
‘শ্রীমদ্ভাগবত-মহাপুরাণ’ দশম স্কন্ধ নবম অধ্যায় থেকে দামবন্ধন লীলার(১২-১৮ শ্লোক) অনুসৃজনপ্রয়াস
শুভম চক্রবর্তী
শিশুর ভয়ার্ত রূপ দেখেশুনে যশোদা জননী
হাতের লাঠিটি দূরে অকস্মাৎ ছোড়েন তখনি
বাৎসল্য রসে ডোবা মায়ের হৃদয় যশোদার
দড়িতে বাঁধতে চান শিশুকৃষ্ণ দুষ্টুমির সার
বাহিরবিহীন সে যে ভিতরবিহীন এইরূপ
আদিহীন অন্তহীন জগতের অভূত স্বরূপ
জগত-সৃষ্টির আগে আর তার প্রলয়ের পরে
একাধারে জগতের বাইরে থাকে এবং ভেতরে
ইন্দ্রিয়অতীত এই অব্যক্তের লীলার প্রকাশে
সহজানন্দের বান ডেকে যায় মনের আকাশে
যশোদা-জননী তাঁকে সাধারণ শিশু ভেবে মনে
মুষলের সঙ্গে জুড়ে দিতে চান দড়ির বাঁধনে
কিন্তু এইখানে এসে মজার ব্যাপার হল এই
দুষ্টুকে বাঁধতে চেয়ে যশোদা জননী এসে যেই
দড়ি দিয়ে বাঁধনের যত্নশীল প্রচেষ্টায় রত
দু-আঙুল দড়ি দেখো কমই রয়েছে রীতিমতো
তারপর যশোদা মা আবার নতুন দড়ি এনে
বন্ধন করতে চান ফের সেই দড়ির বাঁধনে
এবারেও সেই এক দু-আঙুল দড়ি কম হলো
বাঁধনের প্রক্রিয়ায় বিলম্বের বীজ জন্ম নিলো
ঘরে থাকা সব দড়ি যশোদা-জননী নিয়ে এসে
তবুও বন্ধনে ব্যর্থ দেখে গোপীগণ ওঠে হেসে
যশোদাও মিটিমিটি হাসেন ও ভাবেন হৃদয়ে
দারুণ বিস্মিত হয়ে আপনার শিশুর বিষয়ে
শ্রীকৃষ্ণ পরমেশ্বর মায়ের ঘর্মাক্ত দেহ দেখে
বেণী থেকে খসে পড়া ফুলের মালাটি চোখে দেখে
পরিশ্রমে শ্রান্ত মা-র অকস্মাৎ বসে পড়া দেখে
কৃপাময় কৃষ্ণ এসে ইচ্ছাকৃত পড়েন বাঁধনে