
আভা সরকার মণ্ডল-এর কবিতা
মধ্য রাতের আকাশ
এক বেসামাল উল্কা ঝড়ের কাছে
দুমড়ানো মোচড়ানো আঘাতের হুমকি পেয়ে
ভীতসন্ত্রস্ত পথ, পাথরের আচ্ছাদন খোঁজে–
ঝলসানো মেঘেরা তড়িঘড়ি
শারীরিক কষ্ট লুকিয়ে ফ্যালে নদীর বুকে ।
অত্যধিক ঠান্ডায় সহ্য ক্ষমতা লোপ পেলে
তরল ও কঠিন হয়ে যায় একসময় —-
পড়ে থাকে সেই বরফের সঙ্গে মোকাবেলা
সূর্যাস্তের খবর পেয়ে মুহূর্তকে ঘিরে ধরে তৃতীয়া তিথি
পথের কাছে গল্প শুনতে চেয়ে
বুকের মধ্যে নেমে আসে মধ্য রাতের আকাশ
একে একে রচিত হতে থাকে মহাভারতে না লেখা অধ্যায়গুলো !
************
পিপাসা
১)
ঘন মেঘের আস্তরণে দৃষ্টি গেলে পরিস্ফুট হয় আগামীর আলাপ
জল পড়ে …জল পড়ে …
নাড়ী ছেঁড়া টুপটাপ গন্ধে জেগে যায় পাড়া
জন্মকাল থেকেই সমস্ত রকম পিপাসায়
কান্নার বীজ সুপ্ত থাকে…
২)
আগুন তেষ্টায় লক লক করে জিভ
বনেদি মেদুরতায় ভিজে থাকে ঝাউ পাতার অবকাশ
শুধু পুড়ে মরার জন্যই
এত পিপাসা বুকে পুষে পর হয়ে যায় যৌবন
ছাইয়ের স্তুপে লজ্জায় মাথা গুঁজে পড়ে থাকে অপেক্ষার লাশ—
৩)
বিরহের বৈদিক উঠোন জুড়ে
পাক খায় পিপাসার পুরনো সলতে
দৈহিক নয়– আত্মিক সম্পর্কে —
নিবৃত্তি নয়—নির্বাণ নেমে আসে —- আগুন রঙে
জন্মান্তরের খিদে পরম নির্মমতায় দাহ হতে দেখি নিজের চিতায় !
৪)
গলা শুকানোর নহবত এলে
শুধু জলের স্পর্শই ভালো লাগে
পঞ্চব্যঞ্জনে থালা সাজিয়ে
পিপাসার্ত চলে যায় এক ঢোক জলের কাছে
অন্নবস্ত্র বাসস্থানের মত পিপাসার নিবৃত্তিকে ও
মৌলিক অধিকারের আওতায় আনার
দাবি নিয়ে !
৫)
তোর দুচোখে পিপাসা ভর করলে আহ্লাদিত হয় চরাচর
উন্মত্ত হয় ঠোঁটের প্রান্তরেখা—
উত্তপ্ত হয় অনন্ত তৃষা
ভরা কোটালের গন্ধ পেয়ে
আরও একবার
শিহরণে জ্বলে ওঠে উদগ্ৰ বাসনা !