ঘরানার ভাষা  <br /> সব্যসাচী মজুমদার

ঘরানার ভাষা
সব্যসাচী মজুমদার

“ করুণ চিলের মতো সারাদিন, সারাদিন ঘুরি।
ব্যথিত সময় যায়, শরীরের আর্তনাদে, যায়
জ্যোৎস্নার অনুনয়; হায়, এই আহার্যসন্ধান।“(করুণ চিলের মতো)।

পঙক্তি চতুষ্টয় আপনার পাঠ সমীপে পেশ করলে সহসাই যে নামটি আপনার চিন্তায় ফুটে উঠবে কবির নাম সম্পর্কে,তাকে আরও কিছুটা সমর্থন দেওয়ার জন্য এই আলোচক দু’একটি সূত্রের অবতারণা করতে পারে।
প্রথমতঃ’ চিল ‘ শব্দের ব্যঞ্জিত ব্যবহার।
দ্বিতীয়তঃ তাকে করুণার বিশেষণ ব্যবহার করে চিহ্নিত করা
তৃতীয়তঃ মতো সাদৃশ্য বাচক শব্দের ব্যবহার
চতুর্থতঃ ‘সারাদিন ‘শব্দের দ্বৈত ব্যবহার
পঞ্চমত,’হায়’ খেদোক্তির ব্যবহার
আপনার তবুও জীবনানন্দ দাশের কথা মনে পড়ছে না,কারণ দুটো চিহ্ন।
এক,চিল কে ব্যক্তি মানুষের মনস্তাত্ত্বিক রূপ আরোপ
দুই, ‘আহার্য সন্ধান ‘-এর ব্যবহার।আহার্য আহরণের যে তুমুল দৃশ্য আমরা জীবনানন্দের কবিতার প্রেক্ষিতে দেখে থাকি,এ উল্লেখ নিঃসন্দেহে তার চাইতে পৃথক।পৃথক একটাই কারণে এটি একটি সংবাদ পরিবহণ করতে চাইছে।তার অন্তরালের আবহকে তাৎপর্যময় করে তুলতে চাইছে না, ঠিক যেমনটি চেয়ে থাকে জীবনানন্দ দাশের কবিতা। ঠিক এভাবেই নিজেকে আলাদা করে নেন বিনয় মজুমদার ‌। অভিজ্ঞ, রসিক পাঠক ওপরে উদ্ধৃত পংক্তি গুলি পাঠে সহজেই বিনয় মজুমদারকে চিহ্নিত করতে পারবেন।মূর্ত আর বিমূর্ত -উভয়বিধ চিত্র -রূপের উপস্থিতি সত্ত্বেও।তাহলেও একথা পাঠককে স্বীকার করতেই হবে, রচনার স্বভাবজাত অক্ষরবৃত্তের চলন,কিছুটা মিশ্রবৃত্ত হলেও জীবনানন্দের চেতনা -প্রবাহ এখানেও বর্তমান। এ উদাহরণ বিনয় মজুমদারের কবিতায় বিশেষ বিরল নয় বলেই সহমত হওয়া যেতে পারে ‌। এবং এরই সমর্থনে একাধিক পঙক্তির ব্যবহার বারান্তরে করা যাবে কিন্তু আগে ধারণার কথাটি বলা দরকার। বিগত শতকের সত্তর দশকের পর এবং মুক্ত অর্থনীতির বিপুল জয়যাত্রার পরেও জীবনানন্দের কবিতার সর্বাতিশায়ি প্রভাব বাঙালি কবিদের ওপর চোখে পড়ার মতো উপস্হিত। কবিতা রচনায় -বলে দাবী করছি না। অন্ততঃ পাঠষ্ক্রিয়ায় জীবনানন্দ অনিবার্য।এই প্রেক্ষিতে বলা যায় এর অন্যতম কারণ অবশ্যই বিনয় মজুমদারের কবিতা।বলতে চাইছি এক বিরল ঘরানার উত্তর সাধক হিসেবে বিনয় মজুমদার জীবনানন্দ দাশকে বাঙালি কবিতা পাঠকের অনেক কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন।বোধের সংস্পর্শে। অন্ততঃ জীবনানন্দের দিকে যাওয়ার সূত্র যেন ছড়িয়ে থাকে তাঁর কবিতাবিশ্বময়।

যেমন বিনয় মজুমদারের ছোটগল্পে দেখা যায় একপ্রকার নিশ্চিতকরণ।সম্ভাবনার বিপুল প্রসারকে স্বীকার করে নিয়ে স্বভাব হিউম্যানিস্ট হিসেবেই মানুষের সাপেক্ষে সম্ভাবনাকে টেনে এনেছেন সিদ্ধান্তের গণ্ডিতে। বিনয় মজুমদার এ বিষয়ে নিশ্চিত যে শুভদিন আসবেই।
এবং আসবে মানুষর ‘প্রস্থেসিস’ প্রবণতার ফলেই। রবিনসন ক্রুসো যদি পরিত্যক্ত দ্বীপে
সঙ্গীহীন অবস্থায় বারবার পড়তেন তাহলে বারবারই নতুন করে চাকা আবিষ্কার, ক্যালেন্ডার তৈরি করতে সমর্থ হতেন। জাক দেরিদা’র বক্তৃতা মালা ‘দ্য বিস্ট অ্যান্ড
সভরেন’ -এ যার স্বরূপ কথিত হয়েছে।এটা সম্ভব মানুষের জিনগত প্রবৃত্তির জন্য।বিনয় মজুমদার লিখছেন,
“পৃথিবীর নিয়ম হচ্ছে বিশ্বের নিয়মেরই এক অংশ মাত্র।… যে বা যারা পূর্ণাঙ্গ পৃথিবীর
শতকরা একান্ন ভাগ বানিয়েছে সেবা তারা পৃথিবীর মালিক।“(পৃথিবীর মালিক)।

এখন এই পূর্ব উল্লেখিত ‘হিউম্যানিস্ট’ শব্দের ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে।আমরা সচরাচর হিউম্যানিজম অর্থে ‘মানবতাবাদ’ ধরে নিই। কিন্তু তাতে কিছু পারস্পরিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ‘studia humanitatis ‘ এর সঙ্গে যুক্ত মানুষেরাই আসলে হিউম্যানিস্ট।যেহেতু এইসব বিদ্যার সঙ্গে মানুষের মর্যাদা ও মানবিক মূল্যবোধ স্বীকৃত ছিল,অর্থাৎ সমাজের নৈতিক বন্ধন জড়িত ছিল,তাই, মানবিকতার সঙ্গে হিউম্যানিজমকে অবিচ্ছেদ্য মনে করা হয়। মানুষ আত্মবিরোধ সহ যখন সমাজের নীতির মধ্যে নিজেকে স্বস্থ করে এবং সমাজের নির্মাণের ভিতকে দৃঢ় করবার জন্যেই নিবেদিত হয় তখনই হিউম্যানিজমের আভাস পাওয়া যায় বলে বোধহয়।অর্থাৎ এই সিদ্ধান্তে আসতে চাইছি, বিনয় মজুমদার অনেকটাই মানুষের সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন। মানুষের বিকার ও প্রবণতাকে সমর্থন করেছিলেন অথবা তাকে চিহ্নিত করে সমালোচনা করতে চেয়েছেন।এই চাওয়ার উদ্দেশ্য যদি প্রশ্ন করি!এই উত্তর হয়তো দিতে পারব -একান্ত ভাবেই প্রচলিত সমাজ প্রতিবেশকে আরও কাঙ্খিত,সভ্যতার কাঙ্খিত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া।অর্থাৎ মানুষের সমাজকেই আরও নিবিড়ভাবে মানুষেরই সমাজ গড়ে তোলার বাসনা।‘সমাজ’শব্দটিকে সরিয়ে নিয়ে কেবল ‘মানুষ’ শব্দটিকে রাখলেও কী ব্যাখ্যা জটিল হচ্ছে?যদি না হয়, তবে বলাও যেতে পারে,এক একমাত্র ত্রি -স্তরীয় মানুষই ছিল বিনয় মজুমদারের অন্বিষ্ট । এবং সেই মানুষের আঙ্কিক গঠনের মনস্তাত্ত্বিক বিন্যাস। এক্ষেত্রে যদি অতিখ্যাত একটি পংক্তি ব্যবহার করি,
“মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়…”
না,পাল্টা প্রশ্নটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।মানে,যে সারস বা সারসেরা ধরা দেয় এবং ধরা দিয়েই নিজেকে ‘প্রকৃত’ মনে করে বা করতে পারে,তাদের চিন্তাটাও তো বাস্তব!সেটাও ও জায়মান ও একই সঙ্গে প্রবহমান! তাকে কী স্বীকৃতি দিচ্ছেন না বিনয় মজুমদার? মানুষকে নিয়ে যেতে চাইছেন এমন একটা অভিষ্টে;যেখানে হয়তো,’মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস কাছে আসে ‘!

প্রাসঙ্গিক হতে পারে এই প্রশ্নটি, তাহলে কী সারসকে,তাৎপর্যে ‘প্রকৃত সারস’কে ধ্রুব ধরে নিয়ে মানুষকে সেই ধরে নেওয়া বিশুদ্ধতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা তৈরি করছেন না? অর্থাৎ এই কথা কী বলতে পারি, বোধহয় না, তবুও বলে রাখি,বিনয় মজুমদার ছোটগল্পের মতোই কবিতাতেও নিজের প্রস্থেসিস প্রবণতাকেই প্রধান করে জীবনানন্দ দাশের সম্ভাবনার মধ্যে অনিশ্চিত হয়ে থাকার বিস্তার থেকে নিজের যৌক্তিকতায় আলাদা হয়ে গিয়েছেন।অথচ অদ্ভুত ভাবে,ধারণ করেছেন জীবনানন্দ ঘরানার চলন।একেও কিছুটা বিনির্মাণ বলা যেতে পারে।ঘরানার একটি অংশে আরও কিছু উপাদানের সংযোগ করলেন।না, জীবনানন্দের সামগ্রিক বিনির্মাণ করেছেন বিনয় এমন দাবি করতে পারি না।চিত্ররূপকে একটা যুক্তির পরম্পরা দিয়ে টপোগ্রাফি করেছেন বিনয় মজুমদার,

“অনেক কিছুই তবু বিশুদ্ধ গণিত শাস্ত্র নয়
লিখিত বিশ্লিষ্ট রূপ গণিতের অআকখময়
হয় না, সে সব ক্ষেত্রে উপযুক্ত গণিতসূত্রের
নির্যাস দর্শনটুকু প্রয়োগ ক’রেই বিশ্লেষণ
করা একমাত্র পথ, গণিতশাস্ত্রীয় দর্শনের
বহির্ভূত অতিরিক্ত দর্শন সম্ভবপর নয়।
সেহেতু ঈশ্বরী, দ্যাখো গণিতের ইউনিট
পাউন্ড সেকেন্ড ফুট থেমে থাকে চুপে,”

মানুষের স্থিরীকৃত সংখ্যাকে আরেকটি বিন্যাসে দেখাতে চেয়েছিলেন বিনয় মজুমদার।তার সঙ্গে সংযুক্ত হয় বিশ্ববীক্ষা আর তীব্র এন্ড্রোজেনিক পৌরুষ। স্পৃহাকে করে তুলেছেন উপমাময় এবং লিরিক্যাল।বিনয় মজুমদার সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করেছেন এবং সেই সিদ্ধান্তগুলিকে জায়মান
প্রত্যেকটি অস্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে,সাযুজ্যমানতায় পেতে পছন্দ করতেন।যেমন দেখা যাক না ‘মশা’ শব্দটির একটি তুলনামূলক আলোচনা করে। জীবনানন্দ দাশ লিখছেন,
“চারিদিকে মশারীর ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা
মশা তার অন্ধকার সঙ্ঘারামে জেগে থেকে জীবনের স্রোত ভালোবাসে…”

আর একই মশার ব্যবহার যখন বিনয় রাখছেন,

“স্বপ্নে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে যেখানে
একদিন জল জমে, আকাশ বিম্বিত হয়ে আসে
সেখানে সত্বর দেখি ,মশা জন্মে; অমল প্রত্যূষে”।

এখানে লক্ষ করলেই সহজেই বুঝতে পারছি,দু’টি প্রয়োগের বিপ্রতীপতা।মশাকে বিস্তৃত প্রাণসত্তা বলা ভালো গতিপ্রবণতার সঙ্গে মিলিয়ে প্রাণবস্তটিকে মিলিয়ে দিচ্ছেন। এই গ্রহ ও গ্রহ অতিক্রমী সমস্ত স্রোতের সঙ্গে,প্রাণের উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে ‘অসীমকালের যে হিল্লোলে’র ব্যাপ্তীতে মানুষ নয় মানব বোধ অতিক্রম করে মনুষ্যেতর বোধকেই গৌরবময় করে তুলছেন জীবনানন্দ। মশা আর কেবল চেনা পতঙ্গটি রইল না,হয়ে উঠল মহাবিশ্বের একটি মহার্ঘ্য বস্তু।অন্যদিকে বিনয় জন্মের ব্যাপকতাকে চিহ্নিত করে দিচ্ছেন একটি মশার ফর্মে। বিমূর্তকে ফর্ম দিচ্ছেন।পাঠক হিসেবে কী তথ্য পাচ্ছি না?আমরা কী ‘অমল’ হয়ে থাকা ভোরবেলায় চেনা মশাজন্মের অনভিপ্রেতকেই কাব্যের ব্যঞ্জনা ব্যতিরেকে পাচ্ছি না!’অমল প্রত্যূষ ‘আর ‘মশা জন্মে ‘ দুটি তথ্য হিসেবে থাকলে তবেই তুলনাত্মক বোধ তৈরি করছে। তাদের ব্যঞ্জনায় ধরতে গেলে কাব্যের রসপ্রস্থানে কিঞ্চিৎ সংকটে পড়ছি যে! বিভ্রান্ত হতে হচ্ছে।কবিতাকে তাঁর অভিপ্রেত অনুসারে পড়িয়ে নিতে চাইছেন যেন বিনয় মজুমদার।শব্দ সংস্থাপনের দুর্লভ শক্তি আর বোধের অতলস্পর্শী গভীরতাই পারে কবিকে এ হেন জোর দিতে।এটা পেরেছেন বিনয়। সাধারণতঃ কবিতায় ব্যবহৃত শব্দকূলের ব্যঞ্জনাময় অর্থেই রসপ্রস্থান ঘটে। অন্ততঃ কবিতায় তথ্য রাখতে গেলে হয় সেটি শ্লোগান হয়ে যায় কিংবা দুরূহ জটিলতার মধ্যে বিভ্রান্ত করে দেয়। বাংলা কবিতার লিরিক্যাল প্রবণতার ভেতর এই তথ্যকে কবিতার অংশ ক’রে তাকে মোক্ষণ ও পরিশুদ্ধি দান আক্ষরিক অর্থেই দুরূহ। বিশেষ করে জীবনানন্দ পরবর্তী প্রহরে বারবার এই স্খলন বাংলা কবিতায় দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে দুই একটি বিরল উদাহরণের মধ্যে অবশ্যই বিনয় মজুমদার একজন, জীবনানন্দের কূহক আত্মস্থ করে নিজের ফ্রেমে তথ্যকেই সাজিয়ে সাজিয়ে তাদের দৃশ্যগত তুলনাত্মকতায় গড়ে তুলেছেন কবিতা,

“হে আলেখ্য,অপচয় চিরকাল পৃথিবীতে আছে;
এই যে অমেয় জল—মেঘে মেঘে তনুভূত জল
এর কতটুকু আর ফসলের দেহে আসে বলো?
ফসলের ঋতুতেও অধিকাংশ শুষে নেয় মাটি।
তবু কি আশ্চর্য দেখো,উপবিষ্ট মশা উড়ে গেলে
তার এই উড়ে যাওয়া ঈষৎ সঙ্গীতময় হয়।”

এই প্রস্তাবের সূচনায় একটি ধারণার কথা বলেছিলাম।বলতে চেয়েছিলাম,বিনয় মজুমদার জীবনানন্দ পাঠের একটা তুলনাত্মক উপস্থিতি। অন্ততঃ জীবনানন্দের অনিশ্চিত শ্রোডিংগারের পাশে যেন দাঁড়িয়ে আছে গাণিতিক সমাধান।একটা ফর্ম আরেকটি ফর্মলেস পরিস্থিতিকে বোঝাতে।একটি কবিতা বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত অথচ বিপ্রতীপ কবিতার ধারা।এ ক্ষেত্রে কী এই নমুনা পেশ করা যায় না –

“তুমি যেন চলে যাও অতি দূর, অমলিন নক্ষত্রের নীলে ;
আমি যেন ধীর,হিম,বিশাল প্রান্তরে বসে বসে
সমুদ্রের কথা ভাবি,অনুভব করি তুমি কত কাছে ছিলে। “(চিরদিন একা একা)
কিংবা,
“বিপন্ন মরাল ওড়ে,অবিরাম পলায়ন করে,
যেহেতু সকলে জানে তার শাদা পালকের নিচে
রয়েছে উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ;
স্বল্পায়ু বিশ্রাম নেয় পরিশ্রান্ত পাহাড়ে-পাহাড়ে।“

প্রথম উদাহরণটিতে তুমি নয় ‘আমি’ কিন্তু ধ্রুবক।এই মূর্ত আমার সাপেক্ষেই সব ঘটছে। আবার দ্বিতীয় উদাহরণটি সেই পাখির আগমন। এবং সেও একটি তথ্যকে পরিবেশন করতে করতে সে উড়ে যাচ্ছে।সে যাচ্ছে নিজের আত্মরক্ষার জন্য।আর তার বনামে গতি পাচ্ছে মানুষের মাংস লোলুপতা। দুটো ক্ষেত্রেই কবি রূপ আর যৌক্তিক সমাধানের দিকে।কাছে আসা ও চলে যাওয়ার মধ্যে যে করুণ রসের মোক্ষণ ঘটছে,তাও কিন্তু পাঠক যদি ‘আমি’-র সঙ্গে সাযুজ্যে নিজেকে মেলাতে পারেন,তবেই।বলা যায়,ফর্মকেই প্রাধান্য দিয়ে তার বিকিরণ হিসেবে রসকে উপস্থাপন করলেন।যে প্রচেষ্টায় , কিন্তু, জীবনানন্দ ব্যবহার করছেন,এমন একটি ভাষা,যা, জীবনানন্দ পূর্বে অপিরিচিত ছিল পাঠকের কাছে।যে কাব্যিক চলনের প্রবাহ আমরা হয়তো জীবনানন্দ থেকেই চিনতে পেরেছি ‌‌।বিশেষণ প্রয়োগের প্রবণতা,উপমার স্ফূরণ আর অক্ষরবৃত্তের আচ্ছন্নে অতিপূর্বজ জীবনানন্দের সঙ্গে সাযুজ্য পেয়েছিলেন বিনয় অথচ অন্তর্বর্তী অন্তর্ঘাতে রেখে দিয়ে গেলেন, চেনাশোনা জীবনের কায়মনোভার। এবং হয়তো বিনয় মজুমদারের সঙ্গেই ফুরিয়ে গেল জীবনের বিন্দুগুলির চরম এককে পৌঁছে যাওয়ার প্রবণতা।রূপ এবং ভরের সাযুজ্যের শেষ চিহ্ন ধরার গাণিতিক প্রয়াস বিনয়কে জীবনানন্দ থেকে পৃথক করেছে,এ কথা,বলাই বাহুল্য, কিন্তু,এককও করে তুলেছে -এ কথা বলা অসঙ্গতি পাবে কি?

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes