
অমিত সরকারের কবিতা
অন্তরে বৈরাগীর লাউ বাজে
১
গভীর উটের চোখে আবছায়া বিষাদক্যাম্পাস
বালতি করে তুলে আনি স্মৃতিকাতরতা
এখানেরই কৃষিক্ষেত্রে একদিন ফলিয়েছিলাম বাঁজা শস্যজল
এখানেই ওষুধপ্রয়াস, প্রবাসী যন্ত্রণাদের দৈব মেনোপজ
বসন্তের চুল উড়েছিল বালিয়াড়ির হাওয়ায়
একদিন এখানেই ফেলে রেখে চলে গেছি
যাপনচিহ্নের পোড়া হাঁড়িপাতিল
এখনো ক্যকটাসের কাঁটায় আটকে আছে
ছেঁড়া কাফনের নিশান
আর ভ্রমণবৈরীতা ভুলে
তুমি হেঁটে যাচ্ছ পরবর্তী এপিসোডে…
২
শোয়ের শেষে পর্দা নেমে এলে বৃষ্টির শুরুয়াৎ
সেইসব অন্ধজল ছুঁয়ে ছুঁয়ে বুঝতে পারি
সমস্ত শরীর জুড়ে ফুটে উঠছে কবেকার ধানকুমারীরা
পোড়ামাটির জাহাজ নিয়ে বাণিজ্যে চলেছে ধনপতি
লালপাড় শাড়ি জড়িয়ে দূরে শুয়ে বর্ণমালা
ঘিরে ঘিরে ঢেউ, নুন, সমুদ্রবাতাসের আস্ফালন
তার ছেঁড়া ম্যান্ডোলিন বেজে উঠছে
ফুটে উঠছে আমাদের হারানো ক্যারাভান
উটের কঙ্কাল পড়ে অল্প দূরে ক্যাকটাসের নীচে
আমি এখন হাওয়াবাতাসের
আমি এখন বালিয়াড়িদের
আমি এখন…
৩
নীল তাঁবু বেজে ওঠে প্রতি রাতে
জোৎস্নার ভারী বুকে মুখ রেখে টেনে নিই অক্সিজেন
সিসমিক ওয়েভ ভাসে মাঠাপাহাড়ের রাত জুড়ে
পাখি হতে ইচ্ছে করে খুব
ইচ্ছে করে পালকের সংসার ঝুলিতে ঢুকিয়ে
হাত ধরাধরি করে গান গাইতে উঠি বোলপুরের বাসে
জিলিপি ও ভাঁড়ের চায়ে ভঙ্গ করি অধিবাস
কাগজকুচির রঙ ঢেকে দেয় দোতারার যুগল
এ কোন মারিয়ানা ট্রেঞ্চে ডুবিয়েছ সাঁই
কেন বৈরাগীর লাউ আজ বেজে ওঠে একান্নপীঠের অন্তরে…