তরুণ কবির কবিতা : অরিত্র চট্টোপাধ্যায়

তরুণ কবির কবিতা : অরিত্র চট্টোপাধ্যায়

ড্রিমক্যাচার

ব্যক্তিগত মেটাফর লিখব
তাই জালের ভেতর এত স্বপ্নের আনাগোনা
আর পালকের অন্তরালে যে সমারূঢ় মাকড়শা
জ্যামিতি মিশিয়ে তার অপেক্ষা মেপেছি আমি
সুউচ্চ পাহাড়ের ওপর
আমাদের কোন ঘোড়া নেই
বরং আধখাওয়া চাঁদ বরাবরের ব্লেড ভেঙ্গে পালালে
রাতবিছানার মধ্যে একটা অলৌকিক ট্রেন চলে যায়
অথ ধ্বজভঙ্গ, মিনমিনে গার্ড সাহেব
আর অন্তর্বর্তী প্রেমিকার নাম সিমরান
সজোরে পতাকা দেখাই আর কেবলই ঝুঁকে পড়ে হাত নাড়ে
শেষ বগিতে যাদের পালানোর কথা
তারা এতক্ষণে ঠিক ঢুকে গেছে টানেলে
যাবতীয় মেশিন ভিজিয়ে এইরুপে আরেকটি ভোর শেষ হল
প্রভু নখের ছায়া দেখিতে দেখিতে বলিলেন, ট্রা লা লা লা…

স্বপ্নের পূর্ববর্তী ঘুম
বিষাদী স্বপ্নের শেরিফ
সমারুঢ় তুমি চাঁই চাঁই দৃশ্যকল্পের উপর
তবু উদাসীন, কেবলই ভেবেছ শীতঘুমে যাবে
শীত ও ঘুমকে একে একে আলাদা করে
নির্জন নাচঘরে ছুরি সহকারে কেটে রাখছে কেউ
আপেলের মাংসের মত নরম তার ওম
চোখে মুখে ছুঁয়ে যাচ্ছে , এসব মসৃণ স্পর্শ
যেন যোনির ভেতর থেকে মৃদু নীলচে একটা আলো
স্বপ্নের পূর্ববর্তী ঘুমের দিকে খালি হাতছানি দিয়ে ডাকছে

সিনেমায় যেমন

যেভাবে দুই অসমবয়সী পুরুষ
খেলার ভেতর
একইসাথে হেরে ও জিতে যায়

অজস্র কাঁটার মধ্যে
যেভাবে একটি মেয়ে অনায়াস দোলে
আমরা ভয়ে মুখ ঘুরিয়ে নি

যেভাবে ক্রমাগত নিক্ষেপের ভেতর
ডুবে যায় বুদ্ধের প্রশান্ত মুখ
যেভাবে একটি তির
তার উদ্দিষ্ট যোনিটিকে ভেদ করে
যেভাবে ঘটে জীবন
বিচ্ছেদ…


ঘুমের ভেতর
একটি মেয়ে আলসের ওপর হাঁটে
আরেকটি মেয়ে হয়ত ছটফট করে
কামাতুর নেকড়ের মত
অথচ পড়ে যাওয়ার আগে
দুজনেই দুজনকে ঠিক জড়িয়ে নেয়
আর ডুবে যায়
তারপর

এই ঘটনাটা যে দেখছে
তাকে কিন্তু কেউ দেখছে না
শুধু বরফের ভেতর
থেকে থেকে
নষ্ট আত্মার বিলাপ শোনা যায়

অসুখ

শাদা পাতা
আমি ভয় পাই তোমার বিশালতা
একটা অহেতুক যতির মতন
পড়ে থাকি
আর টের পাই
বুকের ভেতর হাতুড়ির শিথিল আওয়াজ
যেভাবে একটি আলেয়ার স্থানাঙ্ক
ক্রমাগত ওঠে আর নামে
তারপর
আর ফিরে আসেনা
ছন্দোবদ্ধ এই ক্ষয়ের ভেতর
আমি ক্রমশ এগিয়ে যাই
আরেকটা নৈঃশব্দের দিকে

উদিনে শহরে মাঝরাত

এমনি জোকারেরা মধ্যরাতে খেলা করে এই শহরের আনাচেকানাচে। সিটাডেল থেকে ঝুলে আছে চাঁদ। এবং স্থানবিশেষে ধ্রুবকের আকারে জমে রয়েছে সময়। গথ বেড়ালেরা শো’কেসের ভিতর সজ্জিত। পিচ্ছিল জেলাটোর বিনিময়ে তাদের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করি। আমার নগরবর্গের হিসেব হারিয়ে গেছে। কৌণিক কানামাছির স্থানাঙ্কভ্রষ্টামি। রঙহীন মুখাবয়বেরা প্রাচ্যের খবর জানতে চায়। সযত্নে বাতলে দেয় ক্যাথিড্রাল থেকে মস্কের পথ। শ্বাসকষ্ট আড়াল করে আমি তবু জেনারেলের সন্ধান করি। দারুকুয়াশার ভেতর জেগে থাকা গ্যারিবল্ডির মস্ত সিল্যুয়েট। ধাতব আঙুল দিকনির্দেশ করছে সাঙ্কেতিক দরজার দিকে। টরে টক্কা সহযোগে এগোতে থাকি অভিমুখ বরাবর। পথ শেষে পরিচিত গেলাস ঠোঁটে তুলে নিতে নিতে খেয়াল করতে ভুলে গেছি কখন পুনরায় তরলিত হয়ে গেছে সময়।

কারুবাসনা

ব্যক্তিগত ধ্বনি ও শব্দসমূহ সহযোগে এই অস্তবিকেলের কারুযন্ত্রে পুনর্মাপ করে দেখছি একটি বিয়োগ থেকে আরেকটি অবশ্যম্ভাবী বিয়োগরেখা বরাবর সময়দূরত্ব ঠিকঠাক নিরূপণ করা যায় কিনা, একে একে অক্ষরগুলিকে নিক্তিতে মাপি ও ঘষেমেজে করে রাখি সদ্য কামানো গালের নীলচে মসৃণ সমান, বিপরীতধর্মী ও সমবর্তিত এইসব সূচালো ধ্বনিযুগলের গবেষণাগারে নিয়ন্ত্রিত আস্ফাট ঘটিয়ে দেখেছি জলকুড়াল ও বল্মীকদুর্গ নামক যে কয়েকটি শব্দ পাওয়া যায় তার উৎপাদন প্রণালী লিখে রাখি, লিখে রাখি উপাদান বিশ্লেষণ শেষে জলকুড়ালের প্রায় স্বচ্ছ ও বল্মীকদুর্গের খয়েরি সবুজ গুঁড়ো গুঁড়ো অধঃক্ষেপ এই অস্তবিকেলের শেষ গবেষণা পত্রটিতে যার মুখবন্ধেই বলা রয়েছে “ এই নব্য প্রচেষ্টাটি নিওলিথ বাংলা সাহিত্যের কিছু আদি কবিতাবিশেষ হইতে প্রণোদিত “…

স্বগতোক্তি লিখে রাখছি

অনবরত স্বগতোক্তি লিখে রাখছি, পাছে আমার আঙুলগুলো
ফের মার্বেলময় হয়ে যায়, এত বেশি শাদা যেন
এই হলুদ রোদের মধ্যে একটা অস্বাভাবিক পাণ্ডুরতা
আমার ভালো লাগে না, সুপ্রচুর প্রহেলিকার সাথে আসঙ্গ
থেকে শুনেছি হাওয়ার ভেতরে কোথাও একটা ঘণ্টা বাজছে
দেখি হার্পিদের প্রচ্ছন্ন ওড়াউড়ি, তাদের সুপ্ত উত্তেজনা
অথচ ঠোঁটের বাগান থেকে তখনো কেউ বেরিয়ে আসেনি
মহাকাশের প্রতি হুল উঁচিয়ে কামাতুর বিছেরা অপেক্ষা করে
মর্ষকামী মেয়েটির কথা হয়ত তাদের মনে পড়েছিল
ঠোঁটের বাগান থেকে সে মেয়েটি আর কোনদিন ফেরেনি
খুঁজলে বা দেখা যাবে বনদেবীর কোটরে তার খোলস পড়ে আছে
আশ্চর্য হেন তাড়নায় এরপর আমরা শিখেছি জরিপবিজ্ঞান
আপেলের জ্যামিতি ভেঙ্গে চিঠিগুলি রেখেছি তার পেটে
চিঠি যা আদতেই স্বগতোক্তি ,আমার ভেতরে ভেতরে এতবেশি
লেখা হয়ে আছে, যে তা থেকে একটা আস্ত বই হয়ে যাবে
অথচ তার নামখানি নেই, নামখানি হারিয়ে গিয়েছে ঠোঁটের বাগানে
তার নামখানি হারিয়ে গিয়েছে মর্ষকামী সেই মেয়েটির সাথে


অরুন্তুদ রাগ জমেছিল আমার, সারারাত প্রতিবেশীর আপেল ভক্ষণের
অবিরল কচ্‌কচ্‌ শব্দে ও বিষম স্বপ্নহীনতায় ভুগে ভুগে শেষটায় কি এক
আক্রোশের বশে মধ্যবর্তী পোকাটিকে জাল ছিঁড়ে এনে টিপে মেরেছিলাম,
শীর্ণ ওই দেহের ভেতর এত বেশি রক্তরস পোরা ছিল তা কে জানত, কি ভীষণ
চটচটে এই লাশ ও রক্তরসের সাথে সংযুক্ত হয়ে আমি হতবুদ্ধি পড়ে আছি
আর আমার শরীর এখন ক্রমশ ছেয়ে ফেলছে পুরনো দিনের মাছির দল ও
জালের মালিক গেরস্ত মাকড়সাটি মৃত পোকাটির দেহগন্ধ বরাবর আমারই
দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে, এই মায়ামোহজালের ফাঁদটুকু অবিলম্বে পালানোর
জন্য মৃত পোকাটির ন্যায় আমারও তিনজোড়া শুঁড়সর্বস্ব পা ও মিহি ডানা গজিয়ে
ফেলা ছাড়া আর কোন গতি নেই এবং তা আমার দরকার এখন… এখনই…

লাভার্স পোর্ট্রেট

এতবার মুছে ফেলি মুখ
তবু করতলে ঠোঁট লেগে থাকে
এত বেশি জিভ ফিসফিস করে
রক্তের স্বাদ, হাড় ও মজ্জা নেই
তারের কাঠামো পড়ে আছে
দমকা হাওয়ায় অসহায় ওড়ে
মাংসল মিনারেট, সমবেত শিরাটুকু
প্রতিকৃতি পুরোপুরি শুষে নিলে
ক্রমে পশ্চাদপসরণ, আয়নার ভিতরে ঝাঁপ
ক্যানভাসের বুক চিরে একে একে
বেরিয়ে আসে জ্যান্ত ঠোঁট, মুখ, হাত
শরীর… দ্বিতীয় লিঙ্গের

ওয়েটিং রুমে লেখা কবিতা


পাপবোধ আমাকে কুরে খাচ্ছে, তাই আমি অপেক্ষা করি
কি এক অনাঘ্রাত ইশারার বশে কখন রেফারিরা রুমাল
ফেলে পুনরায় খেলা চালু করেন আর বিকল যন্ত্রাংশেরা
নিমেষে সচল হয়ে ওঠে আর বন্দুকের পুনঃ গর্জনে যে
এক ঝাঁক সকাতর পাখি সশব্দে উড়ে যায়, তারা আমায়
ক্ষণিকের অব্যাহতি দেবে ক্রমপুঞ্জিত এই পাপবোধ থেকে
এই আশা করি।

খেলা শুরু হলে সহাস্য রক্তাক্ত আমি সানন্দে লুটিয়ে পড়ি
তোমাদের নব নব বুলেটাঘাতে। এবং চাই পুনর্বার লুটিয়ে
পড়ব বলে খেলাখানি আবারো শুরু করার বিনম্র অনুরোধ
নিয়ে আমি অপেক্ষা করি। রেফারির সম্মুখে নতজানু হই।


দার্শনিকদ্বয় কথা বলছিলেন এবং কথোপকথনের ভেতর তাঁদের ছাল চামড়া একে একে খসে পড়ছিল আমি দেখছিলাম যাবতীয় আবরণ একাধিক স্তরে ঝরে পড়ছিল… আশ্চর্য এই যে এযাবৎ তাঁরা আমার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছিলেন না ও সহাস্য আলোচনা করছিলেন এবং আমি সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম কখন তাঁদের মুখোশটি খসে পড়বে ও হাড়ের খাঁচার ভেতর বাড়ন্ত কাঁটা গাছ ও প্রস্ফুটিত সেই ফুলখানি অবশেষে আমি দেখতে পাব… আমাদের সামগ্রিক নির্বুদ্ধিতা ও অসহায়তা এই বিষয়ে তাঁরা কথা বলছিলেন ও তাঁদের ব্যবহৃত শব্দসমূহ ক্রমে ঘরের বাতাস ভারী করে তুলছিল এবং আমি আবারো অপেক্ষা করছিলাম কেননা তাঁদের হাড়ের অন্তর্বর্তী কাঁটা গাছ ও তার আশ্চর্য ফুলখানি সামনে থেকে দেখব এবং করতালি সহযোগে তাঁদের অভিনন্দন জানাবো, অথচ তার আগেই, শেষ স্তরটুকু খসে পড়ার আগেই আমার উপস্থিতি টের পেয়ে সহসা তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন ও ঘন কালো ওভারকোটে নিজেদের পুনরায় ঢেকে ফেললেন আপাদমস্তক এবং আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই মুহূর্তে আলোচনার পূর্বেকার তুলনায় তাঁদের অনেক বেশি অনিশ্চিত ও সন্ত্রস্ত মনে হচ্ছিল…

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes