সুপ্রভাত মেট্যা-র কবিতাগুচ্ছ

সুপ্রভাত মেট্যা-র কবিতাগুচ্ছ

বিশ্বাস

প্রকৃত বন্ধু, বিশ্বাস বিরলতায় সাদা ধবধবে, স্পষ্ট, স্বাধীন।
যেখানে বহুল চর্চিত আলো
আকাশে খেলে বেড়ায়, নিঃস্বার্থ তিমিরে।

তুমি শুধু সম্পূর্ণ ঘুমের ভিতর, না, স্বপ্নে নয়।
স্বপ্ন তো অবিশ্বাস্যভাবে
কারো বিশ্বাস নষ্ট করে চলে যায় অনন্ত ওপারে।
ঘুমের ভেতরে শুধু আরোগ্য,
বিশ্রাম আর ছায়াসুখ নরম আশ্রয়ের।
যদি এমন হয়, বাস্তবিক কোনও আলোর জগৎ
তোমার সামনে এসে দাঁড়ায়, আর তুমি স্বপ্ন ভাবো তাকে,
তবেই স্বার্থক, তবেইতো ধন্য,
শ্রীমহাশরীরের সুপ্ত হৃদয় নেচে নেচে ওঠে।

কোথাও আনন্দ সমারোহে আরোহী পাতা,
পূর্ণ অক্ষরে, হাওয়ায় উড়ে এসে বসলে,
নিজেকে জ্ঞানী ভাবো তুমি বিশেষ?
ওই যে ঢেউ ওঠা ঠোঁটে গৈরিক বিকেল,
তুমি কার কথা বলছ? দৈবাৎ চলে আসা,
কেউ যদি অন্ধকার টানে, তুমি তার কথা ভাবছ?

ঐশ্বরিক যা কিছু পেতে গেলে
অন্ধকারের আশ্রয়েই তো আলোকে খুঁজে নিতে হয়?

গন্তব্য আলোর হলে

ভাবিত যা কিছু, রেখেছি আয়নায়।
শব্দের ভেতর আত্মস্থ হয়েছি।
ইচ্ছেমাত্র গতি পেয়ে ধুলোকে ধারন করেছি আলোর সন্ধানে।
তুমি সামনে এসে দাঁড়ালে
কত শত যেন চিঠি ভেসে ওঠে ঠোঁটে!
কথা হারিয়ে যায়।
হলুদ পাতায় মোড়া বিকেলের ছবি,
আর কলস্বরে বয়ে যাওয়া নদী,
মনে হয়, যেন মোহনার দিকে তুমিই চলেছ!

গন্তব্য আলোর হলে
অন্ধকার টপকে, রাস্তায় তো পৌঁছতেই হয়?
লক্ষ্য বেঁধে নিয়ে চোখে, সাহসকে অবলম্বন করে
সুড়ঙ্গ, সেই যদি হয় ভয়ের,
শরীর কি বলব, মন তুমি শীর্ষ সৌন্দর্যের,
হিংস্র নয়, সত্য প্রতিষ্ঠিত,
বিবেকবন্ধনের মানুষকে গিয়ে খোঁজ।

সিগন্যাল

ট্রেন থেকে নেমে, কোথায় যে চলে গেলে
স্টেশনের আলোয়, আমি তার একটুও দেখিনি।
জনস্রোত বড় গোলমেলে লাইন!
তোমার সিগন্যালগুলো
আজকাল ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি বলেই কি এই অন্ধকার?
কেউ কি চায়?

কোথায় যে তুমি,
আর কোথায় তোমার আক্ষরিক অর্থে জীবন,
আমি তার আলো পেতে, অন্ধকার রাস্তা হেঁটে হেঁটে
অশ্রুজলে ভাসিয়েছি পথ।

সেই কবে থেকে তোমার নারীজন্মে
আমার সমস্ত পৃথিবী আরণ্যক অন্ধকার হয়ে আছে, রহস্যজনক,
শাড়ির পোশাকে একা, আমি তা আজও বুঝিনি!

তুমি কি নিছক-ই রাত্রির লাল আলো গায়ে মেখে,
নিজেকে সিগন্যাল করিয়ে তুলবে,
আমাকে দূরে রাখতে,
নষ্টামীর রাত জাগিয়ে রাখবে?

প্রলয়: এক

ধুলো জানে, আলোর নিঃশ্বাসে ফুটে ওঠে প্রাণ।
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে বেড়ায় মেয়ে।
প্রতিভামুখী কথায় ঠোঁট ফুটে ওঠে প্রথম, সূর্যোদয়।
প্রনাম, পূর্ব দিগন্তে বলো কার নুইয়ে পড়া মাথা সৌন্দর্য এনেছে?
কাকে তুমি ভোরজন্মের আবির মাখিয়ে দুপুরে পৌঁছে দেবে স্থির?
কার অম্লীয় উদ্গীরনে বলো,
পিছল পায়ে, তোমার ক্ষারীয়, ক্ষীণকায় যৌবন
হেঁটে যাবে সূর্যাস্তের দিকে?

অন্ধকার তোমার মেয়ের জন্য কাচের চুড়ি,
অন্ধকার তোমার মেয়ের জন্য এসেছে নতুন জামা, শহর থেকে।
তুমি কি ফুটফুটে জ্যোৎস্না হবে?
কিংবা রাত শেষ হয়ে এলে, ওই ভোর,
প্রশস্ত শস্যের মাঠে জীবন ফলাবে গ্রামে?


নির্মেঘ

সস্তা দামে চাঁদ ছড়িয়ে পড়ছে জলের ওপর।
তিরতির করে, সেই জলের ফলক
চোখের ভেতর রাস্তা পেয়ে
চলে যাচ্ছে ঘরে, আমার কবিতার কাছে।
যেখানে তুমি, আমি, রোজ কেবল কাটাকুটি খেলায় ব্যস্ত থাকি।
আর নিঃশব্দে কতগুলি শব্দের উপর ব্যাকরণ ফলাই, শুধুই।
সেইখানে ফুটে উঠছে পাতা, কচি পাতা।
লেখক আমি। আমি কি তুলে নিয়ে তাতে
একটা সামাজিক গল্প বানাব?
নাকি তার রঙিন ইশারা,
যখন দুপুর হয়ে উঠবে জল,
টলমল শরীরে, পদ্মপাতার একটা কবিতা লিখব?

তোমার রূপোর দেশ থেকে

তোমার রূপোর দেশ থেকে চাঁদ উঠে এল রাতে।
রূপোলি ঝর্ণা, ঝরে পড়ে পাথরে পাথরে পায়ে,
মায়ের নূপুর।

ডগমগ তুমি, চক্ষুখুশির,
জ্যোৎস্না বেয়ে হেঁটে যাচ্ছ গ্রামে, মাঠে মাঠে কৃষকের রত্ন ছায়ায়।
সবুজ ক্ষেত, পাতার খেয়ালে হাত নাড়ো।
তোমার দরোজা খুলে রাখা অপেক্ষাশিবিরে
রজনীগন্ধা রাত, বলো কে জেগে আছে?
সিঁদুরলেখা কাগজফুলের কবিতায়
এখনও প্রেমের স্বপ্ন দেখছ তুমি?

তোমার রক্ত কাদায় চাঁদ ঢুকে লাল হয়ে উঠলে,
তবে, জানলা খুলে রাখা বিছানাকে দোষ দেবে?

অস্ত

টকা মেরে চলে গেলে বইয়ের পাতা,
কোথায় যে গেলে? কিছু কি পড়েছ?

শব্দের পাশাপাশি বারান্দা তালিকায় আলো, হলুদ,
কমলা-রং-শাড়ি ঝুলছে।
ছোঁয়া কি লেগেছে?
পংক্তি স্পর্শ, কিংবা পুরনো প্রচ্ছদে?

