
দেবার্ঘ্য সাহা-র কবিতা
দুটি কবিতা
স্মৃতিচিহ্ন
কালের জরায়ুতে অনন্ত ভ্রমণ শেষে
হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে পাওয়া গেছে
কিছু ধূলিমলিন স্মৃতিচিহ্ন
পুরনো গানের খাতা
বাবার হাত ধরে হালখাতা করতে যাওয়া
দীঘির মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট
মফস্সলের স্কুল পালানো বিকেল
রবীন্দ্র জয়ন্তী
প্রথম প্রেম ভাঙার যন্ত্রণা
ফুলদি’র সুইসাইড নোট
বিসর্জনের বাদ্যি
কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে মায়ের পাঁচালী পড়ার অস্পষ্ট অবয়ব
আর
সাধু স্তেফান গির্জার বড়দিনের কেক
সুখ-দুঃখের বয়ামে জমতে থাকা বিচ্ছিন্ন খসড়া,
যা হয়তো পাথরকুচির মতো
অনাদরে বেড়ে ওঠে প্রতিটা মধ্যবিত্ত প্রজন্মের গায়ে
বয়সের ভারে, সময়ের লতাপাতায় মুড়ে রাখা অতীতচারী মন
কবিতার আবহে কখন তাকে কাছে টেনে নেবে, সেই আশায়
নোনাজল
আকাশকুসুম ভাবতে ভাবতেই ঘুম নামে
প্যাঁচার মতো চেয়ে থাকে হলুদ আলো
ফুটপাথে চোখে পড়ে অর্ধনগ্ন সভ্যতা
চোখে পড়ে বেদনার নীলাভ দ্যুতি
ছায়াশরীর নিয়ে টলমল পায়ে ভেসে যেতে যেতে
দেখা হয় পথভ্রষ্ট আধপাগল দালালের সঙ্গে
আমাকে দেখেই জড়ানো গলায় দর হাঁকে
অন্ধ গলির দিকে আঙুল দ্যাখায়
বিশ্রী হাসির ফাঁকে
বন্য রাত্রির আঠালো অন্ধকারে রাস্তা হারিয়ে
কামনার হলাহলে ডুবতে থাকা রুগ্ন বস্তির
জনপ্রতিনিধিকে কাছে ডেকে স্বপ্ন দ্যাখাই
নিরুপদ্রব শান্ত জীবনের
ভাঙাচোরা পথের জান্তব শয্যায়
তার ঝাপসা দু’চোখে দেখি,
অতৃপ্তির মরুবালু
অপূর্ণতার নোনাজল