সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

১.

আমি গালাগাল দিচ্ছি না

প্রকাশ্যে গালাগাল দিতে এখনও সঙ্কোচ হয়। এই রে রে করে তেড়ে এল বুঝি দেশটা ! সোল্ডার অফ টপের নিচে জিভামের কালারফুল প্যাডেড ব্রা। মাঝের আঙুলটা শুধু নামিয়ে রেখেছি ভালোবাসা মরে না বলেই।

এসব কবিতার কোন ভবিষ্যৎ নেই। অনুবাদ হওয়ার আগেই বুদবুদের মতো ভ্যানিস। সুবজ ধানক্ষেতে এখন প্রবল বৃষ্টি। আলপথ গুলো আবছা হয়ে
আছে জলে। কবিতা থেকে শুধু ভাতের গন্ধ উঠছে…
উপচে পড়ছে ফ্যান। আমার খিদে পাচ্ছে আরও।

পান্ডুলিপির পাতাগুলো বড্ড সতেজ। তাজা রক্ত গড়াচ্ছে
এখনও। না, আমি গালাগাল দিচ্ছি না, শুধু বলছি, যতই নিরুৎসাহ করো, কারো বাপের ক্ষমতা নেই যে এটুকু লেখা কেড়ে নেবে!

২.

তুমি কী বোঝ?

আমার ডিম্বাশয় ও শুক্রাশয় নিয়ে বাংলা কবিতার খুব
একটা মাথাব্যথা নেই। উচ্চতা চাইতে চাইতে কখন তারা
মহাকাশ পারি দেবে সেটাই এখন দেশের প্রধান খবর।
একজন তরুনীর দেহ পাওয়া গেছে শান্তিকেতনের এক সস্তা ভাড়া বাড়িতে। তার ছিন্নভিন্ন কবিতা, রক্তাক্ত মুখ। শুধু অক্ষত ছিল যোনি। সে বছর তিনটে পুরস্কার দাপিয়ে বেড়ালো বাজার। থলি থলি সবজি এনে আমি রান্না করলাম পঞ্চব্যঞ্জন। অথচ তুমি এসব কিছুই জানতে পারলে না।

ডিসেম্বরে সেবছর বৃষ্টি হল খুব। বুদ্ধদেব বসুর ‘রাত ভরে বৃষ্টি’ অস্থির করেছিল । গানস এন রোজেস শুনিনি কোনদিন। তবে সৌভিকদার কবিতায় বারবার কোল্ড নভেম্বর রেইনের ছবি ভাসে যেন। এসব পুরোনো প্রেমের কথা মনে করায়। লেখার ভেতর ক্যাকটাস জন্মায়। মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে এক পথভ্রষ্ট প্রেম শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। তুমি কী বোঝ স্বার্থ এখনও ভালোবাসা ছাড়াই ভোগ করে শরীর?

৩.

কাল থেকে দশটা কবিতা লিখেছি

কাল থেকে প্রায় দশটা কবিতা লিখেছি। হিন্দোলদা
বারবার বলেন, ‘কম লেখ, না হলে হবে না’। পেট খারাপ
থাকলে কি বেগ চেপে রাখা যায়?
তোমারও আজকাল পাত্তা নেই কোন। যন্ত্রমানুষের মতো
হেঁটে যাচ্ছো ঠিকানাহীন গন্তব্যে। হরমোনকেও আজকাল বুঝিয়ে রেখেছ এখন কামের সময় নয়।
এসব কথা শুধু আমাকেই বলতে পারো। বউ কি সময় দেয় না একদম? আমার কবিতায় ছন্দ হারিয়ে যায়।

একটা খটখটে নদীর মতো ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছি। বর নারকেল তেল গায়ে মাখতে বলেছে। পিরিয়ড শেষের পর মোহনায় জল আসে খুব। তেল আর জলে ভেসে যায় বদ্বীপ। মৃত সন্তানরা হাউহাউ করে কাঁদে। আমি কবিতা লিখি তোমার জিভের বর্ণনা দিয়ে। বর পড়ে বলে ‘কী দারুণ’!

৪.

ততক্ষণ কবিতা লেখা

কতদিন পর বরের দিকে তাকালাম। কালসিটেগুলো ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। চোখ দুটো যেন সমুদ্র। ভাতের
গন্ধ আসছে। তুমি কি শুনতে পাচ্ছো আমি হাসছি?

কিছু বলার নেই আার। প্যানপ্যানে চিঠি লেখার দিন শেষ। কবিতা আজকাল স্মার্ট শব্দ চায়। শিশ্নে মুখ দিই। বীর্যে ভরে যায় হাত। হাজারটা ব্যাঙের চিৎকার। তলপেট জুড়ে
লাফালাফি করে। আমি পেচ্ছাপে জল ঢালি ঘন ঘন।

বরের কাছেও আমার দুটো চিঠি ছিল। হারিয়ে ফেলার পর লিখিনি একটাও। আসলে চিঠির গুরুত্ব বোঝে না সবাই।
সমুদ্র গর্জন করে। শঙ্খচিল ওড়ে। ছাদের কার্নিশে সূর্যের
লাল আলো। চুমু খাওয়ার জন্য দূরত্ব ম্যাটার করে না। এসব বর বোঝে না। তার কাছে ভালোবাসা মানে ততক্ষণ কবিতা লেখা যতখন না তরল হয় হরমোন।

৫.

