
সব্যসাচী মজুমদার -এর কবিতা
তারপর একটা মৃতদেহের সঙ্গে
তারপর একটা মৃতদেহের সঙ্গে আমরা অনেক দূর চলে গেলাম
যতদূর যাওয়া উচিত ছিল না।
আমরা মৃতের সঙ্গে কথোপকথন চালালাম,
বেলুন ফুলে উঠল,
বাজি ফাটল…
গগনভেদী স্বরে আমরা ফাটিয়ে নিচ্ছিলাম দিঙ্মণ্ডল
যেখানে উড়ছিল পাখি আর তাদের শাবক
আকাশে প্রদীপ উড়িয়ে উড়িয়ে
আমরা একটা মৃতদেহের সঙ্গে এতদূর চলে গেছিলাম,
যতটা দূরে ভাম খাচ্ছিল দাঁড়কাক।
আর মৃতের হাড় ভেঙে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছিল আবার শরীরে …
আমরা আমাদের শব সামলে নিয়ে হাঁটছিলাম
সরীসৃপেরা মেপে নিচ্ছিল তাদের চোখে
যেভাবে কার্নিভাল ও শোকে
মানুষ মেপে নেয় অন্যকে
সেভাবে দেখছিল তারা মাটির সমান্তরাল থেকে
এই যাত্রাকে…
করতালি দিয়ে আমাদের অভিনন্দন জানানর পর
আমরা ভেবেছিলাম পায়রা দিয়ে খাওয়াব এই মাংস
এই অনিত্য স্তূপাকার…
অথচ এমন একটা দূরে আমরা ছিলাম
যেখানে শব দেহের অর্থ এক একটি মহাগ্রন্থ,
এক একটি নথি ও দলিল
যা থেকে আগুন ছড়ায়…
ড্রাগনের মতো আগুন ছড়ান মহাগ্রন্থগুলিকে এবার
আমাদের ওপরেই চাপিয়ে দেওয়া হতে লাগল
আমরা বুঝতে পারলাম একটা দেহের উত্তাপ কতটা নিষ্করুণ
ক্রমশ দমবন্ধ হয়ে আসছে আমাদের
চোখ ফেটে রক্ত পড়ছে …
আমরা একটা মৃতদেহ নিয়ে অনেকটা দূরেই গিয়েছিলাম…