লায়লা সারাহাত রুশানির কবিতাগুচ্ছ <br /> (শারিফ ফয়েজ-এর ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায় অনুবাদ – ঈশিতা ভাদুড়ী)

লায়লা সারাহাত রুশানির কবিতাগুচ্ছ
(শারিফ ফয়েজ-এর ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায় অনুবাদ – ঈশিতা ভাদুড়ী)

লায়লা সারাহাত রুশানি একজন আফগান কবি, ১৯৫২ থেকে ১৯৫৪-র মধ্যে কখনও জন্মগ্রহণ করেছেন, কাবুলের উত্তরে পেরওয়ান প্রভিন্সের রাজধানী চারিকারে। তিনি লায়লা নামেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৭৭এ কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। তাঁর বাবা সারশার রুশানি সাংবাদিক ছিলেন, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল সারশার রুশানিকে। সারহাত রুশানি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর বোন অস্ট্রেলিয়ায় মারা যায় এবং তার পরপরই শোকে তাঁর মার মৃত্যু হয়। তিনি বেশ কয়েকটি কবিতা-সংকলন প্রকাশ করেছিলেন, যার মধ্যে প্রধানত আধুনিক ফার্সি কবিতা ছিল। তাঁর কবিতায় মূলত দুঃখ-যন্ত্রণার বহিপ্রকাশ দেখা যায়, যে অভিজ্ঞতা তাঁর আফগানিস্তানের যুদ্ধ থেকে হয়েছিল। তাঁকে আফগানিস্তানের অন্যতম আধুনিক কবি বলে গণ্য করা হয়। তিনি কম্যুনিস্ট শাসন এবং তালেবান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদী মনোভাব এবং সাহসী সত্তার জন্যে পরিচিত ছিলেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘দ্য কন্টিনুইং স্ক্রীম’, ‘দ্য গ্রীন ডন’, ‘ফ্রম স্টোন্‌স’, এবং ‘এ নাইট স্টোরি’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তালেবানদের দ্বারা নারী নির্যাতনের কারণে তাঁকে আফগানিস্তান থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয় এবং তিনি নেদারল্যান্ডে চলে যান ১৯৯৮ সালে। তিনি সেখানে ফারসি ভাষায় একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন, ইভ ইন এক্সাইল। 2004 সালের ২১শে জুলাই তিনি মস্তিষ্কের ক্যান্সারে মারা যান, মাত্র ৪৬বছর বয়সে। ২৯শে জুলাই তাঁর মরদেহ কাবুলে পৌঁছায়, তাঁর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং বুদ্ধিজীবিদের উপস্থিতিতে তাঁকে কবর দেওয়া হয়।

অগ্নিশিখা

যে অগ্নিশিখা করেছিল গ্রাস ঘরবাড়িগুলি
রক্তবর্ণ ছিল
এবং রেখে গেল ভস্ম …
যে রক্তপ্রপাত ঝরাল তারা, আর ঢেলে দিল
সারা বছর ধরে,
এখনও লোহিতবর্ণ…
হেমন্তকালীন পাতাগুলি,
বিষণ্ণ সূর্যাস্তের রঙ
লাল ছিল,
রক্তাভ…
এমন কী আমার দুঃস্বপ্নের রঙ
সবই লাল,
রক্তবর্ণ, রক্তাভ।

আস্‌সামায়ি পর্বত

হে আস্‌সামায়ি
তোমার পাথুরে নিঃশ্বাসে
সহস্র নীরব স্ফুলিঙ্গের আত্মা।
হে প্রস্তর, হে সহিষ্ণুতা,
তোমার শিখর হলো বিশ্বাসের দৃঢ়তা –
বিস্ময়াবহ কবিতা ইতিহাসের।
হে পর্বত
পবিত্র গর্ব উদ্ভাসিত কল্পকথা
লিখিত আছে
তোমার সচেতন মননে।
অন্তহীন যন্ত্রণা এই শহরের
এতদিন ধরে খোদিত আছে
তোমার হিমশীতল পাথুরে ধমনীতে।
হে প্রস্তর, হে সহিষ্ণুতা,
হে অপরাধের মৌন সাক্ষী
কী ক্ষত প্রসারিত হয়েছিল
তোমার অন্তরতর পাথুরে রক্তাক্ত হৃদয়ে,
অকস্মাৎ বিচ্ছিন্ন করেছিল যে তোমার পাঁজর!
হে প্রস্তর, হে সহিষ্ণুতা!

প্রিয়তম আমার

তুমি বলেছিলে যখন আমার কাছে আসবে
একগোছা লাল ফুল নিয়ে
কেঁপে উঠেছিলাম আমি
কম্পিত হয়েছিলাম উদ্বেগে
কেঁপে উঠেছিলাম ভীত

নিঃসঙ্গতায় আসক্ত

তুমি আসবে না,
আসবে না তুমি,
যেখানে আমার বসন্ত শূন্য এত,
পরিযায়ী পাখিদের
নিঃশ্বাসের শব্দও নেই।

রাতটা শূন্যতায় ভরা,
তা’ নয় জমাট ভয়ে সারা রাত্রি।
রাতটা নৈঃশব্দ্যের কবিতাময়,
রাত্রিখানি স্তব্ধতার চাপা শব্দে ভরা।

তুমি আসবে না,
আসবে না তুমি,
রাতটা একটা জলাশয়ের মত,
যার গভীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে হৃদয় আমার
ধীরে ধীরে, অদ্রুত, মন্থর।
আমি ঈর্ষা করেছি
চড়ুইদের, যারা উড়তে ভালোবাসতো।
আহা!
আমিও উড়তে ভালোবাসি কত!
কিন্তু অদৃশ্য রজ্জু এক
যত দীর্ঘ সময়সম
বেঁধে রেখেছে ডানা আমার।

রাত রাত্রির অন্ধকারে আসক্ত,
আর, আমি নিঃসঙ্গতায়।
উপলব্ধি করো না তুমি
নির্জনতার আসক্তি কাকে বলে,
তুমি জানো না
কখনওই আসবে না তুমি।

ফসিল

দেখো, এই বৃদ্ধ নপুংশক শয়তান
ফিরিয়ে দিচ্ছে ইতিহাসের পৃষ্ঠা
ফিরিয়ে দিচ্ছে রক্তাক্ত বারো মাস
চব্বিশ মিনিটে

ফসিলেরা নিঃশব্দ থাকে নি কেন?
এই বয়স্ক ক্রীতদাস
আকাট দুর্গন্ধ-ছড়ানো নপুংশক
দণ্ডায়মান তালগাছের ভাগ্য লিখতে পছন্দ করে
হাওয়া-পেন্সিল দিয়ে

জোকারগুলো আস্ত
অনুকারী বীরপুরুষ।
ফসিলেরা কেড়ে নিচ্ছে জীবন,
আর, বীরপুরুষগুলো ঘোড়ায় চেপে
বসন্তকে করছে আহ্বান, অথচ রক্তে টগবগ
বসন্তকে করেছে ধ্বংস, নির্মম।
ফসিল, ওহে ফসিল!
পুনরায় বোবা ফসিল হয়ে যাও তোমরা!

তালগাছেরা দাঁড়িয়েই থাকে,
আর, ইতিহাস পিছু হটে না।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (2)
  • comment-avatar
    সায়ন রায় 4 years

    ভালো লাগলো

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes