
চিন্তার চিহ্নমালা
পর্ব-১৯
সন্মাত্রানন্দ
কিন্তু অন্তর্হিত হওয়ার আগে যে-মানুষটির ছবি আমরা পাচ্ছি, এখনও পর্যন্ত সেই ছবিটাও বেশ নিরাবেগ ভূমি থেকে আঁকা হল না। হল না বলছি, তার কারণ এ নয় যে, তাঁর জীবনের বিচিত্র বর্ণময় ঘটনাসমূহ আমাদের কাছে অপরিজ্ঞাত হয়ে রয়েছে। জীবনের কিছু কিছু ব্যক্তিগত ঘটনা অবশ্যই নির্দ্বিধভাবে প্রমাণিত হয়নি (বিবাহ ইত্যাদি), বিশেষ করে তাঁর ভারতের বাইরে থাকার বিভিন্ন অধ্যায়, কিন্তু মোটের উপর সুভাষচন্দ্রের জীবনের বেশিরভাগ ঘটনা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষ্যপ্রমাণের দ্বারাই সাব্যস্ত হয়েছে। তথাপি অন্তর্ধান-পূর্ববর্তী সুভাষচন্দ্রও আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠেননি, তার কারণ আমরা সুভাষচন্দ্রের চিন্তা-জগৎ নিয়ে গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণা করিনি। আমরা তাঁর ক্রিয়াকাণ্ড নিয়ে যতটা সচেতন, তাঁর মনোজগৎ নিয়ে কি ততটা সচেতন হয়েছি?
তেইশে জানুয়ারি, রাত এগারোটা
আজ যাঁর জন্মদিন গেল, তাঁর একটা মোটামুটি মূল্যায়ন করার মতও মানুষ আমাদের মধ্যে এখন খুব বেশি নেই বলেই আমার মনে হয়। কেননা ওরকম উদ্দেশ্যমুখীনতা, মনের জোর, সাহস, অধ্যবসায়, পাণ্ডিত্য, পরিকল্পনাশক্তি, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, আত্মবিশ্বাস, আত্মত্যাগ, স্বাধীনতাপ্রিয়তা, নিজেকে রহস্যের পর রহস্যে মুড়ে রাখার সীমাহীন ক্ষমতা ও চরিত্রের দ্বান্দ্বিক সৌন্দর্য—প্রভৃতি বিরল বৈশিষ্ট্যের একত্র সমাবেশ এখন আর আমাদের মধ্যে নেই বা প্রায়শই বিরল হয়ে এসেছে। না, আমি তাঁর বহুচর্চিত অন্তর্ধান-রহস্যের কথা বলতে বসিনি। সে তো নানারকম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাবোতাজের ফল, যার মধ্যে একটা অংশ অবশ্যই সুভাষচন্দ্রের স্বনির্মিত পূর্বপরিকল্পনা; বাকিটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীর নানা রাষ্ট্রস্বার্থ। সেই সমস্যার স্পষ্ট, সুচিন্তিত সমাধান আদৌ কোনোদিন হবে কিনা, সেকথা বলতে পারে ভাবীকাল। সেসব বিতর্ক প্রায়শই গবেষকদের স্বপক্ষপুষ্ট বিশ্বাস ও কল্পনার দ্বারা এখনও পর্যন্ত চালিত হচ্ছে।
কিন্তু অন্তর্হিত হওয়ার আগে যে-মানুষটির ছবি আমরা পাচ্ছি, এখনও পর্যন্ত সেই ছবিটাও বেশ নিরাবেগ ভূমি থেকে আঁকা হল না। হল না বলছি, তার কারণ এ নয় যে, তাঁর জীবনের বিচিত্র বর্ণময় ঘটনাসমূহ আমাদের কাছে অপরিজ্ঞাত হয়ে রয়েছে। জীবনের কিছু কিছু ব্যক্তিগত ঘটনা অবশ্যই নির্দ্বিধভাবে প্রমাণিত হয়নি (বিবাহ ইত্যাদি), বিশেষ করে তাঁর ভারতের বাইরে থাকার বিভিন্ন অধ্যায়, কিন্তু মোটের উপর সুভাষচন্দ্রের জীবনের বেশিরভাগ ঘটনা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষ্যপ্রমাণের দ্বারাই সাব্যস্ত হয়েছে। তথাপি অন্তর্ধান-পূর্ববর্তী সুভাষচন্দ্রও আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠেননি, তার কারণ আমরা সুভাষচন্দ্রের চিন্তা-জগৎ নিয়ে গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণা করিনি। আমরা তাঁর ক্রিয়াকাণ্ড নিয়ে যতটা সচেতন, তাঁর মনোজগৎ নিয়ে কি ততটা সচেতন হয়েছি? আমরা ছাত্রনেতা সুভাষকে জানি, আমরা রাজনৈতিক কর্মী সুভাষকে জানি, কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট সুভাষকে জানি, কলকাতার মেয়র সুভাষকে জানি, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতিষ্ঠাতা সুভাষচন্দ্রকে জানি, মৌলবী জিয়াউদ্দিনকে জানি, সিনর অরলান্ডো মোজিট্টাকে জানি, চন্দ্র বোসকে জানি, নেতাজি সুভাষকে জানি। কিন্তু চিন্তক সুভাষচন্দ্রকে জানি আমরা? সাহিত্যিক সুভাষকে জানি কি? পত্রলেখক, সুরসিক, প্রেমিক সুভাষকে?
জানি না। জানি না, কারণ সুভাষচন্দ্রের কালেকটেড ওয়ার্কস আমরা ভালো করে পড়িনি। ‘তরুণের স্বপ্ন’-ই তাঁর একমাত্র রচনা নয়। ভালো করে ‘তরুণের স্বপ্ন’ নিয়েও আমরা চর্চা করিনি। কীভাবে তিনি ভাবতেন, কীভাবে তিনি গড়ে তুললেন তাঁর মন ও মনন, কোথায় তাঁর চিন্তা সবল, কোথায় তা সামান্য দুর্বল হয়ে পড়েছে, কোথায় তাঁর স্বপ্ন ও আশা, কোথায় তিনি তলিয়ে যেতেন নৈরাশ্যের অন্ধকারে, কোথায় এবং কীভাবে তিনি মনোবল সংগ্রহ করতেন, কেন তিনি কারও প্রতিধ্বনি নন, কেমন করে তিনি ভালোবাসতেন, কেমন করে তিনি সর্বস্ব ছেড়ে যেতেন, কীভাবে মৃত্যুভয়কে তিনি অতিক্রম করার চেষ্টা করতেন, কী ছিল তাঁর উপেক্ষার স্থল, উপেক্ষিত সেই বস্তু, ব্যক্তি ও বিষয় কেমন করে তাঁকে টেনে ধরত পেছন থেকে, কীভাবে সেসব পশ্চাদ্বর্তী কাঁটাঝোপ ছাড়িয়ে, ডিঙিয়ে, লাফিয়ে পার হয়ে যেতেন, কী তাঁকে ভেতরে ভেতরে রক্তাক্ত করত, কোন অশ্রু মুছে নিয়ে তিনি পথ চলতেন, নির্মম হতে পারতেন, কোন অভিমান গুমরে মরত তাঁর বুকের মধ্যে, কোন রসায়নে তাঁর মুখে ফুটে উঠত বালকের নির্ভার সদাপ্রসন্ন হাস্যরেখা, কী জন্য রহস্যের পর রহস্যে পরতে পরতে তিনি মুড়ে দিতেন তাঁর যাত্রাপথ, মহাযুদ্ধের দুর্জয় রণনায়ক হয়েও তাঁর মুখেচোখে কোথা থেকে এসে লেগেছিল মিস্টিক সাধকের তন্ময়তা—না, আমরা এসব প্রশ্নের উত্তর জানি না।
আর ঠিক এখানেই আরও চর্চা, গবেষণার, অধ্যয়নের ও অধ্যাপনার প্রয়োজন আছে। আমি কোনও নতুন বইপত্র লেখার কথা বলছি না। সেসব তো হচ্ছে, হবেও—সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে লেখালেখি নতুন কোনও ব্যাপার নয়। আমি কিন্তু লেখালেখির বদলে একটু পড়াপড়ির উপরেই জোর দিতে চাইছি এক্ষেত্রে। প্রয়োজন কেবল অনুধ্যানের নয়, প্রয়োজন অনুসন্ধানের। চিন্তক সুভাষচন্দ্রের অনুসন্ধান। এটা বিশেষভাবে বলার যে, অনেকের প্রভাব তাঁর মধ্যে কাজ করেছে, কিন্তু তিনি কারও অবিকল অনুকৃতি নন। যেমন, সুভাষ বারবার করে অকুণ্ঠ চিত্তে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ও নিবেদিতার চিন্তাচেতনার কাছে তাঁর ঋণ ও আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। সেকথা সত্যও। কিন্তু তা সত্ত্বেও সুভাষচন্দ্র চিন্তক হিসেবে স্বাতন্ত্র্যের দাবি অবশ্যই করতে পারতেন। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ-নিবেদিতার কালী-উপাসনা বা শাক্ত সাধনা সুভাষকে প্রভাবিত করেছে। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের শিবজ্ঞানে জীবসেবা সুভাষকে অনুপ্রাণিত করেছে। দেশমাতৃকার বেদীমূলে প্রাণবিসর্জন তিনি বিবেকানন্দের কাছে পেয়েছেন। সাহস, পবিত্রতা, চরিত্রগঠন—এসব কিছুর প্রেরণাও পেয়েছেন স্বামীজীর কাছ থেকে। কিন্তু এগুলির প্রত্যেকটির নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশন তিনি করেছেন, যা তাঁর চিঠিপত্রে সুব্যক্ত। সেই ইন্টারপ্রিটেশন বা ব্যাখ্যা বিবেকানন্দের চিন্তাচেতনার যেমন বিরোধী নয়, তেমনই আবার বিবেকানন্দের অবিকল অনুকৃতিও নয়। দেখা যায়, সুভাষচন্দ্র শংকরাচার্যের অদ্বৈতবাদ বা ভালো করে বললে প্রচলিতার্থে ‘মায়াবাদ’ মানতে পারেননি। এক্ষেত্রে সুভাষও মায়াবাদের অর্থ ঠিকমতো বুঝতে পারেননি, আর পাঁচজন লোকের মতই মায়াবাদের সরলীকৃত অর্থ বুঝে বসেছেন, অর্থাৎ মায়া মানে ‘কিছু না’ বা ‘অলীক’। বস্তুত, মায়া মানে ‘কিছু না’ নয়। মায়া আসলে সৎ বা অসৎ নয়, তা অনির্বচনীয়। এগুলি ধীর স্থিরভাবে বোঝার মতো ধৈর্য বা সময়, কোনোটাই তিনি দিতে পারেননি। অথচ, এই অদ্বৈতবাদের উপরেই ভিত্তি করে বিবেকানন্দ যে প্র্যাকটিকাল বেদান্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাতে সুভাষ বিশেষভাবে অনুরক্ত। এ যেন মা-কে মানি না, কিন্তু তার মেয়েকে মানি—টাইপের ব্যাপার। দর্শনের ছাত্র হিসেবে সুভাষ নিশ্চয়ই বৌদ্ধ দর্শন বিশেষভাবে অধ্যয়ন করেছেন, অথচ ওই দর্শন তাঁকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল, এমন চিহ্ন তাঁর লেখাপত্রে পাই না। অথচ মজার ব্যাপার, জার্মান দার্শনিক বের্গসঁ, যিনি এই সমস্ত জগতকে এক অন্তহীন গতিধারা, এক নিরন্তর প্রবাহরূপে বর্ণনা করেছেন এবং পরবর্তীকালের রাসেল প্রভৃতি কেজো হিসেবের দার্শনিকদের দ্বারা কঠোরভাবে নিন্দিত হয়েছেন, সেই বের্গসঁ যাঁর মতটা অনেকটাই ক্ষণিকবিজ্ঞানবাদী বৌদ্ধদের মতের অনুরূপ, সুভাষ সেই বের্গসঁর দ্বারা সবিশেষ প্রভাবিত হয়েছেন, সেকথা বিস্তারিত লিখেওছেন। তাহলে বৌদ্ধ মত তেমন করে মানলেন না কেন সুভাষ? সে কি বৌদ্ধমতের নীরক্ত, পাণ্ডুর বৈরাগ্যদেশনার জন্যে? ওরকম বৈরাগ্য-ভাবনায় ‘দেশ’ উড়ে যায়, যা সুভাষের পক্ষে কি সাতিশয় বিরক্তির কারণ? আর বের্গসঁর লেখায় প্রবল গতিময় জীবনের বন্দনাগান কি চিরপথিক সুভাষচন্দ্রের চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল? অরবিন্দর দার্শনিক প্রতীতিকে কোনও কোনও অসতর্ক মুহূর্তে সুভাষের কাছে বিবেকানন্দের ‘রাজযোগ’-এর থেকেও গভীর মনে হল, কিন্তু অরবিন্দর নির্জনবাস তিনি একেবারেই মেনে নিতে পারলেন না। সেখানে আবার বিবেকানন্দের কর্মযোগ তাঁর ভালো লাগল। ও দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় স্থাপন করার চেষ্টাও তিনি করলেন না। নির্জনবাসী অরবিন্দ প্রায়শই সন্ন্যাসী শংকর বা সন্ন্যাসী বুদ্ধের উপর খড়গহস্ত, সুভাষচন্দ্র অথচ সন্ন্যাসে বিশেষ অনুরক্ত, নিজেও একাধিকবার সন্ন্যাসী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উত্তরজীবনে তিনি যেন সন্ন্যাসীর গৈরিকের উপর সৈনিকের বর্ম পরে নিলেন। ব্যক্তিগত বিশ্বাসে সুভাষ তান্ত্রিক স্বভাবের, ঘরভর্তি সাপের মধ্যে শুয়ে যেন তিনি ঘুমোচ্ছেন, এমন কল্পনার দ্বারা তিনি কৈশোরে ভয়কে জয় করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন। এই প্রয়াসের স্পিরিট একেবারেই তান্ত্রিক স্পিরিট, যেখানে বিপদকে সাদরে আহ্বান করা হয়। সোশালিস্ট ধারণাতে তিনি বিশেষ আস্থাশীল ছিলেন, অথচ ব্যক্তিস্বাধীনতাকে খর্ব করে রাষ্ট্রজীবনে তা প্রযুক্ত হলে শেষ পর্যন্ত তা যে সমষ্টিতান্ত্রিক একনায়কত্বে পর্যবসিত হয়, সেকথা তিনি বুঝে নিতে চেয়েছিলেন। ফ্যাসিস্টদের সাহায্য তিনি নিয়েছেন দেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য, অথচ ওদের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন নীতি যে কতখানি পাশবিক, তাঁকে তাও জানতে হয়েছিল। সুভাষচন্দ্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ—‘মাই ফিলজফিকাল টেস্টামেন্ট’ ও ‘মাই পোলিটিকাল টেস্টামেন্ট’—অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয়নের সামগ্রী।
আমি এসব ব্যাপারে কোনও সুনিরূপিত সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। জোর করে সিদ্ধান্ত টানলেই তা হয়ে উঠবে আরেকপ্রকার সরলীকরণ। কিন্তু আমি বলতে চাইছি, সুভাষের মন-অরণ্যকে বুঝতে চাইলে এসব জটিল ব্যাপারস্যাপার ভালো করে পড়তে হবে, চর্চা করতে হবে। সে জিনিসটা খুবই জরুরি, তাঁর জীবনকাহিনি ও অন্তর্ধান-রহস্য নিয়ে গবেষণার মতই জরুরি কিংবা তার থেকেও বেশি জরুরি অন্তত আমার কাছে। এমন গবেষণার ফল কী? এ দিয়ে কি আমরা সুভাষকে বুঝতে পারব? না। ‘সুভাষকে বোঝা শক্ত’। সম্পূর্ণভাবে যেকোনো সাধারণ মানুষের মন-অরণ্যকে বোঝাই শক্ত বা অসম্ভব। সেই অর্থে কোনও তথাকথিত সাধারণ মানুষই সাধারণ নন। তাহলে সুভাষের মতন এমন আলোকিত অথচ তমসানিগূঢ়, শিশুর মতো সরল অথচ ঋষির মতন গভীর, সন্ন্যাসীর মতন নির্লিপ্ত অথচ সৈনিকের মতন আক্রমক মনকে কীভাবে সহজে বোঝা যাবে বা আদৌ বোঝা যাবে?
তাহলে লাভ কী? লাভ এই যে, সুভাষের মতন দুর্নির্নেয় মনকে বুঝতে গিয়ে তা বুঝতে না পারলেও, নিজেদের মনকেই আরও স্পষ্টতর আলোকে কিছুটা হলেও বুঝতে পারব। আমাদেরই মন কীভাবে অনুরক্ত হয় আদর্শবিশেষের প্রতি, কেন বাল্যের সেই আদর্শ শেষ অবধি সর্বার্থে গ্রহণ করতে পারি না, কোথায় আমরা ভয় পাই, কোথায় মরিয়া হয়ে উঠি, কোথায় অপরাহ্ণের দীপ্তি মেখে আমরা আবার প্রতীক্ষা করি নবতর সূর্যোদয়ের—সেগুলিই আরও গভীরভাবে জানতে পারব আমরা। যেকোনো অধ্যয়নের সেই-ই একমাত্র সার্থকতা। নিজেকে আরও একটু জানা। সুভাষচন্দ্রের ভাবনা-ভুবন আমাদের আন্তরিক অধ্যয়নের গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী হতে পারে সে-কারণেই। সুভাষচন্দ্রের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা একটুও বিচলিত হবে না তাতে। বরং তাঁকে ভালোবাসি বলেই আসল সুভাষকে খুঁজব, তাঁর সঙ্গে বহু স্থানে ভিন্নমত হলেও তাঁর প্রতি আমাদের অনুরাগ বিভ্রষ্ট হবে না।
কারণ, আমরা উপাসক নই, অন্বেষক।