যে হেঁটে যায় সে আমি নই

বাস থেকে নেমে গেল যে সে আমি নই। হেঁটে গেল অন্ধকার। বিশ্বাস উড়ছে খোলামকুচির মতো। পকেটে আকাল। সে শুধু পাগলের মতো কবিতা খোঁজে কবিতা।

হাঁটতে হাঁটতে কবর খোঁড়ে রোজ। একদিন সেভাবে এক আশ্চর্য বাগানে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াবে। হিম গলে ঢলে পড়বে পারিজাত। আমি ঘুমের ভেতর দেখব তখন অন্যএক তরুণ কবির কবিতা শোনার সময় কিভাবে বারবার ঘড়ি দেখেছি শুধু। বাড়ি ফেরার তাড়ায় অসহ্য লেগেছে সব। আমার বরের দুশ্চিন্তা আমার অতীত। অথচ আমি জানি যে দুরকম আমি বেড়ে উঠেছি দিনে ও রাতে। এতগুলো বছরেও তারা সকলের সামনে কোনদিন মুখোমুখি হয় না।

যে হেঁটে যায় অন্ধকারে সে আমি নই। আমাকে দেখতে হুবহু মায়ের মতো। সারাগায়ে মাতৃদুগ্ধের গন্ধ। মেয়ের ঘামের লালার ছাপ আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে। সে রোজ ঘুম পাড়াতে পাড়াতে সিনড্রেলার গল্প পড়ে। জোনাকিরা ঘিরে ধরে, তারপর….মেয়ে ঘুমিয়ে গেলে জেগে ওঠে একটা জংলী বেড়াল!

৬.

সমরেশ দা আজ কবিতা সিংহের কথা বললেন

এক বাঘিনী। আঁচড়ে আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত। অথচ কী প্রবল তেজ। তীক্ষ্ণ ভুরুর নিচে থরথর করে কাঁপে বাঘের দল। কবি সমরেশ মন্ডল সে ছায়া পড়েছেন আবার আমার লেখায় । লিখতে ভয় হচ্ছে এখন।

কত কবিতা গর্ভজলে ভাসছে। না, কোন বিপ্লব আনব বলে
চিৎকার করছি না। আমি মা হতে চাই অসংখ্য কবিতার।

কবিতা সিংহ আজও তো বেঁচে। তিনি কোনদিন আমার স্বপ্নে আসেননি। তবু তাকে বড়ো কাছ থেকে চিনি। সমরেশদা আজ তাঁর কথা বললেন। আমি আবার লিখছি
আমার প্রেমিকের বীর্যপাত নিয়ে। আমার নগ্নতায় মিশে যাচ্ছে কাম। হাঁ মুখ বড়ো হচ্ছে, একটা বাজার গিলবে বলে।

৭.

লাফ

অন্ধগলির ভেতর হাতড়াচ্ছি লাইটার। এক দুঁধে প্রকাশক কুতকুতে চোখে কবিতা পড়ে বলেছিল, লাফ চাই। লাফ দিতে গেলে নাকি আগুন চাই, আগুন। আমার জীবনে কোন সান্তাবুড়ো নেই না যে প্রতি ক্রিস্টমাসে একটা করে পুরষ্কার এনে দেবে।

টাকা নেই যে বই হবে। গুটিকতক পাঠক উৎসাহ দিয়ে বলেছিল শুধু, ‘আহা বড়ো ভালো’। শুধু সেই ভরসায় ছন্দ শিখেছি স্কুলের বাংলা দিদিমনির কাছে। চুপ করে ছিলেন বড়ো বড়ো কবিরাও। যেদিন নদীর জল ভিজিয়েছিল প্রথম, তারা আরও গুটিয়ে নিল হাত। হারাতে হারাতে আরও একা হয়ে গেলাম কেমন। একদিকে গোলাপের সাম্রাজ্য, কাঁটা আর রক্তের গন্ধ। অন্যদিকে জ্যোৎস্নায় মোড়া এক নিঃসঙ্গ নদীর চর।

কিছুজন বাহবা দেয় ‘লেখো আরো’। যত লিখি তত আগুন জ্বলে। সে ছাই মেখে তান্ডব করো তুমি। সারা ঘর ছাইয়ে ভরে যায় রোজ। একটা নিরীহ খরগোশ শুধু লাফ দিয়ে যায় গল্পের শেষটা পাল্টাবে বলে!

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    শীর্ষা 4 years

    একটা নিরীহ খরগোশ শুধু লাফ দিয়ে যায় গল্পের শেষটা পাল্টাবে বলে! ❤️❤️

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes