মায়া অ্যাঞ্জেলো-র কবিতা । অনুবাদ- প্রগতি বৈরাগী একতারা

মায়া অ্যাঞ্জেলো-র কবিতা । অনুবাদ- প্রগতি বৈরাগী একতারা

মায়া অ্যাঞ্জেলো(১৯২৮-২০১৪), বিংশশতাব্দীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য কবি, গায়িকা এবং সিভিল রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট। প্রথম যৌবনের চড়াইউৎরাই কেটেছে রান্নার কাজ করে, যৌনকর্মী, নাইটক্লাবে নর্তকী হিসেবে। উপদ্রুত শৈশবে ধর্ষণের শিকার বালিকাটি ক্লিনিক্যালি মূক ছিলেন দীর্ঘ পাঁচবছর। অনেক এবড়োখেবড়ো পার হয়ে, মধ্যতিরিশে উপশম খুঁজে পেয়েছিলেন কবিতায়। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত প্রথম আত্মজীবনী ‘I Know Why the Caged Bird Sings” তাঁর লেখাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি দেয়। সারাজীবন বলে গেছেন মেয়েদের, মানুষের সমানাধিকারের কথা।

একা

কাল রাতে, যখন আমি শুয়ে-শুয়ে ভাবছিলাম
তেমন একটা বাড়িতে নিজেকে কী করে মানিয়ে নেব
যেখানে জল নিজেই তৃষ্ণার্ত নয়
এবং রুটিও পাথর হয়ে যায়নি
অবশেষে আমি একটা সিদ্ধান্তে এলাম
(এবং আমি নিজেকে ভুল মনে করি না)
কেউই এখানে একা মানিয়ে নিতে পারবে না

একা, সবাই একা
নিজেকে-খোয়ানো। কিন্তু কেউই
এখানে একা মানিয়ে নিতে পারবে না

এমন কিছু কোটিপতি আছেন
যাঁরা তাঁদের টাকা ‘ব্যবহার’ করতে পারেন না
তাঁদের বউ-রা আত্মার মতো ঘুরে-ঘুরে বেড়ায়
তাঁদের সন্তানেরা নীলাভ গান গায়
পাথুরে হৃদয় দেখানো জন্য
তাঁদের অবশ্য নামিদামি ডাক্তারের অভাব নেই
কিন্তু, নাহ্‌, কেউই এখানে
একা মানিয়ে নিতে পারবে না

একা, সবাই একা
নিজেকে-খোয়ানো। কিন্তু কেউই
এখানে একা মানিয়ে নিতে পারবে না

এখন, যদি মন দিয়ে শুনতে চান
যা জানি, বলতে পারি –
ঝোড়ো মেঘ জড়ো হতে শুরু করেছে
হাওয়াও জোরে বইতে প্রস্তুত
মানুষের ইঁদুরদৌড় অবশেষে ধুঁকছে
এবং আমি সেই চাপা গোঙানি শুনতে পাচ্ছি
কারণ কেউই এখানে
একা মানিয়ে নিতে পারবে না

একা, সবাই একা
নিজেকে-খোয়ানো। কিন্তু কেউই
এখানে একা মানিয়ে নিতে পারবে না

তবুও প্রাণ জাগে

আমায় তুমি ঠেলতে পারো ইতিহাসেও চাইলে
তিক্ত এবং জটিল মিথ্যে দিয়ে
পিষতে পারো নোংরা কোথাও, কিন্তু দেখে নিও
ধুলোর মতোই ফুটব প্রাণ বিছিয়ে

আমার ফুর্তি তোমায় বুঝি বিষণ্ণতা দিচ্ছে?
আবছা কেন জড়িয়ে আছ আত্ম?
কারণ আমার হাঁটার মধ্যে গর্ব করার ভঙ্গি
পারত, হ্যাঁ, সে উথলোতেও তো পারত

সূর্য এবং চাঁদ যেরকম অবশ্যতই উঠবে
জোয়ার-ভাটাও সময় মেনেই প্রস্তুত
প্রাত্যহিকের আশার মতো, বাড়তে থাকা সুন্দর
উঠব আমি, ফুটব আমি অস্ফুট

আমার মধ্যে ভাঙন দেখতে ভালোইবাসতে, তাই না?
নোয়ানো ঘাড়, চোখ-নামানো, ধস্ত –
জলের মতো ঝরতে থাকা, খসতে থাকা ভরসা
কান্না এবং ঘুণ-ধরানো কষ্ট?

আমার অহংকারের ভঙ্গি – তোমায় কি রাগ হচ্ছে
দিনকেদিন যা বাড়াচ্ছ মন মুচড়ে
কারণ আমার হাসির মধ্যে সোনার খনির ফুলকি –
খুঁড়ছি অতীত-অভিজ্ঞতার সূত্রে

আমায় তুমি বিদ্ধ করো, করতে পারো শব্দে
দেখার ধাঁচে ছিঁড়তে পারো টুকরোয়
ঘেন্না দিয়ে মারতে পারো, হাওয়ার মতো উঠব
ফুলের মতো ফুটব আমিই ধুতরো

আমার যৌনভঙ্গিটি কি বিমর্ষতা দিচ্ছে
অবাক, নতুন হচ্ছে তোমার কাছে?
ইন্দ্রিয়ে কি আগুন নিয়ে হাসছি আমি নাচছি
তোমার কি আর অবাক হওয়ার আছে

ইতিহাসের লজ্জাঘেরা চোরকুঠুরি ছেড়ে
আমি উঠব
ব্যথায় ঢাকা অতীত-দিনের পোড়াকপাল কেড়ে
আমি উঠব
আমিই কালো সমুদ্র, যা তুর্কি এবং প্রাণ
ঢেউ-এর মতো ছিটকে নাহয় উঠুক আমার গান

ভয়ের এবং কুঁকড়ে থাকার রাত্তির টপকিয়ে
আমি উঠব
স্বচ্ছ দিনের প্রগলভতা এবং স্বস্তি নিয়ে
আমি উঠব
পূর্বপুরুষদের পাঠানো উপহারের স্পর্ধায়
আমি উঠব
আমিই ক্রীতদাসের স্বপ্ন, আশা, আর যা মন চায় –
আমি উঠব

আমি জাগব

আমি উঠব

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    SOURAV MAJUMDER 3 years

    বাহ ! ভাল লাগলো দুটি অনুবাদ-কবিতাই । শুভেচ্ছা রইল ।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes