
বেবী সাউ-এর কবিতাগুচ্ছ
কথন
ভাঙাচোরা একটি দ্বীপে বসে আছে আমাদের জাহাজ এখন
বহুদূরে পাল তুলছে ইতিহাস, গরিব, আহত
তোমায় যেটুকু জানি, নীরবতা তুমি
ঢেউ আছড়ে পড়ছে গায়ে, ভাঙছে মাস্তুল, নাবিকেরা
সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, দূরত্ব দিগন্ত
তুমি, একটিবার ফিরে এসো, দেখা দাও, এই ঝড়ে
বড় বেশি কৌতূহল হয়ে আছে সমস্ত সৈকত।
নাবিক
সে ঢেউ কল্পনা করি, বুকের ভিতর থেকে মাটি খুবলে নিল
আমি তাকে অন্ধকার শ্বাপদের মতো খুঁজে খুঁজে
এসেছি তোমার কাছে, অকল্যাণ কোর না আমার
আসমুদ্র হিমাচল বোঝে জনসমুদ্রের মতো
ভাষা আমাদের নেই, চোরাবালি নিজেই নিজের
জীবন নিঃসঙ্গ করে, কাছে আসে সামুদ্রিক হাওয়া।
নোনা, ভাষাহীন, মুখ একে একে উঠে আসে তারও।
লাইফবোট
হায় কতদিন খসে গেল, ভাঙা জাহাজের মতো কেউ নেই
আমার প্রেমিক; তুমি তো ডুবন্ত মন, ডুবে ডুবে জল খাও শুধু
আমিও ভেসেই যাচ্ছি, নুলিয়ারা টেনে ধরে আছে
অতীত যেমন টানে ঘুমের ভিতর।
ভাঙা জাহাজের পাশে
ভাঙা দেশে
আমার বসতি।
নুলিয়া
হাসি, বহমান। এই দূর থেকেও আমি এতদূর
রুদ্ধশ্বাস হতে পারি, দেখে নাও, ডুব দিলাম জলে
বুকে লাগল ঢেউ তার, মনে মনে প্রাচীন আহুতি
তোমার গরিব তাঁবু থেকে যাকে অন্ধ মনে হয়।
হাসি, যত টুকরো হই, যত মন তার মৃত্যু খুঁজে নিয়ে
আমায় পাহারা দেয়, জানি, তারও আয়না নেই কাছে।
জগন্নাথ
ঢেউ জানি, একদিন তোমাকে ছাড়াই ভেসে যাবে।
তুমিও ফেনার মতো আছড়ে পড়বে সীমান্তরেখায়।
দেখেছি সমুদ্র কত গিলে খায় প্রতিটি গোধূলি,-
ভাঙা বৃদ্ধ পরিত্যক্ত নদী মিশে গেছে নিয়মিত।
তবুও তোমার কাছে ফিরে আসি,পুরুষ, আমার
জল তুমি, তুমি বালি, বালিঘর ভেঙে চলে যাওয়া
সামুদ্রিক দেবতারা তোমার পায়ের কাছে হত্যে দিয়ে আছে।
আমি তার সামনে শুধু একাকী রাবেয়া হয়ে থাকি।
ভালো লাগল
নাবিক, জগন্নাথ – কবিতা দুটি খুব ভালো লাগলো।