
অনিন্দ্য সরকার-এর কবিতা
বুদ্ধজন্মের প্রতি মোহ
–
(১)
তোমাকে খুঁজে চলেছি আমি সারাদিন
বৃথা এই সময় অপচয়।
আমাকে পিছু ডাকে সংসার, বন্ধুঋণ
দুহাতে সরিয়ে দিই মোহের কুয়াশা
ঘিরে থাকা দুঃখবলয়।
আলগা হয়ে আসে জন্মলতার বাঁধন
নেই পিতা-মাতা, প্রেম, স্নেহজল
শুকিয়ে যায় গর্ভমাটির ঢিপি
অপত্য এ শরীরে শুধু ক্ষয়।
তবুও সেদিকে তো আমার নেই মন
তোমার মতোই ছেড়ে আসি ঘর
ধুলোচাপা পড়ে গতজন্ম
এভাবেই বুঝি বন্ধন ছিন্ন হয়!
যেন নিজেকেই খুঁজে চলেছি গৌতম,
একই তো সেই দুজনের
ছেড়ে আসা দুঃখ দেওয়া হৃদয়।
(২)
ভোগ করি
দু’চোখ দিয়ে ভোগ করি দৃষ্টি
এ শরীর জুড়ে কামিনী কাঞ্চন
মনে মনে ভাবি
তুমিও তো ছাড়তে পারো নি পরমান্ন লোভ,
মধ্যপন্থাই নাকি সঠিক পন্থা, হাসি পায়।
অথচ আমি ভুলে যাই
পিছনে ফেলে এসেছো প্রাসাদ প্রমোদ
ছেড়েছো সংসার..
আর সামান্য ঘর আমার
কণামাত্র যদি হারাই, দুচোখে অন্ধ দেখবো।
(৩)
আনন্দ, আমার যাওয়ার সময় হয়েছে। এসো তোমাকে
বলে যাই জন্ম, মৃত্যু, জীবনের তামাম রহস্য।
যা কিছু কঠিন, গূঢ় তত্ত্বে তা সবাই বুঝে নেয়
যা তুচ্ছ, অনায়াসে মাড়িয়ে যায় পায়ে
অথচ সহজ সাধারণ। সবাই ভয় পায়। কেউ বুঝতে চায় না।
জন্ম এসেছে, মৃত্যু আসবেই। মেনে নাও এ সত্য। যতটুকু
প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই নাও। লোভ করবে না। করবে
না ঘৃণা, হিংসা, দ্বেষ। তোমার যাবতীয় তথ্য লিখিত
হচ্ছে মহাকালের খাতায়। পরজন্মে তোমার
সেটুকুই সম্বল। দৃষ্টি শুদ্ধ, সংকল্প শুদ্ধ
শুদ্ধ বাক, শুদ্ধ কর্ম, শুদ্ধ চিত্ত।
আমার ওপর নির্ভর করো না। ধর্মের শরনার্থী হও।
কথা ফুরিয়ে এলো। নমো তসস্ ভগবতো অরহতো সম্মাসম্বুদ্ধসস্।