ঢাকার কবিতা (দ্বিতীয় পর্ব) <br /> নীলাঞ্জন হাজরা

ঢাকার কবিতা (দ্বিতীয় পর্ব)
নীলাঞ্জন হাজরা

ঢাকার কবিতা (দ্বিতীয় পর্ব)
নীলাঞ্জন হাজরা

১।
ঢাকা
কোনো শহর নয়
বরং হয়তো বলা যায় অসংখ্য ভুলে যাওয়ার
সম্মিলিত আর্তনাদের এলোপাথাড়ি মরণপণ ছুট।
হয়তো
এই সব ভুলে যাওয়াদের
ভীষণ কারবালা
ঢাকা
যার শোকে তোমার নতজানু দৃষ্টি থেকে
বয়ে চলেছে সাতশো জলধারা
যারা আগলে রেখেছে
অবরুদ্ধ স্বপ্নের আদিগন্ত স্মৃতি।
ঢাকা
হয়তো সেই সব স্মৃতির
দারুণ উত্তেজিত স্বরের এক অবিন্যস্ত অসংগঠিত ভিড়,
ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর
পৌঁছন সুনিশ্চিত করতে
যে বিপজ্জনক ভিড়ের ওপর নির্বিচারে ফায়ারিংয়ের জন্য
প্রস্তুত পুলিশ।
ঢাকা
আসলে সেই ভিড়ের চেতনার গভীরে ক্রমাগত চলতে থাকা একটা
ঘড়ি।
ইতিহাসের প্রহর বদল সূচিত করে চলা,
স্বপ্নের শেষ সীমা অবধি নিরন্তর অনুরণিত
সেই ঘড়ির অমোঘ ঘণ্টা
ঢাকা।

২।
তোমার স্মৃতির মুখ
বুলেট জর্জরিত।
দুই করতল দিয়ে সর্বশক্তিতে চেপে আছি
তার গভীর হৃদয়ক্ষত উপচিয়ে আসা বিষাদ।
যদি আমি পারতাম
এই দুই ওষ্ঠের টানে
শুষে নিতে তার দু-ঠোঁটে থমকে থাকা
ভীষণ তুফান।
ভালোবাসা ছাড়া
তোমার সাতশো নদীর আর কোনও নাম
জানিনি আমি।
তুমি দিয়েছ তোমার ভাষার
মানচিত্র-বিভাজন।
আমি দিতে পারি বড়োজোর
তোমার দু-ঠোঁটে থমকে থাকা ভীষণ তুফানে
কীর্তনখোলার বুকে
চিরাচরিত সেই ডুবে মরার সর্বজনীন আর্তনাদ।

৩।
একটা সাঁকো তৈরি করা
সহজ কাজ নয়।
তাই আমি তোমার জন্য
একটা সাঁকো তৈরি করব ঠিক করলাম।
আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম না
আমার হৃদয়ের বিষয়ে
এইটুকু তুমিও জেনে ফেলেছ।
তাই দারুণ কৌতুহলে
তুমি এসে দাঁড়ালে
ওই পাড়ে।
আমি চিৎকার করে তোমায় সাবধান করলাম—
কৌতুহলের বশে কাল রাতে
আমার কালো বিড়ালটা মরে গেছে।
সেটা আমার আর্তনাদের মতো শোনাল বলে
তুমি লম্বা হাই তুললে।
সেই সময়ের মধ্যে আমি যশোহর রোডের
সবকটা গাছ কেটে ফেলে
তক্তা বানিয়ে সেই তক্তা
ও সাঁকো তৈরির অন্যান্য সব সরঞ্জাম
পিঠে বয়ে
এই পাড়ে জড়ো করে
তার প্রথম পেরেকটা
অনেক প্রেমিকের কান্নায় ভেঙে পড়ার সাক্ষী
প্রাচীন এক গাছের বেশ পাকাপোক্ত তক্তাটার
পরিবর্তে
সজোরে আমার করতলে মেরে বসলাম।
ফিনকি দিয়ে ওঠা রক্তের বিন্দুগুলো
প্যারাবোলিক কার্ভে
ওই পাড়ে গিয়ে পড়ল।
আমার শেষ মনে আছে—
‘সাঁকো তৈরি হয়ে গেছে’
‘সাঁকো তৈরি হয়ে গেছে’
বলে তুমি হইচই জুড়েছ
তোমার ঠোঁটের শব্দগুলো কুয়াশার মধ্যে দিয়ে
ধীর গতিতে একটা একটা করে
আমার চোখে এসে পড়ে
তৈরি করে ফেলেছে এক আশ্চর্য রামধনু
সাঁকো

৪।

কাঁটাতার ঠোঁটে নিয়ে
রক্তাক্ত করতে পারিনি তোমার করতল
তাই এত মোমবাতি আর নীরবতার আয়োজন।
তোমাদের হৃদয় তো নীরব ছিল না কোনও দিন—
ঢাকা আর করাচির রাত।
পাথুরে বধিরদের নগরিতে নির্বাসিত আমি।
এ শহরে রাতের প্রতিটি শব্দ তাই ভিক্ষে চায়
তোমার আমার শ্রবণ।
নতুবা যে কেউ জানবে না — কেমন ধাতব শব্দে
শেষ ট্রাম চলে গিয়েছিল তোমাকে নিয়ে
একদিন ফিরবার প্রতিশ্রুতিভঙ্গের দিকে।
এইবার রাত্রির গম্বুজময় অগণিত চোখ থেকে আমার
গড়িয়ে আসবে তপ্ত মোম—
ক্ষতের ফোঁটায় ফোঁটায়
কাঁটাতার
ঠোঁট
মোমবাতি
করতলরেখা

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (3)
  • comment-avatar
    Monoj Bag 11 months

    নীলাঞ্জন হাজরার কবিতা খুব ভালো লাগল ।

  • comment-avatar
    Monoj Bag 11 months

    Fill very happy . Very nice .

  • comment-avatar
    পার্থপ্রতিম মন্ডল 11 months

    খুব ভালো লাগল। সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বর, সাম্প্রতিক বাংলা কবিতার পরিচিত উচ্চারণ থেকে যা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এই স্বর বাংলা কবিতার চলতি ধারায় এবার কিছু বদল আনুক।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes