
অরুণাভ সরকার-এর কবিতাগুচ্ছ
পুরোনো পৃথিবী
প্রাচীন শহর
অমর কাহিনি সব নিরীক্ষণ করি
কিছু দূর থেকে ।
একদা স্বদেশ আজ প্রবাসের প্রায়
তোমার নিশ্চল মুখে মিশে যায় ঘটনা সমূহ
প্রাচীন শহর দেখি অনেক অচেনা
নিরুদ্দেশে চলি
উদ্দেশ্য বিহীন
অবয়বের ধারণা ভেঙে পড়ে
কামনা যা ছিল ভুলে যেতে চাই
এসব কি চিত্রকলা ?
ভ্রমে থাকি এ বিভ্রম জীবন আমার
ভেবে দেখো
আমার চুম্বন আজও লেগে আছে তোমার শরীরে
স্বেদ তুমি আস্বাদ করেছ —একদিন
মনে করি সেইসব দিন
কীভাবে বিস্মৃত হওয়া যায়!
ভেবে দেখো আমি তো পারি না কোনভাবে
আমাকে ভুলো না এ-জীবনে
অশ্রুসিক্ত সমস্ত মুখশ্রী
মৃত্যুর অপেক্ষা মাত্র
আমার ঠাকুর্দা এই শহরে থাকতেন। ভোরের গঙ্গা স্নান , কীর্তন, রাস্তা ধোয়ার জল নিত্যসঙ্গী
মনে পড়ে। কোলাহল মুখরতা থেকে পিছনে ফিরি অবিস্মৃতি এক ভয়ংকর রোগ ক্রমাগত বুঝছি।
ভারসাম্যহীনতার দিকে হেঁটে যেতেযেতে ট্রামের ঘন্টাধ্বনি শুনি, পদছা্প আশ্রয় মনে হয়—পদচিহ্ন,
আমাদের বেঁচে থাকা মৃত্যুর অপেক্ষা মাত্র একথা স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে, এইবার অন্তত কিছু বল –
প্রতীক্ষায় আছি। স্বপ্ন দেখেছি রাতে ,ঠিক রাতে নয় ভোররাতে—স্তন।এভাবে সবকিছু গুলিয়ে
যায়নিকখনও, এক লহমায় এতকথা বলিনি কখনও।বাচালতাকে ভয় পাচ্ছি
এখন, সংশয়ে সংশয়ে অতিবাহিত করি মুহূর্তগুলি। ক্ষণিক শব্দটির এত গুরুত্ব বুঝিনি কোনোদিন।
বিমূর্ততা থেকে দেখি ছবিগুলি—সত্য মনে হয়। সমস্ত বর্ণ দিয়ে সময়সকল বোঝার চেষ্টা
করি, হয় না কোনোভাবে —এখনও নগরের ছায়ায় তোমার মুখ অনুভূত হয় স্পষ্ট-অস্পষ্ট
পুরোনো পৃথিবী—
এই আবর্তন
সব কিছু আজ
এভাবে অচল থাকা যায়
বুঝিনি কখনও
দাহনের ঘটনা সকল
মনে পড়ে অধুনা দূরত্ব
থেকে দেখি পুরোনো পৃথিবী—
আমাদের একদিন ছিল
চল সবকিছু বলে যাই
অন্তত এবার…
হেমন্তের শেষ
কীভাবে জানাব এইসব
সেই পিয়ানোর কথা মনে পড়ে আজও
ওই ঘর খাট আর মনে পড়ে, নরম বিছানা
হেমন্তের শেষ, শীত , বসন্তের প্রতীক্ষায় থাকি
শরীরের কথাগুলো, হৃদয়ের কথা ফিরে আসে
আমাদের আবাসে , আশ্রয়ে…
শুধু তুমি অনুমতি দিলে শুরু করি
আরও একবার…