
সুবীর সরকার-এর দীর্ঘ কবিতা
ফ্যামিলি অ্যালবাম
সারি সারি পুতুল নেমে আসছে।
দূর থেকে শোনা যায় কামানের শব্দ।
দংশন শেষে ফিরে যাওয়া সাপ
তোমাকে দেখার আগে প্রদক্ষিণ করি আস্ত
শহর
রুটিতে জেলি মেশাও।
গমখেত ভেসে যায়,ফেটে যাওয়া জলের
পাইপ
সূর্যাস্তের আলোয় কেবল মায়া খুঁজি।
যারা জ্যোৎস্নাশিকারে বেরোয়
যারা সারারাত গান গায়
তাদের দিকে তাক করে রাখা হয় বন্দুক
নজরমিনার থেকে পাখি দেখি
পাখির ডানার নিচে নির্মিত ছায়ায় বিশ্রামাগার
মেইন রোড নয়,বাইপাস পছন্দ আমার
শীতকাল মানে ঘন কুয়াশা
শীতকাল মানে বাদামি রঙের তাঁবু
যে নদীতে ডিঙি ভাসে।
যে নদীতে মিশে যায় বাজনার শব্দ।
সর্দি কাশি সারাতে ব্যবহৃত হয় সেই নদীর
জল
বিষন্ন বিকেলে ফ্যামিলি অ্যালবাম খুলে বসি
মেজকাকু নেমে আসছেন গাড়িবারান্দায়
মেজকাকুর দুই পকেটে কাগজের নৌকা
বাবাকে দেখলাম একজন শিকারির সাথে দেখা
করতে যাচ্ছেন
মা এঁকেই চলেছেন মামাবাড়ির ছবি।
এভাবে হয় না তবুও ব্রত ও পার্বণ থেকে সরে
আসতে থাকে গান
স্মৃতি থেকে খুব কাতরতা জাগলে
কিংবা হাঁস মুরগির খামারে হাওয়া ঢুকে পড়লে
টুপটাপ খসে পড়তে শুরু করে পুরোন গল্পরা
ঠাকুমার মুখে শোনা সেই পুরোন বাঘ ডাকতে শুরু
করলে
দেখি ডাকাতমারির চরে আটকে পড়া সেই
সওদাগরের নাও
কিন্তু আমার কাছে তো হিন্দি সিনেমার কোন
ভিলেনের ফোন নং নেই!
জোত ও জমির গল্প আছে।
মুড়িভাজা ও বিকেলের স্মৃতি আছে।
বেড়ালের চোখ লুকিয়ে দেখছে সবকিছু
থাবায় শীত,থাবায় শুন্যতা।
জমায়েতে ঢুকে পড়ছে মুখোশ।
লং জাম্পের মাঠে তামাকপাতার গন্ধ
স্মারক হিসেবে জমিয়ে রাখি
গরুর গাড়ির চাকা,লন্ঠন ও কচুপাতার
মাথাল
বালিস থেকে মাথা সরে গেলে
লিখতে শুরু করি ভাঙ্গা স্বপ্নের কথা।
লুডু খেলতে খেলতেই মার্বেলের প্রেমে পড়ে
গেলাম
মাটিতে মাদুর পেতে বসে থাকি।
পুতুলের মাঠ থেকে ভেসে আসে ডেটলের
গন্ধ।
সুবীর সরকারের দীর্ঘ কবিতা পড়ার রেশ থেকে যাবে অনেকক্ষন।