
সোম রায়চৌধুরীর কবিতা
সুখ
সুখে থাকার জিয়নকাঠি তোমার নয়
রুপকথাটি অলীক কিন্তু তোমার নয়
সন্ধ্যে নামার একটু আগে
মিলিয়ে যাওয়া অস্তরাগে
আবছা জাগা শুকতারাটি তোমার নয়
মন খুঁজেছে কোন সুদূরে
তেপান্তরে অচিনপুরে
যে পথ খুব চেনা
ফেরার সময় ঠিক ততটা তোমার নয়
সুখে থাকার জিয়নকাঠি তোমার নয়
রুপকথাটি অলীক কিন্তু তোমার নয়
এসব সময় দুপুর ভিজে
বোঝাপড়া যখন নিজের
সঙ্গে হাজার উলটো সিধের
দুঃখগুলো বটেই
সুখও নিছক ঠিক ততটা তোমার নয়
সম্বল
কিছুতেই কিছু নয় ।
শুধু সরে গেছে প্রচ্ছদের থেকে
যেটুকু প্রস্তাব ছিল অভিমানে ।
যেটুকু ছুঁয়ে থাকা , থেকেও না থাকা যতটুকু
শরীর থেকে দীর্ঘতর ছায়া
তার থেকে গড়িয়ে পড়া জল
এই যে অকারণ গান ,হেসে ওঠা ,চড়ুইভাতি,
আর কিছু নয়
ভিড়ের মাঝে যে অপূর্ব একা
তার সামান্য সম্বল
শোক
১
বৃষ্টির বড়ো বড়ো ফোঁটার মত
পড়েই লাফিয়ে উঠছে অবিরাম ।
বাসের চাকার হাওয়ায় উড়ে
ছড়িয়ে পড়ছে কালভার্ট ,কেঠো পোল
মজা পুকুর ,শরৎপল্লী,বাঁধানো দোলমঞ্চ
এত সাদা জুঁই কখনো এ তল্লাটে ফোটেনি
এত অবাস্তব বিকেল সাইকেল বালক
দেখেনি কখনো ঘোর লাগা চোখে..
এত অলৌকিক তোমাকে পেরিয়ে আজ
অনন্ত সাদা খই দেখি ,লেগে আছে শোকে…
২
কোনো মানে নেই এভাবে শুয়ে থাকার
এখুনি গোল হয়ে ঘিরে বসবো সবাই
খাটে জায়গা কম পড়বে
চৌকাঠে লোক ভিড় করে উদগ্রীব
হেসে গড়িয়ে পড়বে সবাই এ ওর কোলে
বিরাশি বছরের মা মুখ টিপে হেসে
কোলে নিয়ে বসবে আবারও
দাহকাজ শেষ হলে …..
৩
এই দিনে ওর বিবাহ লেখা ছিল,এখানেই ।
কুড়কুড়ে বাজনা চলেছে সার দিয়ে
ছেলেরা কাঁধে হ্যাজাক নিয়ে চটুল বলিউড
গঙ্গার অপার অন্ধকারে জোনাকির মত
ঘুরে ঘুরে ছায়া ফেলছে জোয়ারের জলে
জিলা মুজাফফরপুর কি দ্বারভাঙা
মেটে সিঁদুর জ্বলজ্বল করছে অন্ধকারে….
অন্যায় কারুর নয়
এত অপ্রস্তুত জ্যোৎস্না তুমি ছাড়া কে পারে !

