
সোমা দত্ত-র কবিতাগুচ্ছ
ধৌতি
এতবধি নিরন্তর যন্ত্রণার পর
যতদূর জানা গেছে– দোষ তার ছিল
বুকের কাপড় লন্ডভন্ড, বিক্ষুব্ধ…
ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের গুপ্তরোগ,
মুহুর্মুহু কুসুমিত–
জ্যোৎস্নার উনকোটি স্নান,
রঙিন বসন্তসাঁকো,
আর কত… !
তোমার অপরাধ কিঞ্চিৎ
যতখানি জমেছিল ক্ষারজল–
সবটাই প্রশমিত।
ত্রাস
ভয়ে ভয়ে থাকি
কে কখন জেগে উঠে ধরে ফেলে!
কে কখন জেনে যায় ফাঁকি!
সতত উড্ডয়নশীল ফড়িং: তাকে ভালোবাসি !
ফুঁ দিই, ঠেলে দিই অতল খাদে–
তলিয়ে যাক…
শুনেছি মদ্যপ, পাতাখোর আর বেশ্যারা,
সকলেই দখল নিতে চায় ওর–
উড়ে যাক…
আমি বিশ্বাস হন্তারক–
মরদেহ হয়ে শুয়ে থাকব,
রেজিস্টার্ড ঘাসের দুপুরে।
রেজিমেন্ট
লোভ আছে তাই সংযত করি
পা জোড়া করে বলি সাবধান!
ফাঁক করে বিশ্রাম বলি–
নেওয়া আর দেওয়ার হিসেবে
চলে দুষ্টের দমননীতি!
জানি পিছনে হারামি বলে
সামনে রমণী!
শীতের আড়াল খুঁজতে খুঁজতে
দেখা হল না আর…
এখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে ভয় জাগে
কবে সেই দুমুখো সাপ ভিত কেটে
বেরিয়ে, কামড় বসাবে…
যতদিন লোভ থাকে সংযমে থাকি।
শুদ্ধসত্য
বাটিতে পবিত্র জল রাখা আছে
ছোঁবে না ও-হাতে
ও-হাত সঙ্গম চিনেছে
শ্রেণিশৃঙ্খলা ভেঙে বাতাসে ভাসমান
লোলুপ পরাগদানা…
গন্ধ নিয়েছে তার–
বর্ষার জলে পিচ্ছিল ছত্রাক ছেনে বেছে,
সুড়ঙ্গপথে বিলি করেছে স্বাদ–
জিভ থেকে জিভে স্পর্শ কুখ্যাত হয়েছে
তোমার– তুমি বহিরাগত…
পরিত্যক্ত ভাঙা টবে আঁতুর রক্ষা করো
ঘুমহীন বিপ্লব তোমার চরম শত্রু!
ইন্দ্রিয়চেতনার বোরখামুক্তি ঘটলে,
ওরা কী খাবে আর কী বা মাখবে
ভেবে দেখেছ ?