বৃত্ত ভাঙা বৃত্ত গড়া <br />  শুভ চক্রবর্তী

বৃত্ত ভাঙা বৃত্ত গড়া
শুভ চক্রবর্তী

প্রায় ষাট বছর আগে একটি পত্রিকার জন্ম হয়েছিল দুই তরুণের হাত ধরে, এটাই স্বাভাবিক যে তরুণদেরই সে সাহস থাকে। প্রকাশিত হয়েছিল আদিকবির নামানুসারে। ‘কৃত্তিবাস’ নাম ঠিক হয়েছিল । সিগনেট প্রেসের কর্নধার ডি. কে গুপ্ত পত্রিকাটির নাম করন করে দিয়েছিলেন তখন । তাঁরই পরামর্শে সেদিন জন্ম হয়েছিল বাংলাভাষার তরুণ কবিদের তীর্থস্থান ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকাটি। তিনি এ-ও বলেছিলেন যে পত্রিকাটিতে শধুমাত্র তরুণদের কবিতা ছেপেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না। বলেছিলেন পত্রিকার চেহারা ও ছাপার ব্যাপারেও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। পত্রিকার প্রথম সংকলনেই সম্পাদক ঘোষণা করেছিলেন প্রায় একই ভঙ্গিতে ‘কৃত্তিবাস বাংলাদেশের তরুনতম কবিদের মুখপত্র’ সঙ্গে সঙ্গে এ-ও জানিয়েছিলেন যে ‘একেবারে তরুণদের সার্থক না-হলেও ভালো নতুন কবিতার গতিপথের একটা নিরিখ যাতে পাওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যে তাঁদের কবিতা এতে একত্র করা হবে’ কেন একত্র করা হবে?এইরকম প্রশ্ন তো আসবেই,তিনিও সেটা জানতেন ,তাই তারপরই লিখলেন একটু ভিন্নভাবে একটু সামনে দাঁড়িয়েই ।দীপ্ত কন্ঠে জানালেন সেই লেখায় :একসঙ্গে থাকলে বাংলা কবিতার একটি সম্পূর্ণাঙ্গ পাওয়া যাবে– তা ছাড়া কি সত্যিই পাওয়া যেত না বাংলা কবিতার সামগ্রিক ছবিটা ঠিক কেমন ? তা হয়তো পাওয়া যেত কিন্তু সম্পাদক নিজেই জানিয়েছেন আরও কিছু কথা, বলেছিলেন ‘আসল কথা হলো তরুণদের একটা গোষ্ঠী বা দল গড়ে ওঠা। তাহলে শুধু কবিতাই সব নয় ? কবিতা লিখতে আসা অতিতরুণ কোনও কবিযশ:প্রাথী কে দল বা গোষ্ঠীর আবর্তে থাকতেই হবে? এমনই কি চেছিলেন সেই সময়ে কৃত্তিবাস পত্রিকার সেইসময়কার সম্পাদক, ঠিক তেমনই কি হয়েছিল সেদিনের ‘কৃত্তিবাস’ ঘিরে ? এরকম প্রশ্ন যে আসেনি তা নয় আসাটাই স্বাভাবিক। তাই পরবর্তী এক সংকলনে সম্পাদক জানিয়েছিলেন কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর লেখক তালিকায় কে কে লিখছেন । কিন্তু আমাদের মনে হয় যদি কোনও তরুণ কবি লিখতে চান তাঁর ভালোলাগার পত্রিকায় ?যদি সে না পারে ওই রকম করে দল বা গোষ্ঠতে সংযুক্ত হতে ? ভালোবাসাটাই যদি তাঁর কাছে বড়ো হয় ?