
‘শ্রীমদ্ভাগবত-মহাপুরাণ’ দশম স্কন্ধ চতুর্দশ অধ্যায় শ্রীশুক উবাচ(৪১-৪৮) অনুসৃজনপ্রয়াস
শুভম চক্রবর্তী
‘শ্রীমদ্ভাগবত-মহাপুরাণ’ দশম স্কন্ধ চতুর্দশ অধ্যায় শ্রীশুক উবাচ(৪১-৪৮) অনুসৃজনপ্রয়াস
জগতের-স্রষ্টা ব্রহ্মা শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি গেয়ে শেষে
তিনবার প্রদক্ষিণ সমাপন করে যান ভেসে
আপনার ধামে ফিরে তার আগে রাতুল চরণে
প্রণিপাত ঝরে পড়ে নিরন্তর ব্রহ্মার মননে
অবশ্য যাবার আগে অপহৃত গোরুদের রেখে
গোপবালকের দলও সসম্মানে ফিরেছে প্রত্যেকে
ব্রহ্মাকে বিদায় দিয়ে কৃষ্ণ যান যমুনাপুলিনে
সেখানে আগের মতো সব কিছু আছে রীতি মেনে
গোপবালকেরা কিন্তু শ্রীকৃষ্ণকে প্রাণাধিক জেনে
ভালোবেসেছিল বলে শ্রীকৃষ্ণের অপার মায়ায়
একবছরের এই দীর্ঘ বিযুক্তির রসায়ন
ক্ষণার্ধ বলেই মনে করেছিল গোপশিশুগণ
শ্রীকৃষ্ণের মায়াশক্তি জগতে বিস্তারিত তাই
মায়ার আবেশে দ্যাখো আত্মাকেও ভুলেছে সবাই
কত শাস্ত্র, মুনিঋষি নিরন্তর করেন প্রয়াস
নিজেকে হারিয়ে খোঁজা ফের হারানোর অবকাশ
কৃষ্ণকে আসতে দেখে উচ্ছ্বসিত বালকের দল
‘এসো’ ‘এসো’ সমস্বরে ডাকাডাকি করেছে কেবল
‘তোমার জন্যই দ্যাখো মুখে তুলে গ্রাস-আস্বাদন
করিনি আমরা কেউ এসো করো এবার গ্রহণ’
তখন শ্রীভগবান বালকের দলে গিয়ে মিশে
আহার সমাপ্ত করে পথমধ্যে হেলেদুলে এসে
মৃত অজগর সাপ যা ছিল অঘাসুরের দেহ
দেখাতে দেখাতে ব্রজে ফিরে যান জগতের-দেহ
কৃষ্ণের চূড়ায় ছিল মনোহর ময়ূর-পালক
কেশদামে গাঁথা থাকা ফুলগুলি বাড়ায় ঝলক
দেহ যেন উপবন ফুল্ল তার রঙের কলাপ
কখনো বাঁশের বাঁশি, কখনো পাতার কথালাপ
কখনো শিঙার ধ্বনি, উচ্চতর, পরবের রোল
ব্রজবালকের দল অনুক্ষণ কৃষ্ণের কল্লোল
ছাড়া কিছু মুখে আনে হেন কারো অভিপ্রায় নয়
শ্রীকৃষ্ণের ঘরে ফেরা দেখে যেন গোপীজনময়
আনন্দের বান ডেকে ইতস্তত ভাসালো চৌদিক
প্রিয় গোরুদের নাম ধরে ডেকে শ্রীকৃষ্ণ-মাণিক
গোকূলে প্রবেশ করে মুখরিত হয় দশদিক
ব্রজে ফিরে বালকেরা সেই দিন করলো প্রকাশ
শ্রীকৃষ্ণের মহিমায় বিভীষণ-অজগর-গ্রাস
মুক্ত হয়ে ফেরে তারা ব্রজভূমি, আপন আলয়ে
শ্রীকৃষ্ণ সবার সঙ্গী সৃষ্টি আর স্থিতি ও প্রলয়ে