গুচ্ছকবিতা
সেলিম মণ্ডল
ঘৃ ণা
*
হাঁটতে হাঁটতে যতদূর যাই—
পায়ে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে
কালো, চ্যাটচ্যাটে ঘৃণা
সারা বাংলাজুড়ে ছোপ, ছোপ দাগ
যেন ডোরাকাটা কোনো বাঘ ঘৃণার প্রতীকী হয়ে
ফুটে উঠছে
স্ম র ণ
*
বর্ষাকালে হওয়াই চটি পরে বেশি দূর যাওয়া যায় না
মেঘ দেখে যারা আতঙ্কিত তারা জুতোর দোকানে জমিয়েছে ভিড়
এখন কোনটা পায়ের মাপের আর কোনটা টেকসই সেটা চিনতে হবে
দোকানদারের কথা বিশ্বাস করবেন না
দরকারে খালি পায়ে হাঁটুন শুধু একটা ছাতা রাখুন
লাল ছাতা
যা আপনার বিগতদিনের রক্তপাতকে স্মরণে রাখবে
স ঙ্গ
*
এতবার ছিঁড়ে যাই
রক্ত পড়ে না
অথচ, রক্তপাত সম্পর্কিত কোনো সমস্যা নেই
শেষবার ছিঁড়ে যাওয়ার পর দেখেছিলাম—
ঝরে পড়া হলুদ লসিকার ওপর ভনভন করছে মাছি
কেউ আমায় সঙ্গ দিচ্ছে ভেবে, ওদের আমি তাড়াইনি
বি প্ল ব
*
বিপ্লব আসে জুতো পরে
ফিরে যায় খালি পায়ে
এতটা পথ অতিক্রম করার পর কাটা হাত, ভাঙা পা, থ্যাঁতলানো চোখ
স্বাধীন, স্বাধীন বলে চিৎকার করে
কতদূর তা পৌঁছায় বিপ্লব জানে না
বিপ্লব, মায়ের বাড়া-ভাতে মিশিয়ে নেয় কান্না
কান্নার রং লাল
কান্না একটা পাড়ভাঙা নদী
যেখানে সরকারি অনুদানপৌঁছাতে পারে না
দে ও য়া ল
*
দেওয়াল যত উঁচু হচ্ছে ফুরিয়ে যাচ্ছে ইঁট
চিমনির ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে কাদা মাখা কালো কুচকুচে মানুষগুলো জানে না— কোথায় যাচ্ছে এত ইঁট!
তাল তাল করে কাদা চটকিয়ে মুখে তারা তুলছে ভাত
তাদের ভাঙা বাড়িতে পাঁচিল নেই, ঘর আছে ইঁটছাড়া
তবুও তাঁরা লড়ে যাচ্ছে অন্য কারো উঁচু উঁচু দেওয়ালের জন্য!
ভ দ্দ র লো ক
*
লাশগুলোকে কেউ চিনতে পারছেন না…
নেতা, মন্ত্রী, আমলা… সবাই লাশগুলো সরে ফেলতে চাইছেন
বেশিক্ষণ পড়ে থাকলে পচে, গলে যাবে, দুর্গন্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে
ওরা ভদ্দরলোক; গন্ধ সহ্য হবে না