
ঈশিতা ভাদুড়ী-র গুচ্ছ কবিতা
ধর্মাবতার?
নাহয় আস্তরণের ওপর থেকেই ওরা
বৃন্তকে করেছে নিষ্পেষণ,
নাহয় হাতে রেখেছে আলগা মোড়ক ওরা,
এসব কী তা’বলে নষ্ট তছনছ গদ্য নয়?
এইসব স্পর্শে কালিমা নেই, ধর্মাবতার?
সরল সবুজ ঘাসে ছুঁয়ে যায় যে অন্ধকার-ভাষা,
সেইসব কালো কালো রঙ নিপীড়ন নয়?
নিগ্রহ কাকে বলে ধর্মাবতার?
—-
কাটাছেঁড়া
প্রথম স্তবকে অনেকখানি ধোঁয়াশা ছিল,
নক্ষত্র খসে পড়ার কাহিনী।
প্রথম স্তবকে ছিল ডানাকাটা পাখির কথা।
দ্বিতীয় স্তবকে চোরাস্রোতে আটকে থাকা
অক্ষরেরা ছিল, গর্ভপাতের কথা।
দ্বিতীয় স্তবকে ছিল ক্ষতবিক্ষত রিংটোন।
পরবর্তী স্তবকগুলিতে স্থবিরতা ও অস্পষ্ট যাপন,
শব্দহীন কাটাছেঁড়া…
—-
ভাইরাস
কাচঘর থেকে বার হয়ে পড়ছে ওরা,
ড্যাশ হাইফেন সকলে একসঙ্গে।
আর, দুঃখিত হাসিতে ভরে উঠল মাঠ।
অনিবার্য অন্ধকারে যে হতাশা
ঘুরছে আজ, তার নামই ভাইরাস।
—-
অবসাদের কবিতা
১
সুনামি নয়। ভূমিকম্পও নয়।
আলোড়ন চাই।
একটা ভয়ংকর বিশুদ্ধ ভাইব্রেশন।
অথবা
পাহাড়ের নিচে উত্তাল ঝড়।
ঘুম ভেঙে যখন উঠে দাঁড়াবে মানুষ,
তখন স্বপ্নের গ্যাস-বেলুন ফেটে যাবে
চৌচির। ঠিক তখনই।
২
মুহূর্তগুলির গায়ে শর্তহীন নিস্তব্ধতা।
দেওয়ালে সমুদ্রোচ্ছল কাহিনির কোনো
পরিচ্ছদই উদ্ধৃত নেই,
এমন কী মৃত মাছেদের কোনো
রঙিন বর্ণনাও নয়।
জলরেখা ভেঙে ভেঙে শীতার্ত ও শীর্ণ যাপন
গূঢ় অক্ষরে শুধু।
না কোনো ভালোবাসা, না কোনো মায়া।
৩
নিজের মমি নিজেকে পাহারা দিতে হয় যখন,
তখন শূন্যতা অথবা বিষাদ বলে
কোনো শব্দই সৃষ্ট হয় না।
তখন ফুসফুস থেকে যে নিঃশ্বাস খসে পড়ে,
সেখান থেকে যে শব্দ ঘোষিত হয়
তাকে অবসাদ বলে।
কুহকজাল
উত্তরণের কথা যারা বলে তারা জানে
উত্তরণ বলে কোনো শব্দই আদপে নেই।
বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপে অথবা কোনো হ্রদে
যে জ্যোৎস্না এসে পড়ে সেগুলো
সবই কুহকজাল।
কোনো না কোনো সময় সেগুলো
সবই কান্নায় ভেঙে পড়ে।
সেগুলো সবই ঢুকে পড়ে শূন্যতার গহবরে।
কেননা নির্জনতার মধ্যে, বিপন্নতার মধ্যে
মৃত নদীই বয়ে যায়।
কেননা আলো বলে কিছু নেই,
ছিলনা কখনও।
ঈশিতা দি অনেকদিন পর আপনার মধ্যেকার জীবিজ নদীর সাক্ষাত্ পেলাম।ভালো লাগলো সবকটি কবিতা।মন ভরে গেল। এজন্য আবহমান দপ্তরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