মলাট নামের লেখা, আদি-গন্ধ উবে যাচ্ছে ধীরে।
স্পষ্ট হচ্ছে, ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে
ভেতর অন্ধকারে, আরোগ্যের পাতা।
হাতে বোনা, তালপাতার পাখা, হাওয়া দিচ্ছ তুমি।
রং চটা ঘরের দেওয়াল।
ঝকঝকে একটা ক্যালেন্ডার ঝুলছে, তরুণী সুলভ!
ঢেউ উপচে পড়ছে তার, লাবণ্য অপরূপ!

তোমার শোবার ঘর;
অস্ত পেরিয়ে, আদিগন্ত উদয় সভার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

জল আর মাছের জীবন

বৃষ্টির পর খুব শান্ত লাগে সব।
চলো বেরিয়ে পড়ি।
যেকথা গভীরে ভিজেছে, এসো, একটু রোদ মাখি,
ছলাৎছল এগিয়ে যাই দূর।
খোলা নীল দুলে ওঠা জলে,
ছায়া ভেঙে ভেঙে ঢেউ তুলি দু’জন দু’জনের।
জল কেটে কেটে যাওয়া পথে,
তলে তলে, আমাদের পা কি এগিয়ে চলেছে
ক্রমশ রহস্যের দিকে?
যেখানে আলো, যেখানে স্নাত শব্দের ছায়া
শুদ্ধ হাওয়ায় মিশে গিয়ে
গল্প হয়ে ওঠে, জল,
আর এক-একটি মাছের জীবন!

সম্পর্ক

প্রতিটি প্রয়ান দিবস
শোকের অনলে পুড়ে কালো হয়ে ওঠে।
স্মৃতি, তুমি পাথরে পাথরে ঘষো।
ঘর্ষণজনিত আলোয় দেখো
তোমার মুখ বসে আছে কিনা ঠিক আগের মতোই।
প্রতিটি পাঁজরে কীভাবে ঘুণপোকা ধরে অন্তিম হয়েছ, দেখো।

আর ঠিক তখনই মধ্য প্রহরের আঁধার ঘনিয়ে
বিদ্যুৎ খেলে যাবে বুকে।
চোখে ভেসে উঠবে পূর্বনাশের, সর্বপরিহার ক্ষুধা ও তার যন্ত্রণা।

এখন জ্যোৎস্না ছুঁয়ে যাওয়া কাজল চুলে
তোমাকে বড় বেশি নিরিবিলি লাগে।
নদীতলে পড়ে থাকা ঝিনুক খোঁজে তোমার চোখ
যেন এই শেষ বিকেলে, আজও!

শোন ছেলে,
সম্পর্ক কখনও পোড়ে না।
প্রয়ান দিবসে সে জ্বলে, আরও আলো হয়ে ওঠে।


পথের মেয়ে

এই পথে, কাজ বেরিয়ে পড়ে হাজারও।
সাত রঙে চলে যাওয়া যায়।
সত মানুষের অভাব এই রাস্তায় নজরই আসে না।
হাওয়া মুখে ধুলো উড়ে গেলেও, ছেলের মতো পায়ে পায়ে
ঘোরে, ফিরে।
বোনের ভার নেওয়া ভাইয়ের দেশ, এই রাস্তা দিয়েই
পৃথিবী উজ্জ্বল করে তোলে।
ঝড় উঠলে, সন্ধের আগেই পাখি ফেরার খোঁজে বেরিয়ে পড়েন মা।
অন্ধকার নেমে আসা সময়সোহাগে বৃষ্টি নামলে,
আদর, আরও দুধে-আলতার রাত হয়ে ওঠে।
কেউ কি রাস্তা দেখিয়ে দূরে কোথাও তোমাকে দেখছে?
নদী বয়ে যাওয়া মায়ের জীবন কারও কি
সবুজের নকসা উঠছে পাড়ে!
সোনা ঢেউ উথলে পড়ছে ধানের খামারে, সেখানে কি?
নিকিয়ে জড়ো করছে দানা
কোথাও কি কোনও এক পথের মেয়ে?

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes