রিনি গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প

রিনি গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প


লঙ্কাকাণ্ড

এ ঘরে বিয়ে হয়ে এসে ইস্তক পূর্ণিমার এই এক জ্বালা হয়েছে! প্রায় দিনই রাতে পেচ্ছাপ করে বিছানা ভিজিয়ে ফেলবে মিনি! এতো বড়ো মেয়ে! আসছে অঘ্রাণে না কি পাঁচে পরবে! দেখে তো মনে হয় আট/ নয় হতে চলল। গায়ে গতরে বেশ ভালোই হয়েছে! বুদ্ধিসুদ্ধিও মন্দ নয়। পূর্ণিমা যেদিন নতুন বিয়ে হয়ে এলো সেদিন সকলের আড়ালে পূর্ণিমাকে মিনি বলেছিল, তুমি আমার নতুন মা! দিদা বলেছে নতুন মা আমাকে আদর করবে না। তুমি আমাকে আদর করবে না?
মেয়ে মরা লক্ষ্মীর মা যে পূর্ণিমা সম্পর্কে ভালো কথা বলবে না সে পূর্ণিমা ভালোই জানে! তাও আবার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কেস! অবশ্য সুখেনরা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। জেল থেকে ছাড়াও পেয়ে গেছে। তবু লক্ষ্মীর মা-বুড়ির শাপ শাপান্ত আর শেষ হয় না। ওই শকুনে বুড়ির চোখদুটো একদিন গেলে দেবে পূর্ণিমা! ওর নজর ভালো নয়। অন্তত পূর্ণিমার নতুন সংসারের জন্য একেবারেই ভালো নয়। পূর্ণিমা মিনিকে আরো কাছে ডেকে গোপন কথা বলার মতো জিজ্ঞেস করেছিল, আর কি বলেছে দিদা?
মিনি তার ছোট্ট দু ঠোঁট নেড়ে তড়বড়িয়ে বলে ফেলেছিল, দিদা বলেছে নতুন মা বাবাকে আদর করবে!
কথাটা শুনে পূর্ণিমার মুখে একটু লাল আভা খেলে গেছিল। যদিও সুখেনের সঙ্গে তার গত চার পাঁচ বছরের সম্পর্ক! মিনি যে বছর জন্মালো তারপর থেকেই পূর্ণিমার সঙ্গে একটা মাখো মাখো সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সুখেনের। পূর্ণিমা ডবকা মেয়েমানুষ! সামনে পেছন তার বেশ মাপমতো! যদিও সে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল এই বস্তির চাঁদুকে। কিছুদিন ঘরও করেছিল। তারপর না পোষাতে ছেড়ে চলে এসেছে। ম্যাদামারা পুরুষ মানুষ পূর্ণিমার পোষায় না। পুরুষ মানুষ হবে সিংহের মতো। দুনিয়া উথাল পাতাল করে দেবে তোমার। এই জোর করে চুমু খাবে! এই আবার চুলের মুঠি ধরে নেড়ে দেবে! অবশ্য পূর্ণিমাও কম যায় না। ঝগড়া না করে কাউকে এক ইঞ্চি জমি সে ছাড়ে না! বস্তিতে ঝগড়ুটে বলে তার বেশ খ্যাতি আছে। সকালের জলের লাইন থেকে বিকেলে কেরোসিনের লাইন যে কোনো জায়গাতেই ঝগড়া করে নিজের সুবিধেটা ঠিক আদায় করে নিতে জানে পূর্ণিমা। তা সেই সুখেনের সঙ্গে সন্ধের অন্ধকারে গলির কোণে, বড়ো ডাস্টবিনটার আড়ালে, ঘরে বাবা না থাকলেই কতবার যে পূর্ণিমা… তবু আজ একটা বিশেষ দিন। আজকে একটু লজ্জা-টজ্জা পেতে হয়!
শুরুটা ভালোই করেছিল পূর্ণিমা। সুখেনকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মিনির ঘুমনোর ব্যবস্থা করেছিল সুখেনের বাপ-মার ঘরে। তাদের এখন নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে! মেয়ে কোলে করে ঘুমোতে গেলে তো আর সুখেনের মা’র ইচ্ছেপূরণ হবে না! ওই ইচ্ছের দোহাই দিয়েই তো পুড়ে মরতে হলো লক্ষ্মীকে। মাগী পত্থমবার মেয়ে বিয়োলো। দু চারটে চড় থাপ্পর ছাড়া কিছু বলেনি সুখেন। কিন্তু পরেরবার ও তাই। ডাক্তারকে এতোগুলো পয়সা খাইয়ে জানা গেল এ বারেও মেয়ে! কার মাথার ঠিক থাকে। প্রথমে সুখেন ভেবেছিল পেট খসিয়ে নেবে। কিন্তু তখন পূর্ণিমা হাতছানি দিচ্ছে। ফলে একেবারে গোটাগুটি সাবড়ে দেওয়ার কথাই ভেবেছিল সুখেন। পূর্ণিমাই বুদ্ধি দিয়েছিল বাঁচতে যদি চাস, মারধর করিস না একদম। শুধু ভোরবেলা উঠে গ্যাসের পাইপটা খুলে রেখে দিবি! ব্যস্ দেখবি লঙ্কাকাণ্ড। সুখেন তাই করেছিল। লক্ষ্মীর দেহ নব্বই শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই মরে গেছিল লক্ষ্মী। সেই থেকে মিনি কিছুদিন ছিল দিদার কাছে। সুখেন ভেবেছিল যাক আপদ গেছে। সে ঝাড়া হাত-পা হয়ে গেল। কিন্তু কোথায় কি! একমাস যেতে না যেতেই লক্ষ্মীর মা নাতনিকে দিয়ে গেল এ বাড়িতে। বলল, আমার কি করে চলে তার নেই ঠিক! আমি আবার ওর দায়িত্ব নেব কি করে! তোমাদের ঘরের মেয়ে! তোমরা সামলাও! তবে এটুকুতেই ব্যাপারটা মিটে গেল না। গালিগালাজ, কান্নাকাটি, লোকজন জুটিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি, ‘খুনিদের কখনো ভালো হবে না’ ইত্যাদি শাপ শাপান্ত করে তবে ফিরে গেছিল। বস্তির লোকেরা সেদিন কাজ ফেলে ঝগড়া শুনেছিল। সুখেনের মাও পাল্লা দিয়ে বরপণের টাকার কথাটা বলে লক্ষ্মীর মাকে ঠগবাজ বলে ছেড়েছিল। মনে মনে ভেবেছিল, একে পণ নেই, তারওপর দু দুটো মেয়ে… মারব না তো কি করব! মিনিকে কেউ ঘরে আসতে বলেনি। মিনি খানিকক্ষণ ঝগড়াঝাটি শুনে ঘরে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। তারপর থেকে ঠাকুমার কাছেই শোয়। বিছানা ভিজিয়ে ফেললে ঠাকুমা ঘুম চোখেই ঘা কতক দেয়। মিনি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমোয়। মা বলে তার একজন ছিল! বিছানায় পেচ্ছাপ করে ফেললেও সে মারত না। তারপর একদিন সকালবেলা উঠে থেকে তাকে আর দেখতে পায়নি মিনি। মার জন্য কান্নাকাটি করলে পাশের বাড়ির ঠাকুমা বলেছে, তোর মা তো মরে গেছে! মরে যাওয়া মানেটা মিনি ঠিক বোঝেনি। কিন্তু এটুকু যেন সে কেমন করে বুঝতে পেরেছে মা আর আসবেনা। কেনোদিন আসবেনা। কোনোদিন আসবেনা!
সেদিন রাতে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। মিনির শীত শীত করছিল। তার খুব ইচ্ছে করছিল মা যেভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমতো তেমন করে আবার জড়িয়ে নিক। ঘুমের মধ্যেই মিনি স্বপ্ন দেখছিল, মা তার কাছে এসেছে। মাকে জড়িয়ে মিনি ঘুমোতে যাবে এমন সময় মা বলল, চল, একবার হিসি করে আসবি। মিনি মার কোলে করে বাথরুমে গেল। মেঝেতে উবু হয়ে বসে মিনি হিসি করছে। গরম তরল তার পায়ের গোছে, পায়ের পাতায় ছিটকোচ্ছে। তারপর পুরো পাটাই ভিজে গেল। আস্তে আস্তে জামাটাও ভিজে যাচ্ছে। মিনির আরো শীত করছে। হঠাৎই জোরে জোরে ধাক্কা খেয়ে মিনির ঘুম ভেঙে গেল।
মিনি দেখল ঠাকুমা তাকে মারছে। সে আজ আবার বিছানা ভিজিয়ে ফেলেছে! ঠাকুমা চুলের মুঠি ধরে নেড়ে দিল। মিনির খুব লেগেছে। মিনি জোরে কেঁদে উঠেছে। ঠাকুমা তখন পিঠে এমন জোরে কিল মেরেছে যে মিনির দমবন্ধ হয়ে যায় আর কি! মিনি জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছে। পারছে না। চোখগুলো তার ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে। দাদু তাড়াতাড়ি উঠে পিঠটা, বুকটা মালিশ করে দিতে মিনি স্বাভাবিক হলো। দাদু বলল, কি মেরে ফেলতে চাইছ না কি!
মরলে তো বাঁচি! মা মাগী মরে বাঁচল! এই ঝামেলা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে গেল!
তা বলে এভাবে মারবে! মরে গেলে এবার আর সুইসাইড বলে চালানো যাবে না। জেলে পচে মরতে হবে।
তা কি করব! রোজ রোজ পেচ্ছাপ করবে আর ওকে পুজো করব! যত্তসব!
পরদিনই সুখেনের মা ঘোষণা করে দিল, মিনিকে নিয়ে ঘুমনো তার পক্ষে সম্ভব নয়। মিনির নতুন মা বুঝে নিক। সুখেন তবু এটা ওটা বোঝাতে চেষ্টা করল। কোনো লাভ হলো না। মিনির বালিশ এ ঘরে পাঠিয়ে দিল সুখেনের মা।
পূর্ণিমা রাতে শোবার আগে চোখ বড়ো বড়ো করে আঙুল উঁচিয়ে মিনিকে বারবার বলল, দ্যাখ, হিসি পেলে বলবি। বিছানায় করবি না। বিছানায় করলে কিন্তু তোকে মাঝরাতে বাইরে বের করে দেব। রাতে বাইরে অন্ধকারে ভয় পেলেও তোকে ঘরে ঢুকতে দেব না! বুঝলি!
মিনির মুখটা ভয়ে শুকিয়ে গেছে। জুলজুল করে মিনি তাকিয়ে আছে পূর্ণিমার দিকে। সুখেন একগলা মদ খেয়ে পাশে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে। পূর্ণিমাও দু এক পাত্তর ঢেলেছে। শুয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে পূর্ণিমা। মিনি একধারে নতুন মার পাশে শুয়ে ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে আছে। তার ভয় করছে ঘুমোতে। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সে রোজ বাথরুমে হিসি করার স্বপ্ন দেখে। আর তারপর কিভাবে যেন বিছানাতেই হিসি হয়ে যায়! তারপর তাকে সবাই মারে। দিদা মেরেছে, ঠাকুমা মেরেছে। নতুন মা তো… ভয়ে কথাটা মনেই আনতে চাইল না মিনি! কেবল মা-ই তাকে আদর করত। কোনোদিন মারত না। মিনি এইসব ভাবছে আর তাকিয়ে আছে অ্যাসবেসটসের ছাদের দিকে। অন্ধকারে একা একা তার ভয় লাগছে! ঘরের মধ্যে কারা যেন দাঁড়িয়ে আছে। ওই আলনার কাছটায় মাথায় কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা কে! এদিকে আলমারির কোণায় কে যেন উঁকি দিচ্ছে। এইসব হতে হতে মিনির গলা শুকিয়ে উঠেছে। মিনির জোরে হিসি পেয়ে গেছে। মিনি পূর্ণিমাকে বারদুয়েক ডাকল ফিসফিস করে, নতুন মা! নতুন মা! পূর্ণিমার সাড়া নেই। মিনি চুপ করে গেছে। একদৃষ্টে আলনার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মনে হচ্ছে কালো কাপড় পরে যে দাঁড়িয়ে আছে সে বুঝি ক্রমশ এগিয়ে আসছে। এই বুঝি কাছে চলে এলো! মিনি কিছুতেই ওদিক থেকে চোখ সরাতে পারছে না। তাকিয়ে থাকতে থাকতেই কখন যে তার চোখে ঘুম এসে গেছে সে বুঝতে পারেনি। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মিনি দেখছে পূর্ণিমা তাকে নিয়ে বাথরুমে যাচ্ছে। এই সে উবু হয়ে বসল। এই সে হিসি করছে…. কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই পূর্ণিমা মিনিকে হাত ধরে টেনে তুলে একটা চড় মেরে দিল। মিনি ঘুমের ঘোরে চড় খেয়ে ভেবলে গেছে। পূর্ণিমা তার ওপরই আরো দুচারটে থাপ্পড় মারল, দ্যাখ, দ্যাখ কি করেছিস! আমার বাপের দেওয়া তোষক ভিজিয়ে দিয়েছিস! উহু সোহাগী মেয়ে আমার। বলে পূর্ণিমা মিনির ছোট্ট পিঠটায় কিলোতে থাকে। মিনি ভয়ে কাঁদতেও পারছে না।
পরদিন সুখেন পূর্ণিমাকে বলে তাদের একচিলতে বারান্দায় একটা চাদর পেতে দিতে। ওখানেই মিনি ঘুমোবে।
পারবে না কি তোমার মা সোহাগী মেয়ে! উহু মায়ের জন্য কেঁদে কেঁদে হেদিয়ে যাচ্ছে। আর বিছানা ভাসাচ্ছে!
পারবে কি পারবে না তো দেখার দরকার নেই! এখানে বারান্দায় শোবে ব্যস্।
না না, তা হয় না। বস্তির লোক তো তোমায় কিছু বলবে না! বলবে আমাকে! বলবে, সৎ মা এসে মেয়েকে ঘরের বাইরে করে দিয়েছে! দরদ দেখানোর লোকের তো অভাব নেই! এই তো সেদিন বিষ্টুর মা বলছিল, কি কপাল করেই যে মেয়েটা এসেছিল। না দিদা, না দাদু, ঠাকুমা কারো ভালোবাসা পেল না!
তাহলে! উপায়!
চমকাতে হবে বুঝেছ তো! এমন চমকাবো না যে পেচ্ছাপ মাথায় উঠবে! আর যদি তাতেও না হয়, তাহলে অন্য ব্যবস্থা আছে আমার!
সেদিন রাতে বিস্তর চমকে ধমকে পূর্ণিমা ঘুমোলো। মিনি জেগেছিল। অন্ধকার হতেই তার ভয় লাগছিল। কিন্তু আজ সে কিছুতেই ঘুমোবে না। নিজের আঙুল দিয়ে নিজের চোখের পাতা আটকে রাখছিল সে। তবু কিছুক্ষণ পর থেকে তার হাত টনটন করছে! চোখের পাতাদুটো নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে প্রাণপণ চোখ রগরাচ্ছে। তাও চোখ বুজে যাচ্ছে। সে উঠে বসে আছে। তাও টলে পড়ে যাচ্ছে! এই করতে করতে কখন যে তার চোখে ঘুম নেমে এসেছে মিমি জানে না। ঘুম ভাঙলো তার প্রচণ্ড জ্বালায়… জ্বলে যাচ্ছে তার হিসির জায়গা। তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে সে দেখল নতুন মা একখাবলা লঙ্কার গুঁড়ো তার হিসির জায়গায় ঘষে দিচ্ছে…

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes