
বেবী সাউ-এর কবিতা
এই বৃষ্টি, এই জন্ম
কতদিন পরে শহরে নেমেছে জল
কতদিন পর অঝোর বৃষ্টি ধারা
কতদিন পরে নেমেছেন তথাগত
পায়েসের বাটি হাতে নিয়ে সুজাতারা
এমন জলেতে নৌকো ভাসাও মেয়ে
খুলে ফেলো জমা সহজিয়া গিঁট সুতো
সময় আসলে পাল্টায় না তো, দিন
সময় আসলে মায়াটুকু দিতে জানে
চিতার আগুনে জমে ওঠে স্বরলিপি
মেয়ে তুই রোজ একলা চোখের জলও
কতদিন যেন তোর নূপুরের টানে
কবি লেখেননি গীতগোবিন্দ কোনো
খেলার ছলেতে মেঘমল্লার ভাসে
খাতা খুলে একা বসেছেন যে কানাই
অল্প বয়েসে বিরহ বিধুর খেলা
আজ বেওয়ারিশ হেরে যাওয়া ততখানি
ভিজে ওঠা ওই কলেজের ক্যান্টিন
বিএ ক্যাম্পাসে ভেজা ভেজা ক্লাস আর
বেচারা রোমিও একা ফুটপাতে হাঁটে
সামলে তুলছে নেভানো চারমিনার
আজও ভেজা সেই একা ব্যালকনি, একা
হাওয়ায় উড়ছে নিমগাছে ফোটা ফুল
অজান্তে আজও ভাস্কর খুলে বসো!
আজও রাতে সেই হিসির গন্ধ পাও!
ধোঁয়া ধোঁয়া আজ কুয়াশার মেঘধ্বনি
মন চেয়ে বসে ময়ূরের দুটি ডানা
আমি অজান্তে চেয়েছি অমন দিনে
কখনও যে আর সেভাবে ভেজাল তো না
মেঘদূত খুলে একা বুড়ো কালিদাস
যক্ষকে আজ লেখেন জলের চিঠি
পেনের রিফিলে ভরে গেছে আঁখিজল
মাও-জেদং -এর ভিজছে যক্ষপুরী
আলপথে বসে সবুজ ধানের শীষ
বাবার জামাতে লেগে থাকা থোকা কাদা
যে পথিক ছিল বিদেশের এতদিন
মন জুড়ে ভাসে কদমফুলের কথা
তারপর আসে শহরের ইতিকথা
তারপর আসে শান্ত রাস্তাঘাট
জলের জন্য চুপ করে আছে সেও
বৃষ্টি আসে না ভেবে ছিল বিন্দাস
মেঘের ঘরেতে কবিতার খাতা খুলে
চোখে ভরে আছে গাঢ় আই মাসকারা
বাঁশি ভেজা সেই বৃন্দাবনের কুঞ্জ
রান্না করছে একালের রাধিকারা
একটি মেয়ে তো ভিজছে বারান্দায়
নিয়ন আলোয় ঝাপসা স্কুটির কাঁচ
একটি ছেলেও পড়ছে শঙ্খ ঘোষ
একদিন তাকে ডাকনামে চিনতাম
এমন ভাবেই জলের ভেতর রোজ
মুছে গেছে সেই পুরনো রাস্তা সাঁকো
তুমিও কি আজও নামতা পড়ার ছলে
নৌকো ভাসাও বৃষ্টিতে নিয়মিত!