
কোহিনূর মিত্র-র কবিতা
বাড়ি
বাড়ির পিছনে বাড়ি
জানলা খুললেই দেখা যায়
ব্যথারঙের দেওয়াল
শানবাঁধানো কুয়োতলায়
বকুলফুলের মেলা
কতদিন ডেকেছি ওকে
ঘাসে ঘাসে এসে দাঁড়িয়েছে জানলায়
কাছে গিয়ে দেখেছি
ভেতরে নোনা জলের স্রোত
নিটোল ঢেউ ভাঙছে অনবরত
বাড়ির পিছনে বাড়ি না
একটা মনখারাপের সমুদ্র আছে
আমি ঠিক জানি
পতিতা
মাঝে মাঝে সন্ধান থামে
মনে হয় ওই তো সে প্রিয়রূপ
জন্মান্তরের নিশ্চিত আলোর রেখা
তারপর আলোয় আলোয় ভেসে
স্তম্ভ থেকে সমূহ পতন
সে তেমন নয়
শূন্য মুঠো অনুভব ছাড়া
তারপর আরো একবার
কিছুতেই জীবন জুড়ে
বজ্রপাত জ্বলে উঠে না
মন শুধু কলস হয়ে বসে
প্রিযরূপের নামে
ঘটে ঘাটে শূন্যময়
ছন্নছাড়া পতিতা কলস
পুরুষ দেবতা
নীরবে কেটেছ শিব সতী
একে একে অধিষ্ঠান দিয়েছ
সংসার পীঠে নিত্যদাসী
তবু মহতি আচ্ছাদনে
মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়
প্রতিদিন নেমে আসে
সহস্র ঘণ্টাধ্বনি শাঁখ
সিঁদুর সেবার মার্জনা
লুঠ হয়ে যায় শক্তি দ্যুতি মূর্ছনা
পুরুষ দেবতা তুমি
তোমার অমৃত নাম
লেখা হোক প্রতিপক্ষ পাতায়
তাজমহল
আমি শুয়ে আছি
তুমি পাশে শোও
শোনো গভীর বেদনায়
বাতাস ধ্বনিত হয়
অন্ধকার ঘন হলে
নদীর মতো করে চাও
ঝড় আসুক এ যুগল শবাসনে
স্থির হও
বুকে হাত রাখো
এ মৃত্যু নয়
যুগা ন্ত পারে এর নাম হবে তাজমহল
কবিবুক
কোহিনূর মিত্র
মসৃণ সুগন্ধে ভরা
কাতর হয়ে নিয়ে থাকে
শরীরের ডৌলটি দ্যাখো
আমি এর দিকে চেয়ে চেয়ে
পবিত্র হয়ে যাই
আগুন
আগুন সে তো সাতদিন
হল আছে এ বাড়িতে
স্কুল যায় বাড়ি আসে
বই পড়ে রাতে আলো জ্বলে
কোলে মাথা রাখে
আমি ওর গোলাপি
পুরুষ শরীরে মাসিমণি ঢালি
ও যেন কেমন হয়ে ওঠে
বহুদিন পর
বহুদিন পর
জানলায় এগিয়ে এলো
বোগেন ভিলিয়ার পাতা
নিশ্চুপ তাকিয়ে থেকে
জানতে চাইলো
আর কী দিগন্তে তাকাই
বালিতে পা ডুবিয়ে
নোনাজলের খোঁজ করি
আঠালো গরমের দুপুরের
সেই অন্তরঙ্গ
এখনো চিঠি লেখে
কী জানি
উত্তর যেন গোপন অমৃত
পা দিয়ে পায়ের পাতা ঘষি
ভর সন্ধ্যেবেলা
বাহ বেশ ভালো লেখা