পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতা

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতা

সাতটি কবিতা

একলা

বইয়ের পাতায় গাল ডুবিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলে তুমি,
সেই পাতা থেকেই নানান পরীক্ষায় উঠে এসেছিল
দুর্দান্ত জলদস্যুর মতো অনেকগুলি প্রশ্ন
বহু সমুদ্র-শাসন তাদের রক্তে,তারা রুদ্ধশ্বাস এক
অ্যাডভেঞ্চারের মধ্য দিয়ে ঘাস ও গবাদীর মাঝে হারানো
ঈশ্বরের ক্রোমোজোম খুঁজে পেয়ে উল্লসিত হয়েছিল

বইয়ের পৃষ্ঠাটিকে তোমার দেয়া সেই ঘুমঘোরের চুম্বন
রয়ে গেল অদেখা ডুবো-পাহাড় হয়েই
সেখানে স্মৃতি ধারণীয় ঝড় নিশিকান্ত জলের ঘূর্ণি –
স্বখাত জীবনে আরেকবার আমি অনেক বড়ো নাবিক
হতে চাইলাম, কেননা, ঝড়কে কখনো দেখিনি আমি
দেখি শুধু নগ্নতায় নিমগ্ন হয়ে থাকা একটি মানুষের
শীতার্ত অনীহাকে

প্রসাদ

অগ্নিশর্মা নয়, কোন্‌ এক অগ্নিশ্বর চোখে
দিয়ে গেল চকমকি আলো। দেখলাম তুমি
আছো জ্বলন্ত উনুনের ফাগুনের পাশে।
ঘেঁটুফুলের গুচ্ছের মতো ফুটন্ত সাদা ভাতের সম্মুখে।
আজ শীতার্ত অনীহায় স্নান করে আমার স্মরণে এলো
প্রথম প্রেমের সৌরদিন, আগেকার দিনের সেইসব
ভিক্ষা-বাৎসল্য… ভোলা-শিশু এসে গড়াগড়ি খেলো
প্রাণশক্তিহীন সমর্পণে। পিণ্ডের মতো তারে উঠোনে দিলে আছাড়।
তার হিলিয়মগুলি হাইড্রোজেনের পরমাণুগুলি ভেঙে ভেঙে গেল।
চিরুনির দাঁড়ে চূর্ণ হলো চুল।
শিথিলতা দিয়ে সম্মোহিত করে প্রীতিলতা দিয়ে বেঁধে
রইলে না আর অকুস্থলে; তপস্বিনী, স্রোতস্বিনী,
তোমার আত্মপ্রসাদ হাঁড়িতে রইলো আঢাকা…

না

এইভাবে কাকলি ও কূজনের জন্ম দিয়ে বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়ে যায়
তবু অপলাপ নয় আলাপই রয়েছে এখনো; যখন যে ঘরে
রেখেছ পা, সঙ্গে এসেছে সারল্যের প্রতিসরণ; বেজে উঠেছে
যোগ্যতমা বীণা। চাঁদের গ্রামে জেগে ওঠা মুক্তাঞ্চল, সেখানেও
চেয়েছে সবাই মৌল-ধানের ফলন, চায়নি তো বলিপ্রদত্তের
গলা বেয়ে ফিনকি-দেয়া ধানশীষ…
বিদেহী জলের আয়না তুমি ভেঙে দিলে সেই সব তামসিক মুখ
আর দেখবে না বলে। অতি লৌকিক কাচের টুকরোগুলি ছড়িয়ে
রইলো পৃথিবীময়। যেখানে যা পতিত হলো হয়ত পীঠস্থান হলো
না কোথাও। তবু দীর্ঘ দিবস রজনী ধরে তুমি জানলে, ইচ্ছাময়ী
তারার ভেতর পরমানুরাও এইভাবে ভাঙে। আলো তাপ ও লাল
টকটকে জবাফুলের উন্মেষ ঘটে। জবার পুষ্প চয়ণ হেতু শাক্তরা
আসে ঊষর ঊষাকালে, যখন তুমি খোলা চুলে অস্মিতার নামে
পিণ্ড দানে ব্যাপৃত থাকো…

কিশোরী ভৈরবী, তার অশ্রু

দিনান্তে ফুটেছিল আমার মেয়েবেলা, ঘোর জবা-কুঙ্কুমে !
হে সূর্য আমায় দেখো, খুব যদি দেরি হয়ে যায়, তখনো
যেন বৈজয়ন্তীখানি আলো হয়ে থাকে। যেন, তোতলানো
অজুহাতের প্রয়োজন না হয়। শেষ প্রহরের ধ্যানে উপচে
পড়েছি দেহভাণ্ড হতে। ঘোরের ভেতর একখানি ঘর
অহরহ ভাসে, মাটির কোঠা, অনিন্দ্য অলিন্দ সব।
কালো রাতে হাঁটছে একটি গাছ। কৃষ্ণনাগরিক।
মাথায় অনেক শকুন। তারই তলে গর্ভগৃহ।
কেউই যখন চিনলো নাকো যথার্থ এই অঙ্গুরীয়
আমি তখন তাহার আশ্রিতা। সে আমারই গর্ব-গৃহ,
সে-ই আমার শকুন-তলা

এমনও হয়, প্রমোদ গেলাসখানি, তার কাচের
দেয়াল ধরে থেমে আছে নদীমাতৃক অশ্রু-মুখ
তারে দেখে ধ্যান ভেঙে যায়…

যে মানুষের করোটিতে করেছিনু মাধ্বী পান
খুলে যায় তার মুখ হতে মহা-বরষার মুখোশ…

অন্ধকারবর্ষ

বিভ্রান্ত রোদ পাশ ফিরে ফিরে চলে যায় নক্ষত্রের নখের আগায়
কত রকমের রবির কর ওবেলা ওখানে, কার অবদান সেথা কে
চিনতে পারে? সকলের ইচ্ছা ও প্রচ্ছায়া কি মেনে নেন চির অচেনা
ব্রহ্মান্ড যিনি? জানি না তার নদ নদী, সংহিতা সহজপাঠ…
অনেক নিরাকাশ ও নিরাশ্রয় দুলিয়ে বেলা শেষে যে-বাহুলতা চেপে
ধরে কাঁধ, সাঁঝবাতি ছাপিয়ে যে-অযান্ত্রিক গো-শকট ছায়া ফেলে
মহাবিষুবের মতো, আলোকবর্ষ দূরে তাদের অস্মিতার পূর্ণগ্রাস
দেখতে দেখতে চোখের ওপর রাখা ফটোগ্রাফিক প্লেট কখন যেন
দূরত্বের ব্যঞ্জনা ছেড়ে অন্ধকারবর্ষ মাত্র দূরে, তুলসী তলার খুব কাছে
ডানা ভেঙে পড়ে থাকা দীপশিখাটিকে দেখতে থাকে…

পাতলা ফুঁ-য়ে দোলা দিলাম

পাতলা ফুঁ-য়ে দোলা দিলাম নিবিড় উপসর্গটিকে
কুয়াশা-মাখা পালক অনেক দ্বিধার উপনদী নিয়ে
আস্তে আস্তে নেমে এলো দুটি ভুরুর মোহনায়…
গাল-ফুলানো হঠাৎ হাওয়ায় আবার গেল ঊর্ধ্বে সেটি…
আবারও সেই বিরামখানা, অতীত-পোড়া তামাক-ধোঁয়ার
জটিলতম বনজঙ্গল; সেখানে বসে আরো একবার মন্থর মদির
তার নৈকট্য-সাধনা…

এই খেলা চলল, চলতে থাকল…

এতো দীর্ঘ জিতেন্দ্রিয় বিরাম আমার আর ভালো লাগে না।
এখন, অণুজীবের দেহ টানার ক্লেশ ছাপিয়ে দেখতে চাই,
তার অভ্যন্তরের পারমানবিক কষ্টের জগৎ…
অণু ভেঙে আরো ছোট হয়ে গেলেও ভেতরটা বেড়ে গেল
লক্ষ লক্ষ গুণ… কিছু পরমাণু পড়লো ছিটকে বাইরে
ঘাসের ওপর ঝকঝকে মোহরের মতো যাদের অসম সাহস…

আমি তাদের নিয়ে জ্ঞানত বিস্ফোরণ কল্পনা করি…


সকল নেশার বৃষ্টিবহুল পানীয়

যে-খনিগর্ভ আকাশে ভাসে, অমিত বারান্দা জুড়ে যার
মরণাপন্ন উনুন…বাষ্প ধোঁয়া অগ্নি-জল কিছুই সাংসারিক
নয় তাতে। মহাজাগতিক বর্জ্য হয়ে ভাসে তাদের সুদূরতম
চরিতামৃত

ডানা খুলে রেখে কখনো কোনো সৌরবন্ধু লুটিয়ে পড়ে যদি
শারীরিক জীবদ্দশায় আমাদের টিনের চালে…
যদি স্রোতে ভাসে মমির অবচেতন? জানা যায় নতুন একটি
কথাসরিৎসাগরের সন্ধান?…
মেঘ চরাবার নামে বহুদূর এসে এইসব জৈববাণী দৈববাণী হয়ে যায়
নূন্যতম দ্রোহে রাজধানি ফাঁকা হয়ে রাখাল-জীবন সত্য হয়ে যায়!

এই নূন্যের চর্চাই ভাষার স্তোত্র পেরিয়ে, অঘোরী সাধুর মতো মেঘেদের
সকল নেশার বৃষ্টিবহুল পানীয় উল্টিয়ে, পড়ন্ত বেলায়, গৃহকোণের
প্রথাগত শূন্যতাটিকে তথাগত করে তোলে…

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes