
অনির্বাণ চৌধুরীর দীর্ঘ কবিতা
জেনারেশন জেড
না! তোমাদের স্বপ্ন বলে আদতে কিসসু নেই!
অবচেতন অন্ধকারে যেন ওসব একেকটা পদাঘাত
বুকের ভিতর দীর্ঘদিনের গেঁথে থাকা একেকটা মাইলস্টোন
ওদের তাই
খুব বেশি আমল দিতে নেই!
ভিখিরির পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়াই
বরং এখন বুদ্ধিমানের কাজ;
চুরি করে যদি না পড়ো ধরা
ধরো মাছ, না ছোঁও পানি
এক দলা পাপ মাড়িয়ে, বাড়ির চৌকাঠে জুতো খুলে রেখে
ঘরে ঢোকার আগেই
যে ভাবে সটান বাথরুমে গিয়ে পায়ে জল ঢেলে
পা পরিষ্কার করো …
সেরকম ভণ্ডামিই ভালো অনেক
চরিত্রের অপরাধে ধরা পড়লেও কেউ তোমাকে তাই বলবে না –
মুখোশধারী!
খিস্তি দেবে না বড় বড় গালভারী
প্রেমিকা এসে কিছুতেই তবু বলবে না তোমাকে – “তুমি-ই হচ্ছো সেই আসল কাপুরুষ!”
বরং
বেশি আদর্শ চরিত্রবান সাজলে
তোমার প্রিয় রবিবাসরীয় বিকেলের ওই সচ্চরিত্র অজেয় পৌরুষে
সে বা তারা
আঘাত দিয়ে বারবার মনে করাবে তোমাকে-
“এসব নাটক তবে বন্ধ করো
কাজের কথা বলো!
কবে নিয়ে যাচ্ছ ডিনার ডেটে?”
স্বপ্ন দেখা তাই তোমাদের জন্য ভালো নয়
ভালোবাসা ঘোরতর অপরাধ
স্বাস্থ্যের পক্ষে তীব্র ক্ষতিকর!
বরং
পারলে ঘুরে এসো তোমরা সস্তার ওয়ো-রুমে,
ওসব কিছু মিটে যাবার পরেও যদি –
দু-একটা স্বপ্ন ফস্কে ফাস্কে ভুল করে আধো-ঘুমে দেখেও ফ্যালো,
তবে বাইরে এসে বিল মেটানোর সঙ্গে সঙ্গেই ভুলে যেও সেসব …
ছিপে সুতো পড়ালেও, পৌরুষ ঢেকে রাখো তাই টাইট জিন্সে
চাইনিজ কলারের ‘আশিক’ সেজে
ভিখিরির পাশ দিয়ে চুপ করে চলে যাওয়াটাই
এখন বরং বুদ্ধিমানের কাজ!
পকেটে খুচরো নেই, তাই স্বপ্ন-ও তোমাদের দেখতে নেই,
আদর্শ জলে যাক!
পারলে –
কালি ঠাকুরকে জবা ফুলের মালা দিয়ে পুজো আর প্রণামী দেবার পর
মন্দিরের বাইরে এসে
জিভ কেটে
কাউকে না পেলে
একান্ত ফুটপাথকেই সাক্ষী রেখে
স্বীকার করে নিও মনে মনে –
“ ভালোবাসা অপরাধ, যদি না সয় পেটে!,
স্বপ্ন দেখা পাপ, যদি না একসাথে জাগো রাত”
অ-প্রেম, বলো কবে নিয়ে যাবে তবে ডিনার ডেটে?
স্বপ্ন দেখো না আমাদের নিয়ে, ভালোবেসো না আমাদের ভুল করেও
ওসব অলীক, মনের ভুল
মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে
বরং এবার
ঘরের ছেলে ঘরেই
ফিরে এসো …
সব ওয়ো-রুম বুকড্ আছে!
ভালো লেখা,ভালো লাগলো। আরো পড়তে ইচ্ছুক।