
অন্ধকার মিথের কবিতাগুচ্ছ
শীর্ষা
১
আমাদের জেগে থাকা আছে, আছে
জেগে থাকার সাদা রঙ – বিনিদ্র চাঁদও তো
বিধবার থানের মতোই একা, নয় কি?
মেঘের পাহারার বিনিময়েও তন্দ্রা
কিনতে পারেনি যে আহাম্মক,
তাকে নিয়ে এত আহামরি
কবিতা লেখো কেন?
২
জল বয়ে যায় – আমাদের জেগে
থাকাটুকু নিয়ে, কিংবা ঘুম নিয়েও।
ঘুমের ফোকর গলে দালালি করা
মরে যাওয়াটুকু নিয়েও। অথবা
শিকারের শেষে শিকারীর যে বিজয়োল্লাস –
তার মধ্যেও তো জল বয়ে যায়
জীবনের মিথ নিয়ে। কান্নার আদিম প্রবৃত্তি
আমাদের পিছু ছাড়তে শিখেছে কি এখনও?
৩
চাঁদের সঙ্গে বচসা করতে গিয়ে
আমারই মতো
নিজেকে ভুলে গেল যে মেয়েটি,
তাঁর নাম পৃথিবী ছিল হয়তো।
আবাল্য নিমকাঠের সুস্থ দাঁতন
তাঁকে নিরাময় দিতে পারেনি।
যেভাবে ফল পেকে গেলে ছড়িয়ে
যায়, হারিয়ে যায় গাছের ভবিষ্যৎ –
চাঁদের সঙ্গে বচসা করা মেয়েটির স্তন
ঠিক সেরকম ফল – পাখি সেজে খুঁটে খাচ্ছে
ইহজন্মে-পরজন্মের ভূত। আর
দূষণে ভরে উঠছে মা-বাবার
অবিন্যস্ত ঠিকানা
৪
একটা সমগ্র দিন বেচে কিনেছি পৃথিবীর
আত্মা – কিনেছি নিরাময়ের দোকান।
মৃত্যু-পরবর্তী অনস্তিত্ব খোলসের মধ্যে
ঢুকে দেখেছি – মৃত্যুর মূল্য কতখানি
ব্যবসায়ী রেশমের মিথ্যাচার হয়ে ওঠে;
দেখেছি নৌকার পাটাতনে সিঁধ, যেন
সাত রাজার ধন ফোঁটা ফোঁটা চুরি হয়ে
যাচ্ছে অপলক – শুশ্রূষার মুমূর্ষু স্তন
কাঁদছে বালিকার মতো পা ছড়িয়ে বসে।
একটা সমগ্র দিনের অভাবে কালো বেড়ালের রঙ
আচমকা জাপটে ধরছে দোকানের ঝাঁপ
৫
যদিও সকল সহ্যশক্তির দোকানের নাম
জননী হয়ে উঠেছে, তবু বলি – এ পৃথিবী
ক্ষমাশীল নয় মোটেই: চারিদিকে শুধু সর্ষের ক্ষেত।
বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের চারাগাছে
জল দিতে আসা মালী ভুলিয়ে
নিয়ে যায় জননীর আঁচল,
আঁচলের ঘুম।
আর বেচে দেয় মনখারাপের
ব্যাপারীর কাছে, অকারণ মূল্যহীনতায়।
সকল সহ্যশক্তির দোকানদার
সন্তানকে ছায়া দিয়ে যায়,
নিজেকে ছায়া দিতে অপারগ – পৃথিবীর
সমস্ত মহীরুহ।
ভালো লাগল শীর্ষার কবিতা। কোনও কোনও কবিতায় রয়েছে সূক্ষ্ম আয়রনি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো থাকবেন
অত্যন্ত ভালো লেগেছে শীর্ষাদি! চমৎকার!
ভালোবাসা নিও অনেক
খুব ভালো লাগলো