তাহলে কি সে অতি তরুণের যে স্পর্ধা তা বোঝাতে পারবে না? জানাতে পারবে না কি যে সে কবিতা লেখে এইটাই তাঁর একমাত্র পরিচয়? এই পরিচয় কি যথেষ্ট নয় তেমন আর তাহলে ? তাহলে এর বাইরে থেকে কি কোনও কবিকে আমরা চিনে নিতে পারিনা? অবশই পারি ‘আমাদের ধারণায় এই দল, যা ইতিপূর্বে কোনো কোনো পত্রিকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এবং যা থেকে একাধিক শক্তিমান দক্ষ কবিকে আমরা পেয়েছি, তার একান্ত প্রয়োজন।’ জানিয়েছিলেন কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক।
কিন্তু সত্যি কি তাই ,এইরকম করে কি ভাবি আমরা এখনও ? কেউ কেউ যে ভাবেন সে কথা অস্বীকার করা যায় না । এমন করেই ভাবেন কোনও কোনও পত্রিকার সম্পাদক । কোনও তরুণ কবির জন্ম নির্ধারিত হয় তাহলে কোনও পত্রিকার সঙ্গে যখন সে নিজেকে সংযুক্ত করে? অনিবার্য এই যে তাঁর নিজস্ব বোধ ও মনন দিয়ে যখন লেখাটি হয়ে ওঠে তখন সেই লেখার পথে কোনও পত্রিকার দল বা গোষ্ঠীর একটা ইশারা থাকতে হবে । এই কি তবে তাঁর কবি হয়ে ওঠার পথে একটি বৃত্ত যা তাকে অভিজ্ঞতা দিয়ে বহন করতে হবে ? তাহলে কি এই পরামর্শেই কবিকে চিনে নিতে হবে তার পথ ও ভাষার ভিতর নতুন ভাষার আবরণ?তাহলে কি মনে হবে না যে কবিতার কথা আমরা বলি সে কবিতা কখনও কখনও কারও পরামর্শে তা ক্ষত-বিক্ষত রূপ?এমন তো মনে হতেই পারে তখন যে ভাষায় কবি কথা বলতে পারেন কবিতায় সে ভাষা যেন তাঁর নিজের ভাষা না হয়ে অন্যের ভাষা হয়ে দাঁড়ায়! তাহলে কবির অভিপ্রায় অসীম আর রইল কোথায় ? কবিতা কী এই প্রশ্ন যখন কোনও তরুণ কবির মনে এসে পড়ে তখন সে দিশাহীন পথে সে হয় হারিয়ে যায় আর না হয় অগ্রজ কবির মতো সেও একটি ধারণা নিয়ে কবিতায় নিজেকে উজাড় করে দেয়। হয়তো কেউ কেউ এইরকম করে এমনও ভাবেন । আবার কেউ কেউ কবিতা কী এইরকম প্রশ্ন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন তরুণদের নিয়ে । এভাবে একটা কবি বৃত্ত গড়ে ওঠে বৈকি আর সে বৃত্তের পরিধির একটা অলিখিত নিয়ম তৈরি করে ফেলেন কবি। কিন্তু এই কি কবিতার মধ্যে কিছু খুঁজে পাওয়া, কবিতার ভিতর এমন কিছু থাকতে হবে যা আগে কেউ ভাবেনি এমনও তো শোনা যায় কারও কারও মুখে । কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক যখন বলেন কোনও তরুণকে (কৃত্তিবাস পত্রিকায় লেখা পাঠাতে) কিছু একটা পাঠাতে । তা হোক যে কোনও পাগলামি ।তখন আর মনে হয় না কৃত্তিবাস পত্রিকায় কোনও নিময় তিনি রেখেছেন ।এমন ঘোষণাও তো কোনও তরুণকে উদ্দীপ্ত করে।কিন্তু যদি অগ্রজের কোনও ধারনায় কোনও তরুণ নিজেকে তেমন করে গড়ে তোলেন ।যদি তাঁর মনে হয় এইটিই ঠিক তাহলে ? সে তখন হয়ে ওঠে কবিতায় বোঝা। সে মনে করতে থাকে এর বাইরে টা ঠিক নয় । কখনও কখনও তাঁর হয়তো এমনও মনে হবে কবিতা কী এইরকম করে বলার একটা স্পর্ধায় সে নিজেকে বৃত্তের একটি অংশ ভাবতে থাকে। নতুন কোনও কিছু পড়লেই সে তখন তাঁর বিরুদ্ধে গিয়ে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলে।
তাহলে সে এর বাইরে গিয়ে নিজের পথ খুঁজে নেবে না ? নিশ্চয় সে খুঁজে নেবে তাঁর সাধনার আসনটি ।সে পাবে কবিতার আস্বাদ । এই সাধারণ ভাবে চেয়ে দেখার অবসর তখন হয়তো গড়ে উঠবে তাঁর অভ্যাসের পথে । সে খুঁজে পাবে নিজের একটা আবরণ আর এই আবরণ ভেঙে সে যখন বেরিয়ে যাবে হয়তো তখনই সে নিজেকে চিনতে পারবে বড়ো নিজের করে।এইভাবেই তো ভেবেছেন আমাদের অগ্রজরা। ‘কৃত্তিবাস পত্রিকা কোনও কবিকে তৈরি করেনি’ কিন্তু ‘কৃত্তিবাস একটু উচ্চকণ্ঠ ছিল ঠিকই,আমাদের দু:সাহস ও স্পর্ধা একটু বেশি পরিমানেই প্রকাশ পেয়েছে,ব্যক্তিগত কবিতায় নয়,পত্রিকার দলব্ধতায়’,এইরকম করে বলেওছেন তো কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু যখন নিজের অজান্তেই একটি ধারা আবর্তিত হতে থাকে তরুণদের মধ্যে তখন সেই ধারায় কবিতাও কি আবর্তিত হয় না ? হয় এই প্রভাব অনেকদূর পর্যন্ত গড়িয়ে যায় । এটাই তো স্বাভাবিক । কেউ কেউ সে ধারায় নিজেকে ছড়িয়ে দেন । আর এই ছড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে একটা অহংকারের জন্ম হয় । যা কবিতা থেকে বহুদূর চলে যায় । এই ঝোঁক এসে পড়ে তরুণদের মধ্যেও । তখন হয়তো অগ্রজের ধারনার সঙ্গে নিজের বোধে একটা দূরত্ব সৃষ্টি ।আর এই দূরত্ব কখনও কখনও কবিতা লেখার আবহকে নষ্ট করে ফেলে।প্রতিহিংসার জন্ম দেয়।
কিন্তু অতিতরুন একজন এইরকম ভাবতে পারেন ?আসলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অনেক সময় মিথ্যা আরোপ করি । ভাবি যে এই বুঝি সে সমস্ত কিছু ছাড়িয়ে বেরিয়ে পড়বে অনির্দিষ্টকালের দিকে ।এই হয়ত সে ঝাঁপিয়ে পড়বে নতুন কোনও ঝোঁকের দিকে ।এটাই তো স্বাভাবিক । তাকে এগিয়ে দিয়ে তাকে উৎসাহ দেওয়াই তো অগ্রজের কাজ। তাই নয় কি?কেউ কেউ ভাবেন আজকাল তরুণের কবিতা কিছুই বুঝতে পারেন না । বড়ো জটিল কবিতা তরুণদের ।তাই তাঁর আর তরুণদের প্রতি আকর্ষণ কমে গেছে। এতো ভিন্ন লেখা যে তাঁর মন আর তেমন করে সে লেখার ভিতর প্রবেশ করতে পারে না। আবার শুনি ভিন্ন কথা কেউ কেউ বলেন এত দুর্বদ্ধ যে অনুভূতি প্রবন পথ গুলো আর দেখায় যায় না। আবার সাম্প্রতিক বাংলা কবিতা শিরোনামে একটি লেখার শুরুতেই সময় সেন লিখলেন ভিন্ন একটি কথা ‘ বাংলা কবিতার ভাষা অনেক সহজ হয়েছে’ এইরকম কথা যখন শুনি তখন মনে কি হয় না—- তাহলে ?
কিন্তু কেউ কেউ এমনও তো আছেন যিনি নিজেকে ভাঙতে পারেন । সবকিছু তুচ্ছ করে এগিয়ে যান নিজের দিকে । নিবিড় কবিতার দিকে । আরও বেশি কবিতায় লগ্ন হয়ে অগ্রজের ইশারায় । বৃত্তের বাইরেই তাঁর চলাচলের একটা পথ চিহ্নিত হয় তখন । দূর থেকে তাঁকে চেনা যায়। এই তো কবিতাকে আরও গভীর করে পাওয়া । নয় কি ? অগ্রজের পথকে আরও প্রশস্ত করেই তাঁর চলা। অগ্রাহ্য করে নয়।হোক সে কঠিন তবুও তো এই পথ ধরেই তিনি এতটা পথ এসেছেন বড়ো বেদনার মতো করে এই একটি পথেই কবিতার মুক্তি এসেছে নতুনের হাত ধরে।এই পথ তাঁকে নিজেকেই চিনে নিতে হবে এইটুকু দাবী উত্তরসূরির কাছে রেখে যান অগ্রজ কোনও কবি।

কখনও কখনও কেউ কেউ তা মানবেন না। না মানারই তো কথা ।কেন মানবেন তাঁর ওপরে চাপিয়ে দেওয়া অহংকার। সে যে মুক্ত সে যে অনন্ত তাই তাঁকে আমরা কিছু চাপিয়ে দিলে তা যে কেবল কবিতার দরজা রুদ্ধ হয় শুধু তাই নয় মনের দরজাও যে রুদ্ধ হয়ে যায় । কিন্তু যখন শুনি ‘আমরা জোর দিয়ে ঘোষণা করেছি ও কাজেও পরিণত করেছি।আমরা কৃত্তিবাসের দরজা সকলের জন্য খোলা রেখেছিলুম।’ এই রকম করে যিনি ভাবতে পারেন সামগ্রিক কোনও ভাবনা তখন তো আমরা তাঁর টানে তাঁর কাছে যেতেই পারি । পারি না কি ? পারি খুব সহজেই তা পারি আর তাই তো তিনি কখনও কোনও তরুণ কবিকে বলতে পারেন ‘কবিতা যে কী আমি এখনও বুঝতেই পারি নি। তোমাকে শধু এইটুকু বলতে পারি লিখে যাওয়া ছাড়া তোমার কোনও পথ খোলা নেই আর এ জীবনে।’ তবুও যেন কোথাও সেই আভা রয়ে গেল । না বলেও যেন আলগোছে কোথাও বলে রাখলেন তরুণ কবিকে এই তোমার কাজ এছাড়া কবির কোনও আলাদা করে কোথাও যাওয়ার নেই আর। কিন্ত যখন তিনি বলেন দরজা সবার জন্য খোলা তখন তো প্রশ্ন আসে মনে তবে কি সত্যি কেউ কেউ এমন করে তরুণদের জন্য পত্রিকার দরজা খোলা থাকে না । মনে হয়েছিল তখন সেই তরুণের মনে। তাহলে কি এই যে কবিতায় লগ্ন হওয়ার কথা উঠে এসেছিল একটু আগে তা কি কেবল ব্যক্তিগত মতামত হয়ে থেকে যাবে। এর কোনও সার্বিক আবেদন নেই আমাদের জীবনে?
কৃত্তিবাসের সম্পাদক ঠিক তার পরেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘সকলের লেখার অধিকার থাকলেও,আস্তে আস্তে একটি গোষ্ঠীও গড়ে ওঠে এই পত্রিকাকে কেন্দ্র করে’ কিন্তু তাই বলে কি ওই যে সকলের জন্য খুলে রাখা দরজা তা কি বন্ধ হয়ে যাবে ? না তা, কখনও হয় না তা। আর হয় না বলেই আমরা সেই পত্রিকার পাতায় পাতায় এখনও দেখি অতিতরুণ কবির কোনও লেখা। আর সেই লেখা পড়ে কোনও পাঠক তো এখনও মনে মনে ভালোবাসেন জীবনকে । সেই জীবনই তো কবিতার অপূর্ণতা ভুলিয়ে দেয় । যাকে দেখা যায় না তেমন কোনও ভালোলাগা এসে পড়ে তার চোখে মুখে। এই যে অপূর্ণতার কথা এলো তা কেবল কবিতায় যা নেই যা পাঠক পেতে চান বড়ো নিজের করে । তা কেবল পূর্ণতা পায় কবিতা পাঠের ভিতর দিয়েই । এইরকম করে ভাবেন যখন কেউ তখন কি মনে হয় না । আসলে কবিতা যে কি তা কেউ কি জানে ? জানলে যে লেখার আর কিছু থাকে না তখন।
আবার যখন শুনি দূরের কোনও দেশের আদলে কোনও কোনও পত্রিকা গোষ্ঠী বা দল আয়োজন করেন কবিতা লেখার কর্মশালা তখন ভারী অদ্ভুত লাগে এই ঘটনা। মনে হয় তখন এই তো সেই একই প্রশ্ন কবিতা কী ? নাকি এর পিছনেও অন্য কোনও উদ্দেশ্য টান মেরে রাখা আছে অতিতরুণ কবি যশ:প্রার্থীর হাতে। এই হাত সে এখন কোথায় রাখবে ? এই যে আমরা জেনেছি লেখা ছাড়া তোমার আর কোনও পথ নেই ! কীভাবে সে বুঝবে এই ভাবে কবিতা লেখা হয় এইভাবে লেখো একটি নতুন কিছু?
তাহলে কি আমরা নিশ্চিত যে এই পরামর্শে কোনও গভীর সহজ কিছুর জন্ম হয়ে ওঠে। এইখানে কবিতার পাশাপাশি ভেসে ওঠেন সেই গোষ্ঠী ও তাঁর বলয়ে থাকা তরুণের দল। ভেসে থাকতে থাকতে সেই তরুণের দল ভেঙে ফেলেন বেড়া। তখনই সে পায় ধ্যানমগ্ন হওয়ার একটি নতুন পথ। এই যে সে বেড়িয়ে গেল এই বেড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে কখনও কখনও তীব্র অহংকারের জন্ম দেয়। যখন সে নিজের ভেতর থেকে অগ্রজকে দেখতে পায় তখনই তাঁর মুক্তি । তখনই সে খুঁজে পায় নিজের কোনও আরাধ্য স্থান । যেখানে সে একা,এবং সমগ্র।
আমরা তো একটি দু’টি লাইনে লেখা পড়ে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি এখনও :

অন্ধকারে তোমার হাত
ছুঁয়ে
যা পেয়েছি, সেটুকুই তো পাওয়া
যেন হটাৎ নদীর প্রান্তে
এসে
এক আঁজলা জল মাথায় ছুঁইয়ে যাওয়া
(সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের’পাওয়া’শিরোনামে কবিতা)

এই কবিতার কাছে এসে আমাদের থামতে হয় ।এই রকম একটি লেখার কাছেই তো আমরা কিছুটা সময় কাটাতে চাই। সৃষ্টির কাছে আমরা সেই সময় কোনও দাবী করি না । শুধু ছুঁয়ে থাকতে চাই ।একটি লেখার জন্য কেউ কেউ এমনও আছেন কোথায় যে হারিয়ে যায় তার খোঁজ পাওয়া যায় না। উপলব্ধির ওই মুহূর্তখানি যে কত বড়ো তা আমরা বুঝতে পারি যখন মনে হয় সামান্য সময় আমি নিজের মধ্যে নিজেই ছিলাম না ঠিক সে-সময় শেষ হলে । মন তখন নির্জনতা চায় । যে নির্জন সে পেয়েছে ওই কবিতাটি পাঠ করে ।মনে কি হয় না কখনও এই রকম কোনও মুহূর্তে ?
সারা জীবন ধরে আমরা সেই মুহূর্তের জন্য বসে থাকি ।কেবল একটি কবিতার জন্য । এছাড়া তো আমার আর কোনও কাজ নেই ! এই জন্ম যদি হয় সেটুকু অবসর তাই সত্য। তাই একটি কবিতার আকুতি নিয়ে আমরা পড়ি :

একটাই তো কবিতা
লিখতে হবে, লিখে যাচ্ছি সারা জীবন ধরে
আকাশে একটা রক্তের দাগ,সেআমারকবিতানয়
আমার রাগী মুহূর্ত কবিতা থেকে বহুদূরেসরেযায়
একটাই তো কবিতা লিখতে হবে

একজন তরুণের কাছে এই সত্য কে আর বলতে পারেন ? যিনি নিজেকে ছাড়িয়ে চলে যান তরুণেরই হাত ধরে, তাঁর বন্ধু হয়ে আরও বেশি কবিতার দিকে।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes