলোয় সেজে ওঠো ঝটপট?

দেখেছি যেদিন নদীর মাঝেতে তুমি

একা এক দ্বীপ ফুলে ফুলে ভরা সাঁঝে

চোখের নাভিতে আমারো জন্ম ছিল

অস্ফুটে তার শূন্য কন্ঠ বাজে!

দাঁড়ের শব্দ মিলেমিশে একাকার

চাপা পড়ে তার অনন্ত শীৎকার

না ছিলে তবু তো, আছো এ আকাশ জুড়ে

রক্ত মাংস ছাই হয়ে যায় পুড়ে!

থমকে ছিলাম থামব বলেই যদি

বৃষ্টি আবার ভরিয়ে দিয়েছে নদী…

২০ জানুয়ারির পর

এতগুলো মাস…

কিভাবে যে কাটিয়েছি

বিশেষত মার্চের আলতো সন্ধেগুলো…

শরীর থেকে ম ম করত ভালোবাসা

কালো কালো ভ্রমর পলাশের চারধারে

লাল হয়ে উঠত আকাশ, অথচ কিচ্ছু করার নেই!

ম্যাটম্যাটে ফিকে হয়ে আসা মুখের ওপর

শুধু মেখে চলেছি রঙবেরঙের অভিনয়।

স্বাদহীন তিতকুটে মনে গরম আলপিন

তবু মুখে রা টি নেই…

মাঝে মাঝে অশান্তি করেছি তুমুল।

কেন যে করেছি!

দুষেছি তারপর, বারবার

আয়নার কাছে মুখ নীচু করে দাঁড়িয়েছি এসে।

কেউ নেই।

আজো নেই যেমন…অথচ

ঝলমলে একটা আলোর শহর

কত ভিড়

কত কথা

আমি শুধু হারিয়ে যাচ্ছি নিজেরই ভেতর তৈরী হওয়া

এক গোপন সুড়ঙ্গে!

এখন আর বিব্রত নই

এখন আর বিব্রত নই

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।

কি কঠিন দুটোদিন

নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ!

তারপর প্রলেপ বিস্তর। নিজেকে

বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত চোখে জেগে থাকা চাঁদ

কখন যে কান্নারা গড়িয়ে আসে,

নিঃশব্দে রেখে যায় তোমায়.…

টের পাও না।

কত কাটাকুটির পর কিছু ঘুটি সাজিয়ে নিয়েছি আবার।

দাবার চালে বাজিমাৎ। এই তো কেমন

আসছে দেখো সাদা সাদা রাজহাঁস,

একদল।

কত জলকেলি, জ্যোৎস্না খুবলে খাওয়া।

এ সবই বরং থাক। তোমায় চাই না আর।

দেখা হলে, বুঝিয়ে দেব এবার!

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes