
স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা
গল্প ও গল্প
চোখের আগল থেকে গলে যাচ্ছে মণি
পদ্যগ্রাম হুরশহর পক্ষীরাজের আদলে
উড়ন্ত উড়ন্ত
এরপর ধাক্কা আসে
ধাক্কা
চুরচুর
ভাঙার আওয়াজ
বুকের কাচ তুমুল ফাটোফাটো
টুকরোয় বন্ধুনাম
যে তোমার গোপন শত্রু ছিলো
দুর্গের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে
বোঝো নি কখনও
বোঁজানো খালের গায়ে ছিপ ফেলে গেছো
গলে যাওয়া মণির গল্প বলি
বয়ে যাওয়া শিরার গল্পও
এ জীবন অতিকায় সাপ
ইঁদুরের গর্তে ঢুকে চাঁদ খুঁজে পায়
তারপর মুখে কুলুপ এঁটে বেরিয়ে আসে
বিরাট নির্জনে
নির্জনে খুলে দেয় হা হা হা
নিজস্ব অভিশাপ
উঠোন
১।
লুকোচুরি রুমালচোর খেলা
ছায়া ও রোদের উঠোনে
টুকি দিই টুউউউ কিইইই
তুমি ছোঁয়ার হাত বাড়িয়ে আসো
ছোঁয়ার আগেই আমি শিহরণ পাই
ছোঁয়ার আগেই খেলা ঘুরে যায়
কানামাছি ভোঁ ভোঁ…
২।
বয়স বাড়ছে গুরুমা
তাও তোমার অন্ন ধ্বংস করছি
তোমার গাইয়ের দুধ দুয়ে
ফেনাটুকু সাবাড় করছি
তবু কিছু বলো
না
সামান্য অনুযোগ
না
সারাদিন আলেফালে যায়
আলোর কমতিভাগে চাতালের ক্ষীরছায়া
তোমার মাটির কাছে হাঁটুর সরসর
চুমুকে চুমুকে চুমু খায়
আর লন্ঠন ভেতরে খুব ভেতরের ঘরে
দাউদাউ আগুন ও কালির চাপানউতোরে
জ্বলতে থাকে
জলীয়
ডাঙার সঙ্গে গড়ে ওঠা রোদ ছায়ার নামাবলি
সামান্য উষ্ণ ও শীতলের তুইথুলি মুইথুলি
সংলাপ ঘাঁটতে ঘাঁটতে ঘাট এগোচ্ছে
কোন চরিত্র গাল টিপে বুঝিয়ে দিচ্ছে আদরপনা
কেউ চিউয়িংগাম ফোলানো অভিমান
রোদ পড়লে সোনালি মৃদঙ্গ তেড়ে বেজে
ঢকঢক গিলছে কচুরিপানার বুদবুদি শ্বাস
দুপুরে আলপনা আঁকবো বলে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছি
দেখি কুন্ডলীপাকানো তীর মাথানিচু রাধা
তার নিভু নিভু চোখে কলসি ভাসছে
নুন ধুয়ে রাখা থরে থরে মনসজললীলা
জলের শরীর থেকে তিরতির ফিঙে
ফিঙে ফিঙে জলের শরীর
বৃষ্টি আগলে
দরজা জেগে দাঁড়িয়ে আছে ভেজা কাক
বাড়ি লম্বা ডাঁটির কালো ছাতা
শিকগুলো ঝাপ্টা সহ্য করে দাঁড় টানছে প্রাণপণ
পাঁজরের ওপর দিয়ে রূপোলি চমকে গেলো
ঝড়াৎঝট
কেঁপে উঠলে কি?
মড়মড় মড়াৎ
ভেঙে পড়লে কি?
নাহ কেবল থিরথির
ধারায় ধারায় ধরে রাখছে চিবুকের স্নান
অমলতাস
নিভে গেছো ও দূর নিভে গেছো
এখন বাতাসে শিমুলবীজ উড়ছে
কোমরে উটপাখির ভর
শ্বাস ফেলছি প্রশ্বাস লুকোচ্ছি
ঢ্যামনা সাপের ঝাঁপিতে
ফুঁ উথলিয়ে জাকুজি খেলছি
যতদূর মনে পড়ছে তুমি কাছে ছিলে
শিয়রে
চুলের অলিতে বিলি
আর রক্ত আঙুলের
পাপ
ফুটে ফুটে নিভে গেলো যে
তার বসন্তরঙ
থোকা থোকা
আলো শিরশির
আমার আর তোমার গোপন
তাকে প্রেম ডাকতো